<p>কুমিল্লা নগরীতে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বুধবার নগরীর নানুয়ার দীঘির পাড়ের একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপ ঘিরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।</p> <p>এ ঘটনায় পুলিশ ও ক্ষুব্ধ লোকজনের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ির ঘটনা ঘটে। লোকজন পুলিশ ও পূজামণ্ডপ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ ছাড়া অন্তত তিনটি পূজামণ্ডপে ভাঙচুর হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহত কয়েকজনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।</p> <p>ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করেছে।</p> <p>কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, বুধবার দুপুরের পর বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিপুলসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কে যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। জানা যায়, বুধবার সকালে নানুয়ার দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার অভিযোগ ওঠার পর স্থানীয় একটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পক্ষটি পূজামণ্ডপ সরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে। কিন্তু সকাল ১১টায় হঠাৎ স্থানীয় কিছু লোক হামলায় জড়িয়ে পড়ে। মণ্ডপে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর কারা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হামলায় জড়িতদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে।</p> <p>খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তাঁরা উভয় পক্ষের লোকজনকে নিয়ে বৈঠক করেন।</p> <p>কুমিল্লা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি মুসলমান ভাইদের অনুরোধ করব—এ বিষয় নিয়ে আর যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। প্রশাসন আমাদের সঙ্গে বসেছে, বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সবাই শান্ত থাকুন।’</p>