ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

চুরি করলে পেতে হবে কঠিন শাস্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
চুরি করলে পেতে হবে কঠিন শাস্তি

চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধে নীতিমালা চূড়ান্ত করে গতকাল বুধবার থেকে কার্যকর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের সব ধরনের গবেষণাকাজ এই নীতিমালার আওতায় পড়বে। গবেষণাকাজ নিয়ে প্রমাণসহ অভিযোগ করতে পারবে যে কেউ। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পর্যায়ক্রমে গঠন করা হবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি ও তদন্ত কমিটি।

চৌর্যবৃত্তি প্রমাণিত হলে ডিগ্রি স্থগিত, বাতিল, জরিমানাসহ কয়েক ধরনের সাজা হতে পারে এই নীতিমালার আওতায়।

নীতিমালার ২ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট প্রগ্রামে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পূর্ণাঙ্গ গবেষণা ডিগ্রি অর্জনের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, কর্মকর্তাদের করা যেকোনো গবেষণাকাজ ও স্কলারি প্রকাশনা এর আওতায় পড়বে। পাশাপাশি আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হওয়া গবেষণাকাজসহ কাজে যোগদানের জন্য অথবা পদোন্নতির জন্য জমা দেওয়া গবেষণাকাজও এর আওতায় পড়বে। শিক্ষকদের মধ্যে নিয়মিত, খণ্ডকালীন, চুক্তিভিত্তিকসহ পাঠদানে সংশ্লিষ্টরাও নীতিমালার আওতায় পড়বে।

নীতিমালার ৭ নম্বর ধারায় গবেষণাকাজে মিল পাওয়ার মাত্রাকে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো : ধাপ-০ থেকে ধাপ ৩ পর্যন্ত। ধাপ-০-র ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ মিল থাকতে পারে। তবে কোনো সোর্স থেকে ২ শতাংশের বেশি নয়।

১২ নম্বর ধারায় এই মিল পাওয়ার মাত্রার ওপর বিভিন্ন সাজার কথা বলা হয়েছে। ধাপ-০-তে অভিযুক্ত কাউকে কোনো সাজা দেওয়া হবে না। ধাপ-১-এ অভিযুক্তের ডিগ্রি/ক্রেডিট ছয় মাসের জন্য স্থগিত ও ১০ হাজার জরিমানা করে ওই সময়ের মধ্যে পাণ্ডুলিপি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে না পারলে আরো ছয় মাস সময় দিয়ে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এর মধ্যেও পাণ্ডুলিপি সংশোধন করতে না পারলে ডিগ্রি বাতিল করা হবে।

ধাপ-২-এর অভিযুক্তের ক্ষেত্রে প্রথমে ১২ মাসের জন্য ডিগ্রি/ক্রেডিট স্থগিত ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে না হলে আরো ছয় মাস ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা। এতেও না পারলে ডিগ্রি বাতিল করা হবে। আর ধাপ-৩-এর অভিযুক্তের ক্ষেত্রে দুই বছরের জন্য ডিগ্রি/ক্রেডিট স্থগিত ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ওই সময়ের মধ্যে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। সংশোধন করতে না পারলে ডিগ্রি বাতিল করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিলসহ পরবর্তী সময়ে তিনি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন না।

অভিযুক্ত যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা কিংবা গবেষক হন তাহলে ধাপ-১-এর অভিযুক্তের ক্ষেত্রে ওই ডিগ্রি দিয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা যা পেয়েছেন, তা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে। ডিগ্রিটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে ২০ হাজার জরিমানা ও ওই সময়ের মধ্যে পাণ্ডুলিপিকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে না পারলে ডিগ্রি বাতিল করা হবে এবং পূর্ববর্তী ধাপে অবনমন ও দুই বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর ওই ডিগ্রির সুপারভাইজার দুই বছরের জন্য কোনো গবেষণাকাজে সুপারভাইজার হতে পারবেন না। 

ধাপ-২-এর ক্ষেত্রে ওই ডিগ্রি দিয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা যা পেয়েছেন তা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর ডিগ্রি বাতিল ও পূর্ববর্তী ধাপে অবনমন ও চার বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর ওই ডিগ্রির সুপারভাইজার তিন বছরের জন্য কোনো গবেষণাকাজে সুপারভাইজার হতে পারবেন না।

ধাপ-৩-এর ক্ষেত্রে ওই ডিগ্রি দিয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা যা পেয়েছেন তা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর ডিগ্রি বাতিল ও পূর্ববর্তী ধাপে অবনমন ও ছয় বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর ওই ডিগ্রির সুপারভাইজার চার বছরের জন্য কোনো গবেষণাকাজে সুপারভাইজার হতে পারবেন না।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘দ্য রুলস ফর দ্য প্রিভেনশন অব প্লেজারিজম’ শীর্ষক নীতিমালাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সেটি ডিনস কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই নীতিমালা চূড়ান্ত করে অনুমোদন করা হলে গতকাল থেকে এটি কার্যকর হয়।

উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গবেষণা প্রকাশনার স্বচ্ছতা ও নৈতিক মানের উন্নয়ন খুব জরুরি। নীতিমালার ফলে এখন এটি একটি আইনি কাঠামো, নিয়মের মধ্যে হলো। দেশে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে হলো।’

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আইএমওতে পুনর্নির্বাচনে প্রার্থী বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আইএমওতে পুনর্নির্বাচনে প্রার্থী বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থার (আইএমও) ২০২৬-২৭ মেয়াদের কাউন্সিলে পুনর্নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা দাখিল করেছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ, সুরক্ষিত ও টেকসই সামুদ্রিক কার্যক্রমে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হলো। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত সোমবার লন্ডনে আইএমও সদর দপ্তরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বাংলাদেশের পক্ষে প্রার্থিতা উপস্থাপন করেন। আইএমওতে , বিসি এই তিনটি বিভাগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, যেখানে ২০টি আসনের জন্য লড়াইয়ে নামবে ২৭টি দেশ। এই আসনগুলো সামুদ্রিক পরিবহন ও নৌচলাচলে বিশেষভাবে আগ্রহী দেশগুলোর জন্য সংরক্ষিত।

 

মন্তব্য

প্রতিরক্ষাসচিবের পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রতিরক্ষাসচিবের পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিনের ছবি ও দাপ্তরিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। আইএসপিআরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু অসাধু ব্যক্তি মো. আশরাফ উদ্দিনের ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর (যেমন০১৩৩৭-৪০৯৩১৮ ও ০১৩৩৯-০৫৪০০৮) এবং হোয়াটসঅ্যাপ আইডি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে অনৈতিক সুবিধা দাবি করছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কেউ এমন প্রতারণার শিকার হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আইএসপিআর এসব প্রতারকের ব্যাপারে বিভ্রান্ত না হয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছে।

 

মন্তব্য

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার মার্শাল সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার মার্শাল সম্মেলন

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার মার্শাল সম্মেলন গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসের বিমানবাহিনী সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, সম্মেলনে বিমানবাহিনী প্রধান উপস্থিত এয়ার ভাইস মার্শাল পদবির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

তিনি দেশের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি দেশমাতৃকার সেবায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

 

মন্তব্য

কর্মকর্তাদের ক্ষমা করে দিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কর্মকর্তাদের ক্ষমা করে দিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান

আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তবে আন্দোলনের কারণে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হয়েছে সে ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারী অনেক কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। সূত্র বলছে, শতাধিক আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাচভিত্তিক ক্ষমা চেয়েছেন।

এর মধ্যে ৪০, ৩৮, ৩৩, ৩১, ৩০, ২৯, ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি। এর আগে গত সপ্তাহে এনবিআরের দুজন সদস্যসহ সব মিলিয়ে সংস্থাটির ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ