বঞ্চনা ও দুর্ভোগ থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতার অভাবের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশি আইনজীবী রাজিয়া সুলতানা। তিনিসহ বিশ্বের ১০ নারী গত বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আন্তর্জাতিক সাহসী নারী)’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় নিরলস প্রচেষ্টা এবং তাদের ওপর নিপীড়নের তথ্য লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকার জন্য রাজিয়া সুলতানাকে ওই পুরস্কার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
পুরস্কার গ্রহণের পর রাজিয়া সুলতানা ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পেয়েছে।
রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো একজন নেতা পেলে রোহিঙ্গাদের জন্মভূমি থেকে কেউ বিতাড়িত করতে পারত না। রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চায়।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশের নাগরিক রাজিয়া সুলতানা তাঁর জীবনের বেশির ভাগ সময় আইনজীবী, শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে কাটিয়েছেন।
২০১৪ সাল থেকে তিনি রোহিঙ্গাদের, বিশেষ করে রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাশিশুদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে গবেষণা ও শিক্ষা কর্মসূচি, ট্রমা, গণধর্ষণ ও পাচার বিষয়ে কাজ করছেন।
রাজিয়া সুলতানা ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া কয়েক শ’ রোহিঙ্গা নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ‘উইটনেস অব হরর’ ও ‘রেপড বাই কমান্ড’ নামে তাঁর দুটি প্রকাশনায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ধারাবাহিক যৌন সহিংসতার তথ্য রয়েছে।
সম্প্রতি কালাদান প্রেস প্রকাশিত ‘দ্য কিলিং ফিল্ডস অব অ্যালিথানকিয়াউ’ শীর্ষক প্রতিবেদনেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন।
রাজিয়া সুলতানা ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের’ (এফআরসি) সমন্বয়ক এবং আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (আরনো) পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।