রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত মারা গেছে চারজন, যা এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ১৫ জন। এদিকে আতঙ্কে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসক না যাওয়ায় এবং অক্সিজেন সংকটে চিকিৎসাধীন রোগীরা মারাত্মক ভোগান্তিতে রয়েছেন। করোনা আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীরই আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হচ্ছে।
ওয়ার্ডে যাচ্ছেন না চিকিৎসক ভোগান্তিতে রোগী
- রামেকে করোনা আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রামেক হাসপাতাল সূত্র বলছে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত এই হাসপাতালের আইসিইউর ১৮টি শয্যার সবগুলোয় রোগী রয়েছেন। এসব শয্যার জন্য অপেক্ষায় আছেন অন্তত ৭০ জন রোগী। আর করোনা ইউনিটের ২৭১টি শয্যায় গতকাল পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন ২৮৯ জন রোগী।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যাওয়া চারজনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন। অন্য তিনজনের বাড়ি রাজশাহী।
হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন আকবর আলী বলেন, ওয়ার্ডে চিকিৎসকরা প্রায় আসছেনই না।
আরেক রোগীর স্বজন নাজমুল হোসেন বলেন, করোনা রোগীর সঙ্গে থেকে স্বজনরাও মারাত্মক ঝুঁঁকির মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট নিয়ে স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন মাইনুল হাসান বলেন, মেঝেতে চিকিৎসাধীন রোগীকে অক্সিজেন দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। আবার অনেক বেডেও অক্সিজেন নাই। ফলে ইউনিটজুড়েই বিরাজ করছে অক্সিজেন সংকট। কেউ কেউ বাইরে থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে নিয়ে আসছেন। যাঁদের সেই সামর্থ্য নেই তাঁরা মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গতকাল সকালে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৮৯ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ১৮ শয্যায় ছিলেন ১৮ জন। বাকিরা আছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে। হাসপাতালে করোনা ইউনিটে মোট শয্যার সংখ্যা ২৭১। বর্তমানে ২৮৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন। আর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৩ জন। হাসপাতালে বর্তমানে রাজশাহীর ১২২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১২০ জন, নাটোরের ১৪ জন, নওগাঁর ২৪ জন, পাবনার পাঁচজন এবং কুষ্টিয়ার একজন রোগী ভর্তি আছেন। ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর ১৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আটজন, নাটোরের দুজন ও পাবনার একজন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
নাটোর সদর হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী
নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ৩১ শয্যার একটি করোনা ইউনিট চালু করা হলেও গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত রোগী ছিল ৩৮ জন। করোনা ওয়ার্ডে রোগীর ধারণক্ষমতা না থাকায় আউটডোরে রোগী রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে এই হাসপাতালে আইসিইউ না থাকায় জটিল রোগীদের রাজশাহী বা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। ১৫ লিটার অক্সিজেন ধারণক্ষমতার ক্যানুলা অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম চালু করা হলেও অক্সিজেন টারবাইন প্লান্ট স্থাপন করা হয়নি।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মঞ্জুরুর রহমান জানান, নির্মাণাধীন ২৫০ শয্যার একটি ফ্লোরে আরো ২০টি বেড স্থাপনের চেষ্টা চলছে। কোনো করোনা রোগী যেন চিকিৎসাহীন না থাকে, সে জন্য এই ব্যবস্থা। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহ থেকে সেটি চালু করা সম্ভব হবে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে আইসিইউ না থাকায় অনেক করোনা রোগীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।
সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট
- রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।
গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।