ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

নতুন নোটে বিড়ম্বনা, নিচ্ছে না এটিএম ও মেট্রো রেলের বুথ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নতুন নোটে বিড়ম্বনা, নিচ্ছে না এটিএম ও মেট্রো রেলের বুথ

চলতি মাসে বাজারে এসেছে তিন ধরনের নতুন নোট। যাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নতুন এই নোট সংগ্রহে মানুষের আগ্রহ বিপুল। ফলে অনেকে খোলা বাজার থেকে বাড়তি দামে কিনে তা সংগ্রহ করছে।

তবে ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে নতুন এই নোট নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে এটিএম বা সিআরএম বুথ এবং মেট্রো রেলের টিকিট বুথে এই নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি এক হাজার টাকার নতুন নোট হাতে নিয়ে বলছেন, কোনো দোকানদার এই টাকা গ্রহণ করছে না। যারা অতিরিক্ত দাম দিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করেছে তাদের মধ্যে একজনের দাবিতিনি একাধিক দোকানে গিয়েও কাউকে বোঝাতে পারেননি যে এটি বৈধ ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইস্যু করা নতুন নোট।

আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি এটিএম বুথে নতুন এই টাকা জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও মেশিনটি সেটি গ্রহণ করছে না। এতে নতুন নোট নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে নতুন নোট সরবরাহ করা হলেও প্রযুক্তিগত জটিলতায় তা এখনো পুরোপুরি স্বীকৃতি পায়নি এটিএম সিস্টেমে।

এতে নগদ লেনদেন বিশেষ করে বুথ ও অটোমেটেড টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোয় সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের।

এ বিষয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) শাহ আলম পাটোয়ারী কালের কণ্ঠকে বলেন, নতুন এক হাজার টাকার নোট গ্রহণ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ এটিএম বুথের সফটওয়্যার সিস্টেমে নতুন টাকাটি এখনো সংযুক্ত করা হয়নি। এতে কয়েক ধাপে বিশেষ সিকিউরিটি কনফিগারেশন সম্পন্ন করতে হয়। এরই মধ্যে এই আপডেটের কাজ শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সমস্যার এখনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া না হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আপডেট ও কনফিগারেশন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এর আগে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও বুথ ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন করা হলে এই বিড়ম্বনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গত ঈদুল আজহার ছুটিতে এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাহকদের। অন্যদিকে নতুন টাকা জমা দিতে পারেননি অনেকে। কিন্তু এটিএম বুথের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা টাকা জমা ও তোলার সুযোগ পাওয়ার কথা। ঈদের ছুটিতে সেই এটিএম বুথ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুথ থেকে বুথে ঘুরেও নগদ টাকা মিলছে না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, ছয়-সাতটি এটিএম বুথ ঘুরে যা নগদ মিলছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রাহকদের নির্বিঘ্নে অর্থ লেনদেনের সুযোগ দিতে দেশের ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা সরবরাহের নির্দেশ ঈদের আগেই দেওয়া হয়েছে। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা মজুদ যাতে থাকে, তার সব ধরনের ব্যবস্থা ঈদের আগেই করে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ না মানলে কঠোর হবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তিনি বলেন, ছুটিতে যেসব ব্যাংক তাদের বুথগুলোয় পর্যাপ্ত টাকা মজুদ রাখেনি এবং টাকা শেষের পর সঙ্গে সঙ্গে রিফিলের ব্যবস্থা করছে নাএমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এটিএম বুথে গ্রাহকদের হয়রানি কোনোভাবেই মেনে নেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, সারা দেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে সাত হাজার ১২টি। এটিএম বুথে নিয়মিত টাকা জমা করতে হয়। ঈদের সময় সিআরএমগুলোতে এটিএমের মতো টাকা জমা করতে হয়। কারণ এই সময় সবাই টাকা উত্তোলন করেন। ব্যাংকগুলো দুই পদ্ধতিতে এটিএম বুথে টাকা জমা করে। শাখার নিকটবর্তী এটিএম বুথে শাখার কর্মকর্তারা টাকা জমা করে থাকেন। আর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখার দূরে অবস্থিত এটিএম বুথগুলোয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা জমা করা হয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ