আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে উন্নয়নের মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি। তিনি বলেছেন, একটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। তারা দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এটি যদিও পুরনো বিষয়, তবু হয়তো এ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি একটি বক্তব্য দিয়েছেন।
‘উন্নয়নের মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায়’
নিজস্ব প্রতিবেদক

শারমিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্চালক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস রপ্তানি করার ব্যাপারে ভারতকে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। জবাবে বিএনপি বলেছে, তাহলে পরের বার যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল তারা কার কাছে মুচলেকা দিয়েছে? কিভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি যে বিষয়ে নিজেদের নির্দোষ বলছে সেটি ওই সময় অর্থাৎ ২০০১ সালে রাজনীতিতে বড় ইস্যু ছিল। এবার হয়তো প্রধানমন্ত্রী একটি স্মৃতিচারণা করেছেন।
এ পর্যায়ে বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা তো বলেছি, আমরা কোনো গ্যাস রপ্তানি করিনি। তাহলে কেন এ কথা এত বছর পর আসছে। আসলে প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে আবারও নাজেহাল করতে বা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এসব কথা বলেছেন।’ আলাল বলেন, “আমরা ওয়ান-ইলেভেনের সেই কথা আজও ভুলিনি। আমরা বড় দুই রাজনৈতিক দল ওয়ান-ইলেভেনের থেকে শিক্ষা নিতে পারিনি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে ওয়ান-ইলেভেন ‘ভূমিষ্ঠ’ হয়। দুর্নীতির জন্য হোক বা অন্য যে কারণেই হোক, বাংলাদেশের বহু রথী-মহারথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাঁরা জেলে ছিলেন, তাঁদের জন্য রাজনৈতিকভাবে শাপে বর হলো। পরবর্তীকালে তাঁরা চিহ্নিত হলেন ‘সংগ্রামী’ বলে। যাঁরা পালিয়ে গেলেন তাঁরাও ‘বীরের মর্যাদা’ পেলেন পরে। সমস্যায় পড়লেন তাঁরা, যাঁরা জেলে যাননি এবং পালাননি। যাঁদের জেলে নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দুর্নীতিবাজ বা অপরাধী ছিলেন না এমন নয়, তবে অনেক ঠুনকো অভিযোগেও জেলে যেতে হয়েছে অনেককে। কিন্তু এ কথা সত্য যে মন্দের ভালো যাঁরা, তাঁদের বড় অংশ খপ্পরে পড়ে বন্দুক-তাড়িত সংস্কারের। একটি ক্ষুদ্র অংশ জেল ও সংস্কারের বাইরে থেকে সনাতনপন্থী বিএনপির পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। তাদের অনেককেও এ জন্য জেল খাটতে হয়েছে। অবশ্য তাঁরাও দাঁড়িয়েছিলেন ওয়ান-ইলেভেন গংয়ের দ্বিধাবিভক্ত একটি গ্রুপের ইশারা পেয়ে। আমার মনে হয়, আমাদের সবারই ওয়ান-ইলেভেন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। না হলে আগামী দিনে এ পরিস্থিতি আবারও হতে পারে।”
এ পর্যায়ে সাংবাদিক মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘এটা আসলে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না যে কে কার কাছে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বা আসবে। তবে এটা ঠিক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রেক্ষাপট থেকে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, রাজনীতি হওয়া উচিত দেশের জন্য, দলের জন্য—তাহলেই হয়তো কোনো বিতর্ক জন্ম নেবে না।’ তিনি বলেন, বিএনপি তো নির্বাচনের বিষয়ে অনেক কথা বলে; কিন্তু তাদের সময়ের সব নির্বাচন কি সুষ্ঠু হয়েছে? তাই রাজনৈতিক বক্তব্যের পেছনে অনেক হিসাব-নিকাশ থাকে। সেটি ধরলে হবে না।
সম্পর্কিত খবর