<p>বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত ভুল আছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় যে কয়টি ব্যাংক দেওয়া হয়েছে সবকটি ব্যাংকই দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। এসব ব্যাংকের মালিকদের উদ্দেশ্যই ছিল অর্থ আত্মসাৎ করা। দেশের আর্থিক খাতের বিদ্যমান অস্থিরতার দায় বাংলাদেশ ব্যাংক এড়াতে পারে না। ব্যাংক এখন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতিই ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসনের পথে বড় বাধা। রাজনীতিবিদই ব্যবসায়ী, মিডিয়া হাউসের মালিক, ব্যাংকেরও মালিক। ফলে দুর্নীতি বেড়ে সুশাসনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।</p> <p>গতকাল শনিবার ঢাকার এফডিসিতে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংক একীভূতকরণের মাধ্যমে সংকট নিরসনের যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তা ইতিবাচক হলেও প্রক্রিয়াটি জটিল। ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আর্থিক তছরুপকারী দুর্বল ব্যাংকের মালিকরা যাতে পার না পেয়ে যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে। ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে। দুর্বল ব্যাংকের সংকট কাটাতে গিয়ে সবল ব্যাংক যেন দুর্বল ব্যাংকে পরিণত না হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশে ঋণখেলাপিদের সামাজিকভাবে বর্জন করা হয়। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িভাড়া এমনকি পেট্রোল পাম্পে তেলও নিতে পারে না। অথচ আমাদের দেশে ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীরা এয়ারপোর্টে ভিআইপি হিসেবে যাতায়াত করে।’</p> <p>সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন নিয়ে আমরা গর্ব করলেও আর্থিক খাতের অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ হয়, মাথা হেঁট হয়ে আসে। ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের সংস্কৃতি আমাদের জন্য একটা বড় কালো দাগ। ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম ভয়াবহ ক্যান্সারের রূপ নিচ্ছে। একের পর এক ঋণ কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাৎ, রিজার্ভ চুরি, বেসিক ব্যাংকের জালিয়াতি, ফারমার্স ব্যাংকের পতন, পিপলস লিজিংয়ের অবসায়ন, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ডেসটিনির জালিয়াতি, পুঁজি বাজারের কারসাজি, শেয়ার মার্কেট লুট ইত্যাদি কলঙ্কিত ঘটনা আর্থিক খাতকে ব্যাপক দুর্বল করে ফেলেছে। ব্যাংক খাত আজ তছনছ হয়ে যাচ্ছে।’</p>