শেয়ার নিয়ে বিদেশি ঠিকাদারদের বিরোধে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রথম দফা বন্ধ হয়। ওই বছরের ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর ধীরগতিতে আবার কয়েক মাস কাজ চলে। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে আবারও প্রকল্পটির নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পে কোনো নির্মাণ শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়নি।
দীর্ঘ সময় কাজ বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে নির্মাণসামগ্রী
জহিরুল ইসলাম

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর মগবাজার থেকে মালিবাগ পর্যন্ত রেললাইনের ওপর প্রকল্পটির সারি সারি নির্মীয়মাণ পিলার আর নিচে দুই পাশে অযত্নে পড়ে আছে নির্মাণকাজের বিভিন্ন সমাগ্রী। নির্মাণ শ্রমিকদের কোনো অংশেই কাজ করতে দেখা যায়নি।
আশপাশের এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, প্রকল্পটির কাঠামো নির্মাণে একসময় শত শত শ্রমিক কাজ করলেও বর্তমানে কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
মগবাজারে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি ‘স্টকইয়ার্ড’ (নির্মাণকাজ পরিচালনার স্থান) শূন্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নিরাপত্তাকর্মী কিংবা নির্মাণ শ্রমিক—কেউ নেই। তবে হাতিরঝিল অংশে একজন নিরাপত্তাকর্মীকে পাহারা দিতে দেখা গেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক।
নির্মাণকাজ পরিচালনার জন্য কাওলা, মগবাজার, কমলাপুরের টিটিপাড়া ও কমলাপুর রেলস্টেশনের কাছে ওয়ার্ক স্টেশন (স্টকইয়ার্ড) রয়েছে। সেখানে মালপত্র স্তূপ করে রাখা হয়েছে। তবে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের কাজ। মালিবাগ থেকে বাসাবো হয়ে কমলাপুরের দিকে শুরু হওয়া কাজও বন্ধ রয়েছে। ফলে সড়কের মাঝখান দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) বড় এই প্রকল্পে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ডের একটি এবং চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগসহ নির্মাণকাজের অংশীদার। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো—ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কম্পানি লিমিটেড, শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এফডিইই কম্পানি লিমিটেড নামে কম্পানি গঠন করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট। কম্পানির অংশীদার তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ ছিল। বর্তমানে আইনি জটিলতা শেষ হওয়ায় সেটি পরিবর্তন হয়েছে।
এই প্রকল্পের মূল নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। চুক্তি অনুসারে, মূল কাঠামো নির্মাণ ব্যয়ের ৭৩ শতাংশ জোগান দেওয়ার কথা ছিল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের, আর বাকি ২৭ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ সরকারের, যা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) নামে পরিচিত।
প্রকল্পটি ২০০৯ সালে নেওয়া হলেও নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি। ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ উদ্বোধন করা হয়। আর ২০২৪ সালের ২০ মার্চ বিএফডিসি গেটসংলগ্ন নামার র্যাম্প যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
জটিলতার শুরু সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর হাত ধরে
সূত্র জানায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালে। ২০০৯ সালে এসে হয় চুক্তি। সেই চুক্তিতে প্রভাব খাটান তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন (প্রয়াত)। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি নিজ প্রতিষ্ঠান সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে যোগ্যতা না থাকলেও ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কম্পানিকে বেশির ভাগ শেয়ার পাইয়ে দেন।
এরপর এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এফডিইই কম্পানি লিমিটেড গঠন করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট। কম্পানির অংশীদার তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছিল যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। আর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহক প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেলের স্ট্রাকচার নির্মাণের কাজ করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কম্পানি ও দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করে জাইকা। ফলে অর্থনৈতিক কোনো সমস্যা হয়নি। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগে সক্ষমতা না থাকলেও তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন সাঁকো ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ পাইয়ে দেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ৫১ শতাংশ শেয়ার চলমান ছিল। অথচ বিনিয়োগ সক্ষমতার অজুহাতে দেশীয় কোনো কম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়নি। ফলে ১০ বছর ধরে প্রকল্পটির কাজের কোনা অগ্রগতি না হওয়ায় সরকারি জমি অব্যবহৃত থাকে।
এমন অবস্থায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত যখন কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না, তখন প্রকল্পটির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চায়না এক্সিম ব্যাংক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার (আইসিবিসি) সঙ্গে ঋণচুক্তি করে। প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তিতে এফডিইইর অধীনে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের শেয়ারের অনুপাতে নির্দিষ্ট হারে বছরে দুবার সুদ পরিশোধ করার শর্ত দেওয়া হয়।
এফডিইই সূত্রে জানা গেছে, চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান সময়মতো সুদ পরিশোধ করলেও সর্বাধিক শেয়ারের মালিক ইতালিয়ান-থাই তা করতে পারেনি। এ অবস্থায় চীনা দুটি প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনে নিতে চাইলে ইতালিয়ান-থাই কম্পানি রাজি হয়নি।
চুক্তি অনুযায়ী সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে অন্য কম্পানির কাছে শেয়ার ট্রান্সফার করা যাবে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার পরিবর্তনের বিষয় জানালে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কম্পানি উচ্চ আদালতে শেয়ার পরিবর্তন না করার আবেদন করলে আদালত স্থিতাবস্থা দেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে গেলে সেখানেও শেয়ার পরিবর্তন না করতে স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়। যদিও কোনো আদালত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেননি। কিন্তু অর্থের জোগান না হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পরে কম্পানি সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারে সালিস নোটিশ পাঠায়। তবে গত বছর ৫ আগস্টের পর সব রায় এবং আদেশে স্থিতাবস্থা তুলে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে আরবিট্রেশন কোর্টে মামলায়ও হেরে যায় কম্পানিটি। এ অবস্থায় আর কোনো আইনি বাধা না থাকায় শেয়ার পরিবর্তন করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ইতালিয়ান-থাই কম্পানি ১ শতাংশ, সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ১৯ শতাংশ এবং চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৮০ শতাংশ শেয়ারের মালিক।
সূত্র জানায়, বর্তমানে সমস্যার সমাধান হলেও আগের ব্যাংক এখন অর্থ দিতে রাজি না হওয়ায় শ্যানডং অর্থের ব্যবস্থা করছে। ফলে দ্রুতই নির্মাণকাজ শুরু হতে পারে। চীনা কম্পানিটি সমপ্রতি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছে।
প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব ধরনের আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন দ্রুতই কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। তবে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও সেটি সম্ভব হচ্ছে না।’
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স