ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
সংস্কৃতি

দুর্লভ ভাস্কর্যে গাঁথা ইতিহাস

নওশাদ জামিল
নওশাদ জামিল
শেয়ার
দুর্লভ ভাস্কর্যে গাঁথা ইতিহাস
জাতীয় জাদুঘরে গতকাল থেকে সংরক্ষিত বৌদ্ধ ভাস্কর্যের প্রদর্শনী শুরু হয়। ছবি : কালের কণ্ঠ

অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর ইতিহাস বয়ে চলেছে ভাস্কর্যগুলো। প্রতিটিই বিরল, দুর্লভ। প্রতিটিই অমূল্য রত্ন। এসব ভাস্কর্যের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন বাংলার পাল-চন্দ্র শাসনামলের তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের অবলোকিতেশ্বর, ধ্যানিবুদ্ধ, বজ্রসত্ত্বের ভাস্কর্য।

সঙ্গে আছে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রভাবিত ও স্থানীয় ধর্মান্ত?রিত জনগোষ্ঠীর তৈ?রি চুণ্ডা, হেরুক, হারিতি, মারিচি, পর্ণশবরী প্রভৃতি বৌদ্ধ দেব-দেবীর ভাস্কর্যও। কোনোটি প্রস্তর, ব্রোঞ্জ ও আবার কোনোটি পোড়ামাটিতে গড়া। বৌদ্ধ ঐতিহ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরে ৮৫টি বিরল ও দৃষ্টিনন্দন ভার্স্কযের সমন্বয়ে শুরু হয়েছে বিশেষ এই প্রদর্শনী।

ইতিহাস বলছে, 'বুদ্ধ' শব্দের অর্থই হচ্ছে জ্ঞানপ্রাপ্ত বা আলোকপ্রাপ্ত।

যুগের প্রথম জ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বুদ্ধ নামে অভিহিত করা হয়। আর ওই মহান ব্যক্তিটির নাম গৌতম বুদ্ধ। গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় বৌদ্ধ ধর্মে কোনো মূর্তির স্থান ছিল না। গৌতম বুদ্ধ নিজেও মূর্তি পছন্দ করতেন না।
কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসার লাভ করে। তাঁর অনুসারীরা বুদ্ধকে ভগবান কল্পনা করে মূতি নির্মাণ শুরু করে। এ সময় কুষাণ সম্রাট কণিষ্কের শাসনামলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং বৌদ্ধরা হীনযান ও মহাযান নামক দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। হীনযানী বৌদ্ধরা মূর্তিপূজার বিরোধী ছিল, বিপরীতে মহাযানী সম্প্রদায় বুদ্ধের মূর্তি নির্মাণ করে পূজা প্রচলন করে।
এর ফলে বৌদ্ধ ধর্মে পৌত্তলিকতা ও পূজার প্রচলন হয়।

বৌদ্ধ শাসনামলে প্রাচীন বাংলায় নির্মিত হতে থাকে বৌদ্ধ দেব-দেবীর নানা ভাস্কর্য। সেসব ভাস্কর্য শুধু অমূল্য রত্নই নয়, ভাস্কর্যশিল্পের সমৃদ্ধ ইতিহাসও। হাজার বছরের ইতিহাসঘেরা এমন ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। 'ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ডেভেলপমেন্ট অব সাসটেইনেবল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ বুড্ডিস্ট হেরিটেজ অ্যান্ড পিলগ্রিম সারকুইটস ইন সাউথ এশিয়াস বুড্ডিস্ট হার্টল্যান্ড' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল বুধবার এই বিশেষ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।

সকালে জাদুঘরে বিশ্ব পর্যটন সংস্থার মহাসচিব তালেব রিফাই এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এতে প্রধান অতিথি তালেব রিফাই ছাড়াও সম্মানিত অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আয়োজক হিসেবে জাদুঘরের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এম আজিজুর রহমান। তালেব রিফাই তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'হাজার বছরের সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে এখানে। এই সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি অংশ হলো বৌদ্ধ ভাস্কর্য। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন অমূল্য রত্ন নেই।'

আগামীর বাংলাদেশ পর্যটন-সুন্দর বাংলাদেশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে রাশেদ খান মেনন বলেন, 'পর্যটনের বিকাশে, দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সরকার দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশে কাজ করছে, তেমনি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকেও।'

বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার মতো যথেষ্ট সমৃদ্ধিশালী সংস্কৃতি বাংলাদেশে রয়েছে বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, 'পর্যটকরা এখন শুধু দর্শনীয় স্থান নয়, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কেও বেশ আগ্রহী। বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস তুলে ধরা ও প্রাচীন বাংলার সমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরতে এ প্রদর্শনী ভূমিকা রাখবে।'

ভিন্নধর্মী এ প্রদর্শনী আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছে।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহজালালে প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে দুজন সঙ্গী প্রবেশের নির্দেশনা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন প্রতিজন যাত্রীর সঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন সঙ্গী প্রবেশ করতে পারবেন—এমন নির্দেশনা জারি করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই নির্দেশনা আগামী রবিবার (২৭ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর এলাকার ডিপারচার ড্রাইভওয়ে ও অ্যারাইভাল ক্যানোপিতে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ দুজন ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখা, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় আসা সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

যানজট ও নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপকে জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, প্রয়োজনে এই নিয়ম আরো কড়াকড়ি করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ পরিচয়পত্র রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনার মামাতো ভাই হিরা কারাগারে

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আমির হোসেন হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামাতো ভাই শেখ ওয়ালিদুর রহমান হিরাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এদিন হিরাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা তাঁকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত বুধবার ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ওয়াহিদুর রহমান হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মন্তব্য

দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেড় দশকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসে’ নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ‘সন্ত্রাসী’ হামলা এবং তৎকালীন ‘সরকারের নির্দেশে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার দাবি জানায়, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি করে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে সরকারের উদ্যোগ চান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই শেষ হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আগের ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সংগঠনের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের প্রতিটি ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোও তদন্তের আওতায় রয়েছে।

সরকার এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধেও সে কথা বলেছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য কান্না করে।

 

মন্তব্য

হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

    রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান!
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজউকের প্লট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ চালককে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৫ চালককে প্লট দেওয়া হয়।

গত বুধবার কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে এই অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ক্ষেত্রে চার শ্রেণিতে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরাদ্দের ক্ষেত্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিঠি দিলে রাজউক তা বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পে ১৩/এ ধারার আওতায় বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক, বিশেষ সহকারীর গাড়িচালক, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর চালক, একান্ত সচিব-১ ও ২-এর চালক, প্রটোকল অফিসারের চালক, মুখ্য
সচিবের চালক, চিফ ফটোগ্রাফারের চালকসহ প্রায় ১৫ জন চালককে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এসআরও এবং রাজউক বিধিতে অসামান্য অবদানের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া পাওয়া যায়নি। প্লট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কোন কোন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রয়েছে তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ