ঢাকা, শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৬ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৬ সফর ১৪৪৭
কমিশনের সঙ্গে সংলাপ

প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য

সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে ঐকমত্য হয়েছে। সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে আর জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় দফা সংলাপের ১১তম দিনের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগের এই সিদ্ধান্ত হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।

সংলাপে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংলাপ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন ও রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্যমান সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

তবে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কর্মে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠতম একজনকে না কর্মে জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে একজন নিয়োগ করা হবে সে বিষয়ে দুটি মত উপস্থিত আছে। কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণাসংক্রান্ত বিষয়ে গত ৭ জুলাইয়ের আলোচনায় সংবিধানের  অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার না হয়, এ দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। আলোচনায় অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধনের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান অপসারণ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে।

তিনি বলেন, কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে এ বিষয়টা আরো সুনির্দিষ্ট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আরো কী কী বিষয় সংযুক্ত করা যায়, সেসব আগামী সপ্তাহের আলোচনায় সুস্পষ্ট হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিষয়ক দুটি প্রস্তাব নিয়ে আজ (গতকাল) আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা কার্যত যতদূর সম্ভব ত্রুটিহীন হয় এবং যে ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এই বিষয়েও আরো আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের দুজনের মধ্য থেকে একজনকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেবেন।

এ ক্ষেত্রে কোনো অসদাচরণের অভিযোগ না থাকলে আপিল বিভাগের যেকোনো জ্যৈষ্ঠ বিচারককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব করেছে বিএনপি।

তিনি আরো বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর একমত। তবে আগের একই কাঠামো থাকবে কি না, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।

জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত জরুরি অবস্থা জারিসংক্রান্ত বিধানে অভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্য বিদ্রোহ শব্দটি জরুরি অবস্থা জারি এই অভ্যন্তরীণ শব্দটি বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। আর জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের বিধান না রেখে সংসদীয় কমিটির স্বাক্ষর করার বিধান রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া জরুরি অবস্থায় লেখার ও বলার স্বাধীনতা বহাল রাখা, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতম আচরণ করা যাবে না এবং বিচার পাওয়ার অধিকার রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি প্রস্তাবনা বিএনপির কাছে দিয়েছে সরকার, এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানকে যথাযথ মর্দাযায় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে চায় বিএনপি। ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকলেও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত থাকে না। স্বাধীনতার পর জনপ্রতিনিধিরা ঘোষণাপত্র তৈরি করেছিলেন, তাঁরা আলোচনা করে সংবিধান প্রণয়ন করেন। পরবর্তী সময়ে ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে সংযুক্ত করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়ে একমত এনসিপি। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আমরা সর্বদলীয় একটি কমিটি গঠনের কথা বলেছি। জরুরি অবস্থা জারি বিষয়ে ১৪১-ক অনুচ্ছেদের সংশোধনী আনতে মত দিয়েছি।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের রুটিনকাজ হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা, স্থানীয় নির্বাচন করা তাদের কাজ নয়। স্থানীয় নির্বাচন করবে নির্বাচিত সরকার। একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করাই হবে নির্বাচনকালীন সরকারের কাজ। অতীতে দেখেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মূল কাজের বাইরেও অতিরিক্ত কাজে জড়িয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে। এতে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। তাই আমরা নাম পরিবর্তনের কথা বলেছি। তিনি আরো বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ যেন স্বচ্ছ হয়। এখনো অতীতের মতো বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২৩ জন বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আলোচনা দীর্ঘায়িত না করার আহবান জানান তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে যুক্ত করার কারণে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছিল। বিচার বিভাগকে এখানে যুক্ত করার কারণে শুধু বিচার বিভাগ দলীয়করণ হয়নি, পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার মধ্যে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছিল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতিকে শেষ বিকল্প হিসেবে ত্রয়োদশ সংশোধনীতে রাখা হয়েছিল। এর ব্যবহারও তাঁরা দেখেছেন। সে ব্যবহারে রাষ্ট্রপ্রধানকেও একটা বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে আরেকটা গুরুতর সংকট তৈরি করা হয়। এ কারণে তাঁরা তাঁদের দিক থেকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগ, এই দুই প্রতিষ্ঠানকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জায়গায় যাওয়া দরকার।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি যেন আপিল বিভাগের দুজন শীর্ষস্থানীয় বিচারপতির মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে নিয়োগের এখতিয়ার পান।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে লাল কার্ড সমাবেশ

শেয়ার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে লাল কার্ড সমাবেশ
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়কে প্রত্যাখ্যান করে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে লাল কার্ড সমাবেশ করেন একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ওপর হামলা সাংবাদিকসহ আহত ২০

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ওপর হামলা সাংবাদিকসহ আহত ২০

কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বের করা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছয় সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

মিছিল থেকে সাম্প্রতিক সময়ে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানানো হয়। মিছিল চলাকালে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে বেশ কয়েকটি ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এর পরই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় আসিফ মাহমুদ সমর্থকদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন আহত হন, এর মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।
হামলার জন্য স্থানীয় বিএনপিকে দায়ী করেছেন আসিফ সমর্থক নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মো. মিনাজুল হক।

আহত ইউপি সদস্য মো. শেখর জানান, আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আল্লাহ চত্বরে এসে সমাবেশ শুরু করার পরপরই সমাবেশ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় আমাকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

হামলায় প্রায় অর্ধশত সমর্থক আহত হন। এ ছাড়া শেখর মেম্বারের অবস্থা খুবই গুরুতর।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, মিছিল নিয়ে এসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লোকজন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে ওমর আলী নামের যুবদলকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা আমিন কাদের খান বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা আগেই আমাদের কাছ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের লিখিত অনুমতি নিয়েছেন। তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছিলেন, এ সময় পাশে অবস্থানকৃত কিছু লোক বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এর পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। এতে কিছু লোক আহত হয়েছে। উপজেলা সদরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা আছে।

 

মন্তব্য
রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলা

গ্রেপ্তার ৫ জনই নীলফামারীর, আজ রিমান্ড শুনানি

রংপুর অফিস ও গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুর অফিস ও গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
গ্রেপ্তার ৫ জনই নীলফামারীর, আজ রিমান্ড শুনানি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের রংপুর আমলি আদালতে (গঙ্গাচড়া) শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ওই পাঁচজনই ঘটনাস্থলের পাশে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াছিন আলী (২৫), একই গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২), মাগুড়া ধনিপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে স্বাধীন মিয়া ( ২৮), দক্ষিণ চাঁদখানা মাঝপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৮) এবং  উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের মৃত বাবুল খানের ছেলে এম এম আতিকুর রহমান খান।

আদালত পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল রংপুর আমলি আদালতের (গঙ্গাচড়া) বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ  বৃহস্পতিবার তাঁদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল এমরান কালের কণ্ঠকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে রিমান্ড আবেদন করব। ওই পাঁচজন ছাড়াও যারা অভিযুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

গতকাল দুপুরে আসামিদের রংপুর সদর কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, রঞ্জন রায় নামের এক কিশোর তার ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট করে।

শনিবার ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা শনিবার রাত ও রবিবার বিকেলে ওই কিশোরের বাড়িসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালায়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে রঞ্জন রায়কে আটক করে পুলিশ। পরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

 

মন্তব্য

জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে ৩টি গুরুতর ব্লক জরুরি বাইপাসের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে ৩টি গুরুতর ব্লক জরুরি বাইপাসের সিদ্ধান্ত
শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে তিনটি গুরুতর ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সে জন্য জরুরি বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মঞ্চেই পড়ে যান ডা. শফিকুর রহমান। এর পর থেকে তিনি চিকিৎসকদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

তারই অংশ হিসেবে গতকাল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এনজিওগ্রাম করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি মেজর ব্লক রয়েছে।

চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির পাশাপাশি বিদেশে চিকিৎসার কথাও বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের চিকিৎসকদের ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

তাই তিনি দেশেই চিকিৎসা করাতে আগ্রহী।

এই বাইপাস সার্জারি কবে কোথায় এবং কার তত্ত্বাবধানে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই। এ বিষয়ে পারিবারিক ও দলীয় পর্যায়ে আলোচনা চলছে।

ডা. শফিকুর রহমান এবং তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যেন মহান আল্লাহ তাঁকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন, তিনি যেন আবারও দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ