সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ফুলজোড় নদীতে সরকারি বালুমহাল না থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ নদীর তিনটি স্থান থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় নদীতীরের আবাদি জমিগুলো ভাঙনের কবলে পড়ছে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, অভিযানে গেলে জড়িতরা পালিয়ে যায়, চলে আসার পর আবার বালু উত্তোলন শুরু করে।
সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, রায়গঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাজারের উত্তর পাশে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় হাটিকুমরুল ইউপির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হেদায়েতুল আলমের নেতৃত্বে উত্তোলিত এ বালু দিয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে নির্মাণাধীন ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পে নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলনকারী ব্যক্তি ও ড্রেজার মালিকদের কাউকে পাওয়া যায়নি। বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও এদের বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, বৈধ-অবৈধ কিছু জানেন না তাঁরা।
ড্রেজার মালিকরা এখানে এনেছেন বলেই তাঁরা কাজ করছেন।
সাহেবগঞ্জ এলাকার কৃষক নবিদুল ইসলাম, করম আলী ও আব্দুস সোবহান অভিযোগ করেন, ছয়-সাত মাস ধরে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে রাতে ও দিনে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রভাবশালীরা এই বালু বিক্রি করে প্রচুর টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। এতে তাঁদের নদীতীরের জমিগুলো ভেঙে নদীতে ধসে যাচ্ছে।
এভাবে চলতে থাকলে নদীতীরের সব জমি ভেঙে নদীতে চলে যাবে।
এই কাজে জড়িত বলে অভিযুক্তদের মোবাইল ফেনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রায়গঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিল পারভেজ জানান, ফুলজোড় নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় সম্প্রতি ইউএনও ও এসি ল্যান্ড অফিসের পক্ষ থেকে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাস তিনেক আগে জড়িতদের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় নিয়মিত মামলাও করা হয়েছে।
তবু অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অভিযানে গেলে জড়িতরা পালিয়ে যায়, চলে আসার পর আবার বালু উত্তোলন শুরু করে। জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা করছে না।’ রায়গঞ্জ ইউএনও তৃপ্তি কণা মণ্ডল জানান, বালু উত্তোলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারও অভিযান চালানো হবে।