ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আর কোনো সরকার যেন ইচ্ছামতো ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে টেলিযোগাযোগ আইনে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
স্টারলিংকের বাংলাদেশ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই ইন্টারনেট বন্ধ করব না।
ভবিষ্যতেও যাতে কেউ তা না করতে পারে, সে জন্য আইনি সংস্কারে যাচ্ছি। আইন কিছুটা জটিল হওয়ায় সময় লাগছে, তবে আগামী এক বছরের মধ্যে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হবে।’
তিনি আরো জানান, স্টারলিংক বাংলাদেশে নিজস্ব পরিবেশক নিয়োগ দেবে এবং ইন্টারনেট সেবাও তারা নিজেরাই পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখে সেবা দেওয়া হবে।
’
স্টারলিংকের সেবামূল্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশে দাম কম। উপকূলীয় ও দুর্গম এলাকায় ব্যবহার বাড়লে ভবিষ্যতে দাম আরো সহনীয় হতে পারে।’
কবে নাগাদ স্টারলিংকের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে, সেবা শুরু হয়ে গেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার ও বিস্তৃতি বাড়বে।
’
তিনি বলেন, ‘মোবাইল ও ব্রডব্যান্ডের পাশাপাশি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট হবে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভিন্নধর্মী সংযুক্তি। কেউ কাউকে প্রতিস্থাপন করছে না, বরং বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক বিষয়ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস।
লিখিত বক্তব্যে লরেন ড্রেয়ার বলেন, “স্টারলিংক শুধু একটি ইন্টারনেট সেবা নয়, এটি একটি নির্ভরযোগ্য ‘লাইফলাইন’। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও দুর্যোগপ্রবণ দেশে স্টারলিংক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে, বিশেষ করে বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের মতো পরিস্থিতিতে।
”
ফয়েজ আহমদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্টারলিংক ব্যবহার করে কিভাবে তাদের জীবনযাত্রায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে, তা দেখার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি।’
রিচার্ড গ্রিফিথস বলেন, “বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’-এ সরকারের গৃহীত উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।”
স্টারলিংকের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান লরেন। তিনি বলেন, ‘১৫০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে স্টারলিংক সেবা চালু রয়েছে। বাংলাদেশও এখন সেই তালিকায় যুক্ত হলো। উচ্চগতির ইন্টারনেট এখন আর কল্পনা নয়।’