<p>নারায়ণগঞ্জ শহরের ১ নম্বর বাবুরাইল শেষ মাথায় সরকারি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে আরো তিনটি ভবন। খালটি সাধু নাগ মহাশয়ের বাড়ি থেকে শুরু হয়ে মিশেছে শীতলক্ষ্যা-ধলেশ্বরী সংযোগ খালে। মূলত ধসে পড়া ভবনটির আগে একটি এবং পরে আরো দুটি ভবন একইভাবে খালের একাংশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে। ওই ভবন তিনটিও রয়েছে ঝুঁকিতে। এরই মধ্যে একটি ভবনের পিলারে ফাটল ধরায় সেটি সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন।</p> <p>এদিকে বাবুরাইলে ধসে পড়ার ৪৮ ঘণ্টা পর ভবনের নিচ থেকে শিশু ওয়াজেদের (১২) লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রথমে ওয়াজেদের লাশ ধসে পড়া ভবনের নিচে শনাক্ত করা হয়। পরে এক ঘণ্টার চেষ্টায় লাশটি তুলে আনা হয়। ভবনের নিচে চাপা পড়ে ওয়াজেদের মুখমণ্ডল থেঁতলে যাওয়ার পাশাপাশি শরীরে পচন ধরেছিল। লাশ উদ্ধারের পর তার মা-বাবাসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওয়াজেদ ওই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে।</p> <p>গত রবিবার বিকেলে ভবনটি ধসে পড়লে তাৎক্ষণিক মারা যায় ওয়াজেদের খালাতো ভাই সোয়েব। সোয়েব ও ওয়াজেদ সমবয়সী। তারা স্থানীয় সানরাইজ কিন্ডারগার্টেনের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।</p> <p>এদিকে এ ঘটনায় সোয়েবের মামা মো. রনি বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে ওই বাড়ির মালিক জেবুন্নেচ্ছা, বাবু, শিউলি, আজাহার হোসেন ও সুমনকে।</p> <p>নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ‘নিখোঁজ শিশুটির লাশ উদ্ধার আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। লাশ উদ্ধার করে শিশুটির পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরই উদ্ধার অভিযান শেষ করা হয়।’</p> <p>গত রবিবার বিকেলে হঠাৎ নগরের বাবুরাইল শেষ মাথায় কেউট্টার বাড়ি (বড় বাড়ি) এলাকায় এইচএম ম্যানশন নামের চারতলা ভবনটি ধসে পড়ে। ঘটনার দিন সোয়েব নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় চারজন। নিখোঁজ ছিল অন্য স্কুল শিক্ষার্থী ওয়াজেদ।</p> <p>এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহেনা আক্তারকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী শুক্রবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।</p> <p>সরকারি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে আরো তিনটি ভবন : ধসে পড়া ভবনটির সামনে মনির হোসেন মিলুর খোরশেদ মঞ্জিল, পেছনে আবদুল মতিন এবং তার পেছনে রিয়াজ উদ্দিনের মালিকানাধীন দুটি ভবন রয়েছে। রাজউকের অনুমোদনহীন ভবনগুলোতে নেই গভীর গাঁথুনি। তাই ধসে পড়া ভবনের আশপাশের ভবনগুলোও রয়েছে ঝুঁকিতে। যেকোনো সময় সেগুলোও ধসে যেতে পারে।</p> <p>সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, খালের ওপর পড়ে আছে ধসে যাওয়া ভবনটি। এরই মধ্যে আব্দুল মতিনের মালিকানাধীন ভবনের খালের ওপর ভর করে থাকা একটি পিলারে ফাটল ধরায় সেটিকে জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ দেখিয়ে সিলগালা করে দিয়েছে।</p> <p>নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক বলেন, ভবনটির পেছনের একটি পিলারে ফাটল ধরায় সেটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।</p>