প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ব্লু ইকোনমি’কে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মাছের রপ্তানি বাড়াতে মাছের সংগ্রহ, বিতরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে যথাযথ মান বজায় রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হবে মাছ।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সিফুড শো-২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সমুদ্রসম্পদকে ব্যবহার করে ব্লু ইকোনমিকে আরো সমৃদ্ধশালী করতে পারব। সিউইড, শামুক, ঝিনুক, মুক্তা প্রভৃতি আহরণ এবং সমুদ্রের পানি থেকে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। সমুদ্রের পানি থেকে বিদ্যুৎ, হাইড্রো ইলেকট্রিসিটি উৎপাদনেও গবেষণা চলছে।’
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিডা বিরাট ভূমিকা রাখে।
আপনারা তাঁদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেতে পারেন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি সুবিধা দিয়ে থাকি। সেখানে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। তাঁর লভ্যাংশটা খুব সহজেই নিয়ে যেতে পারেন। ব্যাংকে অর্থ জমা করে প্রয়োজনে সেটাও নিয়ে যেতে পারেন। অফশোর অ্যাকাউন্ট খোলারও সুযোগ আছে। উচ্চহারে সুদও পেতে পারেন। আবার এখানে বিনিয়োগও করতে পারেন।’
সরকারপ্রধান বলেন, “আজকের এই ‘অ্যাকুয়াকালচার ও সিফুড শো’ নীতিনির্ধারক, রপ্তানিকারক, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়ী সংলাপ এবং নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার একটি প্রাণবন্ত প্ল্যাটফরম হিসেবে কাজ করবে, যা পারস্পরিক বোঝাপড়া, অংশীদারি, জ্ঞান প্রভৃতি আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে আমাদের যুবসমাজ যত বেশী যুক্ত হবে, ততই এই খাতটি আরো এগিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানেরও উল্লেখ করেন তিনি।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শ ম রেজাউল করিম ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার স্বাগত বক্তব্য দেন। জার্মানভিত্তিক প্ল্যানকোয়াডর্যাট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্টিন গেসকেস এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। আলোচনা পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
১৭ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে অ্যাকুয়াকালচার ও সিফুড সম্পর্কিত সেশন হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশের মৎস্য খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।