সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দিয়ে দুই বছর আগে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
হাইকোর্টের রায়ে ৪৫ জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীত করতে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল করার আবেদন খারিজ করে রায় দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীর হলেও তাঁদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে এবং অপ্রশিক্ষিতরা ১২তম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির পদে অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন।
ফলে সরকার প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা দিলেও তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় বহাল রাখায় এই ৪৫ প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকছে না।’
২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। ওই দিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতিসহ প্রধান শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন করে আসছিল। পরে ১১তম ও ১২তম গ্রেড নির্ধারণের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ সংক্ষুব্ধ ৪৫ শিক্ষক। পরের দিনই আদালত রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন।
দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) ১১তম ও ১২তম স্কেলে বেতন নির্ধারণ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রুল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।