নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সেখানে বরাবরই রোকেয়া অবহেলিত বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ১১ বছর পার করলেও তাঁর নামে নির্মিত হয়নি কোনো ম্যুরাল কিংবা স্থায়ী প্রতিকৃতি।
২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে এর নামকরণ করেন ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে। তবে তাঁর নামে কোনো স্মৃতি আজও বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃশ্যমান হয়নি।
গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য নির্মাণ এবং রোকেয়া স্টাডিজ কোর্স চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
শুধু ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সব কার্যক্রম। প্রতিবছর বেগম রোকেয়ার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে দায়সারাভাবে রোকেয়া দিবস (৯ ডিসেম্বর) পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুলতানা বেগম বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়ার নামে কোর্স থাকবে, তাঁর প্রতিকৃতি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও সে উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি, খুব শিগগির যেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়।’
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কখনো তাঁর নামের সামনে বেগম কথাটি ব্যবহার করেননি। তাঁর প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কম মনোযোগ থাকার কারণে রোকেয়া স্টাডিজ নামে একটি কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এত দিনে রোকেয়ার একটি প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্য গড়ে উঠতে পারত।
কিন্তু সে কাজটিও করা হয়নি।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বলেন, রোকেয়ার প্রতিকৃতি অবশ্যই থাকা দরকার এবং এটার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি উপাচার্য স্যারই ভালো বলতে পারবেন। আর রোকেয়া স্টাডিজ কোর্স চালুর বিষয়ে যতটুকু জানি, এটি এখনো ইমপ্লিমেন্ট হয়নি, তবে হওয়ার পথে।’