ঢাকা, শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ মহররম ১৪৪৭
আদালতে জজ মিয়ার সাক্ষ্য

\'যেভাবে বলব, সেভাবে করবি ও বলবি নইলে মা-বোন বাঁচবে না\'

আদালত প্রতিবেদক
আদালত প্রতিবেদক
শেয়ার
\'যেভাবে বলব, সেভাবে করবি ও বলবি নইলে মা-বোন বাঁচবে না\'

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলায় জজ মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অফিসে নিয়ে কর্মকর্তারা বলতেন, 'বাবা, যেভাবে বলব, সেভাবে করবি ও বলবি, নইলে তোর মা-বোন বাঁচবে না।' আবার তাঁকে কবরে পাঠানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। এসব কারণে জজ মিয়া সাজানো ও মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেন আদালতে।

গতকাল মঙ্গলবার একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এমন কথা জানান জজ মিয়া ওরফে জালাল আহম্মেদ।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় ১০৪তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন তিনি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিশেষ এজলাসে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন জজ মিয়ার জবানবন্দি নেন। আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর তাঁকে আসামিপক্ষের জেরা করার জন্য তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে জজ মিয়ার মা ও বোন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৫ সালে জজ মিয়াকে আটক করে বহু আলোচিত 'জজ মিয়া নাটক' সাজানো হয়। কিন্তু ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জজ মিয়া নাটকের অবসান হয়। তদন্তে জানা যায়, একুশে আগস্টের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল।

জজ মিয়া গতকাল তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগে ছিলেন। ২০০৫ সালের ৯ জুন তিনি অসুস্থ অবস্থায় বাজারে ওষুধ কিনতে গেলে মোখলেছ চৌকিদারের সঙ্গে দেখা হয়। চৌকিদার তাঁকে বলেন, 'তোমার নামে স্মাগলিংয়ের মামলা আছে। ওই মামলায় ওয়ারেন্টও আছে।' এ কথা বলে চৌকিদার থানায় ফোন করেন।

থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাঁকে সেনবাগ থানায় নিয়ে যায়। থানার এসআই রফিক জজ মিয়াকে জানান, এই থানায় কোনো মামলা নেই। ঢাকা থেকে ওয়ারেন্ট এসেছে। ওই দিনই ঢাকা থেকে সিআইডির এসপি রশিদ সাহেব (মামলার তদন্ত কর্মকর্তা) সেনবাগ থানায় যান। জজ মিয়ার চোখ-মুখ বেঁধে থানা থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকা নিয়ে আসেন তিনি।

জজ মিয়া বলেন, 'রশিদ সাহেব আমাকে বলেন, তুমি বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা করেছ। তখন আমি বলি, না স্যার আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। এ কথা বলার পর তিনি আমাকে মারধর করেন। এসপি বলেন, তুই যদি এটা স্বীকার না করিস, তাহলে অন্য মামলায় আসামি করে তোকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেব। তোকে মেরে কবরে পাঠিয়ে দেব।'

জজ মিয়া আরো বলেন, 'এরপর চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ঢাকায় আসার পর চোখ খুললে আমি দেখি, সাদা পোশাকধারী কয়েকজন পুলিশ। তাদের কাছ থেকে জানতে পারি, এটা মালিবাগের সিআইডি অফিস। এরপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করলে তাঁরা আমার ফ্যামিলির সদস্যদের মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, আমরা যেভাবে বলি, তোকে সেভাবে শুনতে হবে। আমাদের কথা শুনলে তুই বেঁচে যাবি। কথাগুলো বলেন সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তখন আমি বলি, স্যার, তাহলে আমাকে কিভাবে বাঁচাবেন? উত্তরে তাঁরা জানান, এ মামলায় আমাকে রাজসাক্ষী রাখা হয়েছে, আমার ফ্যামিলিকে তাঁরা দেখবেন।'

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ

চার দফা দাবি না মানলে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে টানা অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
চার দফা দাবি না মানলে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে টানা অনশন
চার দফা দাবিতে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। ছবি : কালের কণ্ঠ

বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, পদোন্নতিসহ চার দফা দাবিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গতকাল শুক্রবার মহাসমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চার দফা দাবি পূরণ করা না হলে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টানা অনশন কর্মসূচি পালন করবেন। কোথাও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হবে না।

তাই সরকারকে অবিলম্বে দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

গতকাল সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা প্রাথমিকের সহকারী ও প্রধান শিক্ষকরা। সকাল ১১টার দিকে এই মহাসমাবেশ শুরু হয়।

দুপুর ২টার দিকে মহাসমাবেশের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সভাপতি মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রে জেনেছি, রিট করা ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেড বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তাহলে যাঁরা মামলা করেননি, তাঁদের জন্য কবে দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হবে? আমরা চাই, দেশের সব প্রধান শিক্ষক যেন সমানভাবে দশম গ্রেড পান। সহকারী শিক্ষকদের জন্য কনসালটেশন কমিটি ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব দিয়েছে, অথচ আমাদের দাবি হচ্ছে ১১তম গ্রেড।’

প্রাথমিক শিক্ষকদের চার দফা দাবি হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান; ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে সব প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে পদোন্নতির সরকারি আদেশ (জিও) জারি; চলতি দায়িত্বে থাকা সিনিয়র শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিতকরণ এবং চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

মন্তব্য
জুলাই শহীদ রিজভীর প্রতি শ্রদ্ধা

শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গণতান্ত্রিক-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে : সিপিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গণতান্ত্রিক-বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে : সিপিবি

চব্বিশের গণ-আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের গুলিতে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সময় সিপিবি নেতারা বলেন, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে। অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরা থানা কমিটির সদস্য শহীদ রিজভী স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন সিপিবি সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ।

মন্তব্য
শহীদ মুগ্ধর বাবা

জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল

স্বাধীনতার স্বাদ মানুষ জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে পেয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল। কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভা দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে মুগ্ধর শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয়। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তা ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েমের মধ্য দিয়ে হারিয়ে ফেলেছি। যে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল দিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল, সে কখনো জাতির পিতা হতে পারে না। তার কন্যা শেখ হাসিনাও স্বৈরাচারতন্ত্রের দানবকন্যা হয়ে উঠেছিল।
এডাস্ট বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদ মুগ্ধর নামে একটি খাবার পানির কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দেন। উৎপাদিত পানি বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রতীকী ম্যারাথন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রতীকী ম্যারাথন

জুলাই যোদ্ধাসহ আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক প্রতীকী ম্যারাথন গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ওই ম্যারাথন আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বয়সের প্রতিযোগীদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এক হাজার প্রতিযোগী নিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রতীকী ম্যারাথনটি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে গণভবন, সংসদ ভবন, খামারবাড়ি হয়ে আবারও চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।

গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে আয়োজিত এ প্রতীকী ম্যারাথন ছিল এবারের গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপনের অন্যতম অংশ। গতকাল সকাল ৭টায় এই ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ম্যারাথন শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
এই অভ্যুত্থান দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রতীকী ম্যারাথনে অংশ নিয়ে আমরা অভ্যুত্থানের সেই মহান আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তরুণ প্রজন্মকে সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।’

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ