চট্টগ্রাম নগরের বাদুরতলার সায়মা তাবাসসুম বললেন, গত বুধবার দুপুর থেকে গ্যাস নেই। রাতে অল্প গ্যাস পাওয়া গেলেও আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গ্যাস ছিলই না। বিকেল ৫টার পর একটু এসেছে; তবে চাপ খুবই কম। রান্না করতে না পেরে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেয়েছি।
চট্টগ্রামে হঠাৎ গ্যাসসংকটে ভোগান্তি
মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম

গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাতাসের গতিবেগের সঙ্গে সাগরের ঢেউয়ের কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে তিন হাজারের বেশি কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া নগরের আবাসিক এলাকায় গ্রাহক আছে প্রায় ছয় লাখ। চট্টগ্রামে প্রতিদিন গ্যাসের মোট চাহিদা ৩১২ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে শিল্প খাতে প্রয়োজন হয় ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন, গৃহস্থালিতে ৩৫ মিলিয়ন, সার কারখানা কাফকোতে ৪৬ মিলিয়ন ও সিইউএফএলে ৪৪ মিলিয়ন।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে গ্যাস আসে কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত এলএনজি থেকে। সেখানে আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিতরণ কম্পানিগুলো স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু এলএনজি থেকে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন হওয়ায় এখন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় গত বুধবার সকাল থেকে নগরের কাট্টলী, খুলশী, আগ্রাবাদ, জামালখান, হালিশহর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। দুপুর থেকে নগরীর শিল্প-কারখানাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তখন আবাসিক এলাকায় গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে নগরীর কিছু এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আর কিছু এলাকায় চাপ কমে যায়। গতকাল বেশির ভাগ এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস সরবরাহ। আকস্মিক গ্যাসসংকটের কারণে গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক উভয় খাতের গ্রাহকরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিউল আজম খান বলেন, ‘সাগর উত্তাল আর বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় মহেশখালীতে এলএনজিবাহী জাহাজ থেকে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে আমরা প্রতিদিন ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পেতাম, সেটা এখন ১৬০ থেকে ১৭০ ঘুনফুটে নেমে এসেছে। এ জন্য সমস্যা হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা করছি।’
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স