পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। গত সাড়ে তিন বছরে দেশে তিন হাজার ৮০৫ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে, যাদের মধ্যে ৮৮.৫১ শতাংশ বা তিন হাজার ৩৬৮ জনই শিশু। গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’র তথ্য মতে, ২০২০ সালে পানিতে ডুবে মারা গেছে ৮০৭ জন, ২০২১ সালে এক হাজার ৩৪৮ জন, ২০২২ সালে এক হাজার ১৩০ জন এবং ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই পর্যন্ত ৫১৬ জন। প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে।
সাড়ে তিন বছরে পানিতে ডুবে ৩৮০৫ মৃত্যু
সজীব আহমেদ

এ অবস্থায় সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘কমিউনিটি বেইজড ইন্টিগ্রেটেড সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার, প্রটেকশন অ্যান্ড সুইম-সেইফ ফ্যাসিলিটিজ’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদিত হয়।
সম্প্রতি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বাদুরতলী গ্রামের জিয়া কলোনিতে খেলতে খেলতে ডোবার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় তিন চাচাতো ভাই-বোনের। তারা হলো অটোচালক সোহেল ফকিরের ছেলে আল আমিন (৭) ও মেয়ে শারমিন (৫) এবং সোহেলের ভাই রুবেল ফকিরের মেয়ে মরিয়ম (৮)।
সোহেল ফকির বলেন, ‘আমাদের অবহেলার কারণে আমার দুই সন্তান ও বড় ভাইয়ের এক সন্তানকে হারাতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ মঙ্গলবার তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস।’
২০০৫ সাল থেকে সিআইপিআরবি পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে সিআইপিআরবির এসব উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, শিশু একাডেমির তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি দেশের ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই লাখ শিশুর জন্য প্রকল্প এলাকায় আট হাজার সমাজভিত্তিক শিশু যত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫ জন শিশুকে ভর্তি করা হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিশুরা শিশু যত্ন কেন্দ্রে থাকবে। এক হাজার ৬০০ স্থানে ছয় থেকে ১০ বছর বয়সী তিন লাখ ৬০ হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানো হবে।
প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির শিশুও প্রারম্ভিক বিকাশ (ইসিডি) বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের পরামর্শক মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী গতকাল বলেন, ৩৬০টি এনজিও প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দিয়েছিল, সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে মূল্যায়ন কমিটি। চলতি মাসেই এনজিও সিলেকশন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
সম্পর্কিত খবর

৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা নিয়ে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বিজ্ঞপ্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার)-এর স্বাক্ষরসংবলিত একটি ভিত্তিহীন প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে পিএসসি।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি বলেছে, এ রকম কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন থেকে দেওয়া হয়নি। এ ধরনের তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক তথ্যের জন্য কমিশনের মূল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও নোটিশ অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ভারতের ত্রিপুরা গেল প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

উপহার হিসেবে ভারতের ত্রিপুরায় ৩০০ কেজি আম পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙ্গা আম গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়।
জানা যায়, গতকাল বিকেলে আমভর্তি কাভার্ড ভ্যান স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ৬০টি কার্টনে করে মোট ৩০০ কেজি হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আম পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাষ্ট্রীয় বিবেচনায় সকল প্রকার ফি ও আদায়যোগ্য কর ছাড়াই আমগুলো ছাড়করণ করা হয়। এ সময় দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবছর ত্রিপুরার রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহারসামগ্রী হিসেবে আম পাঠায় বাংলাদেশ।

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচারক বিকাশ কুমার সাহাসহ ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের অবসরে পাঠিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ। জানা গেছে, গত ৩ জুলাই আইন ও বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্টে ওই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট গতকাল তা আইন ও বিচার বিভাগে পাঠিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের ওই ১৮ সদস্যের চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে জনস্বার্থে তাঁদের ২০১৮ সালের চাকরি আইনের ৪৫ ধারার বিধান মতে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো।
অবসরে পাঠানো বিচারকরা হলেন বিকাশ কুমার সাহা, শেখ মফিজুর রহমান, মো. মাহবুবার রহমান সরকার, শেখ গোলাম মাহবুব, মো. মজিবুর রহমান, মো. এহসানুল হক, মো. জুয়েল রানা, মো. মনির কামাল, সহিদুল ইসলাম, আল মাহমুদ ফায়জুল করীম, মো. নাজিমোদ্দৌলা, এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ফজলে এলাহী ভূইয়া, আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান, মো. রুস্তম আলী, মো. নুরুল ইসলাম, এ কে এম এনামুল করিম ও মোহাম্মদ হোসেন।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের ওই সদস্যরা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা পাবেন।

এনবিআরের প্রথম সচিব বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক

অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব তানজিনা রইসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে বলা হয়েছে, তানজিনা রইসের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(খ) এবং ৩(গ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যেহেতু সরকারি কর্মচারী বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন মনে করে, সেহেতু ওই বিধিমালার বিধি ১২(১) অনুযায়ী প্রথম সচিব তানজিনা রইসকে (পরিচিতি নম্বর ৩০০১৫৮) চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিনি ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর আর দেশে ফিরে আসেননি। তাঁকে মেইলে বারবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
তানজিনা রইসের ব্যাচমেট ও ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে একটি চাকরি করছেন। তাঁর আর দেশে ফিরে এসে চাকরিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।