<p>ফারিয়া নামের ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে জ্বর ও খিঁচুনি উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা থেকে গত শনিবার নগরীর চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুকে হাসপাতালের শিশু আইসিইউতে নেওয়া হয়। তিন দিন ধরে শিশুটি সেখানেই চিকিৎসাধীন।</p> <p>নগরীর ডবলমুরিং থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত অরুনিতা বড়ুয়া নামের পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে রবিবার একই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন।</p> <p>রাঙামাটি থেকে লাল বানু (৬০) নামের এক নারী ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে পাঁচ দিন আগে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ১৬ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। একই হাসপাতালে (চমেক) ম্যালেরিয়া আক্রান্ত অবস্থায় ১২ দিন আগে তানজিব ইসলাম নামের ৯ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়।</p> <p>গত জুনে ম্যালেরিয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৮ জনের মধ্যে চমেক হাসপাতালে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।</p> <p>চট্টগ্রামে নারীদের চেয়ে এখন শিশুরা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর খবর পাওয়া না গেলেও ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ জুলাই এক শিশু মারা যায়। গত জুলাইয়ে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল ৪৩ জন। তবে এসব আক্রান্তের মধ্যে কয়জন শিশু ছিল তা জানা যায়নি।</p> <p>চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টাসহ চলতি বছরে মোট ৯০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ, ৩১ শিশু এবং ২৬ জন নারী রয়েছে। ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৩৪.৪৪ শতাংশ শিশু (৩১ জন)। এ ছাড়া পুরুষ ৩৬.৬৭ (৩৩ জন) এবং নারী ২৮.৮৯ শতাংশ (২৬ জন)।</p> <p>জানা যায়, চলতি বছরের গত জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়া পরীক্ষার সংখ্যা আট হাজার ৩১৫টি বেড়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে ৪১ হাজার ২৮৭টি ম্যালেরিয়া পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে শনাক্ত হয় ৩৮ জন। জুলাইয়ে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা হয়েছে ৪৯ হাজার ৬০২টি। এর মধ্যে শনাক্ত ৪৩ জন। শনাক্তদের মধ্যে চমেক হাসপাতালে ২২ জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় এক, চন্দনাইশে ১৩, লোহাগাড়ায় পাঁচ ও বাঁশখালীতে দুজন চিকিৎসাধীন ছিল।</p> <p>চমেকের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ গতকাল সোমবার দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হঠাৎ করে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা বাড়াটা ইতিবাচক। রোগ শনাক্ত হলে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনা যায়। এতে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ আরো প্রায় তিন মাস থাকতে পারে।’</p> <p>চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজা বলেন, হাসপাতালের এনআইসিইউতে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে এক শিশু এবং এইচডিইউতে অন্য এক শিশু চিকিৎসাধীন আছে। তাদের অবস্থা এখন ভালো।</p> <p> </p>