ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

মাদকাসক্ত ছেলের লাশ ঘরে পুঁতে পালালেন মা-বাবা

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
শেয়ার
মাদকাসক্ত ছেলের লাশ ঘরে পুঁতে পালালেন মা-বাবা

মাদকাসক্ত সন্তান জসিম উদ্দিন (২০) বিষিয়ে তুলেছিলেন মা-বাবার জীবন। একপর্যায়ে সেই সন্তানকে হত্যা করে লাশ বসতঘরেই পুঁতে রেখে পালিয়ে গেছেন মা-বাবা। ১১ মার্চ রাতের ওই ঘটনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের উরাহাটি পশ্চিমপাড়া গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা।

পেশায় অটোচালক জসিম উদ্দিন একই গ্রামের মুরগি ব্যবসায়ী সুলতান মিয়ার ছেলে। মায়ের নাম সুফিয়া বেগম। খবর পেয়ে বাবার বসতঘরের মাটি খুঁড়ে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ। উদ্ধারের সময় লাশের গলায় রশি পেঁচানো ছিল।
ওই ঘটনায় গতকাল ভালুকা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।  

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জসিম উদ্দিন বেশ কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন। নেশার টাকার জন্য তিনি প্রায়ই মা-বাবার ওপর নির্যাতন চালাতেন। নেশার জগৎ থেকে ফেরাতে বছর দুয়েক আগে পাশের বিরুনিয়া গ্রামে তাঁকে বিয়ে করানো হয়।

এক বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাঁর।

জানা যায়, গত সোমবার রাতে মাদকের টাকার জন্য মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হন জসিম। একপর্যায়ে টাকার জন্য জসিম তাঁদের মারধর করতে উদ্যত হন। এ সময় সুলতান মিয়া ছেলেকে হত্যা করে লাশ নিজের বসতঘরে চৌকির নিচে মাটিতে পুঁতে রাখেন। পরদিন মঙ্গলবার সুলতান মিয়া ঢাকার তেজগাঁওয়ে ভাতিজা জমির হোসেনের কাছে গিয়ে ছেলেকে হত্যার বিষয়টি জানান।

পরে জমির হোসেন মোবাইল ফোনে ঘটনাটি নিহত জসিম উদ্দিনের বড় ভাই (সৎ) আমীর হোসেনকে জানালে তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অন্যদের বিষয়টি অবহিত করেন।

খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ গতকাল ওই বাড়িতে যায়। ঘরে চৌকির নিচে কিছু অংশ নতুন করে মাটি দিয়ে লেপাপোছা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে ওই স্থানের মাটি খুঁড়ে জসিমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই আমীর হোসেন ভালুকা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় তাঁর বাবা সুলতান মিয়া, বিমাতা সুফিয়া বেগম ও সহোদর আলমগীর হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা ঘটনার পর থেকে পলাতক।

মোবাইল ফোনে জমির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, “মঙ্গলবার রাইতে চাচা আমার কাছে আইয়া কইছে, ‘আমি আমার পুতেরে মাইরা ফালাইছি।’ আমি তাঁরে কইছি, আমনহে এইডা কি কইন! তাড়াতাড়ি গেয়া পুলিশেরটাইন আত্মসমর্পণ করুন। পরে হে আমার কাছ থাইক্যা চইলা গেছে। এর পরে আমি মোবাইল কইরা বিষয়ডা তাঁর পুলাপানেরে জানাইছি।” 

ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলামের উপস্থিতিতে আমীর হোসেন জানান, চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তিনি মোবাইলে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় তাঁর বাবা তাঁকে জানান, জসিম উদ্দিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে আসে এবং টাকার জন্য মা-বাবাকে চাপ দেন। টাকা না দেওয়ায় তিনি তাঁদের মারতে উদ্যত হন। ওই সময় শাসন করার জন্য ঘরে থাকা কুড়াল দিয়ে আঘাত করলে জসিম মারা যান। লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বাবা তাঁকে জানান। একপর্যায়ে বলেন, ‘জসিমের লাশ বাড়ির আশপাশেই আছে।’ আমীর হোসেন বলেন, জসিম মাদকাসক্ত হওয়ায় মাস তিনেক আগে তাঁর স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছেন।

পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম জানান, লাশের গলায় রশি পেঁচানো ছিল। তবে গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

ভালুকা মডেল থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহতের মা-বাবা ও সত্ভাইকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত বুধবার ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ওয়াহিদুর রহমান হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মন্তব্য

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

সরকার এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

 

মন্তব্য

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

    রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।

গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ