বহুল আলোচিত কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনার দ্রুত সুবিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর উইমেনস ভলান্টারি অ্যাসোসিয়েশন (ডাব্লিউভিএ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তাঁরা অবিলম্বে ওই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এবং পার্বত্য অঞ্চলের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
কল্পনা চাকমা অপহরণ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও হিল উইমেনস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৩ বছর : মামলার বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেনস ফেডারেশনের সভাপতি মনিরা ত্রিপুরা। আলোচনায় মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সংসদ সদস্য লুৎফুননেছা খান, ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখি দাশ পুরকায়স্থ, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ অংশ নেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা।
সভায় সুলতানা কামাল বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রে সমান অধিকার, সমান মানবিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু কল্পনা চাকমা অপহরণের মাধ্যমে দেশে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি। কল্পনা চাকমাকে উধাও করে দেওয়ার মাধ্যমে একটি পুরো জনগোষ্ঠীকে উধাও করেছি।
’
লুৎফুননেছা খান জানান, কল্পনা চাকমা একজন প্রতিবাদী সংগ্রামী ছিলেন। তিনি শুধু নারীদের জন্য সংগ্রাম করেননি, নারী-পুরুষ সবার জন্য সংগ্রাম করেছেন। সংগ্রামী এই মানুষের অপহরণের মূল রহস্য উন্মোচন করতে হবে। নারীরা ভাষাগত, লিঙ্গগত পার্থক্যের কারণে আরো বেশি অত্যাচারের শিকার হচ্ছে।
এটা বন্ধ করতে হবে। তিনি ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য শান্তিচুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সঞ্জীব দ্রং জানান, ২৩ বছর পেরিয়ে গেছে অথচ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে না পারা ও প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় না আনা রাষ্ট্রের জন্য চরম লজ্জার। একটি স্বাধীন দেশে কল্পনা চাকমা নিরুদ্দেশ বা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রের জন্য চরম ব্যর্থতা। তিনি কল্পনা চাকমার অপহরণের সঙ্গে যাদের নাম এসেছে, তাদের খুঁজে বের করার দাবি জানান।