কানাডার জাতীয় নির্বাচনে জয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর বিরোধী দলটিকে গতকাল মঙ্গলবার জয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জয় পেল মধ্য-বামপন্থী দলটি। নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে হারানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন কার্নি।
কানাডার নির্বাচনে ট্রাম্পবিরোধী মার্ক কার্নির দল জয়ী
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

গতকাল রাত পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি ১৫৫টি আসনে জিতেছে এবং ১৩টিতে এগিয়ে আছে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পইলিভরের কনজারভেটিভ পার্টি ১৩৩টি আসন পেয়েছে এবং ১১টিতে এগিয়ে আছে। এ ছাড়া ব্লক কুইবেকোইস ২১টি আসনে জয়ী এবং দুটিতে এগিয়ে, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি পাঁচটিতে জয়ী এবং দুটিতে এগিয়ে আর গ্রিন পার্টি অব কানাডা একটিতে জয়ী এবং একটিতে এগিয়ে আছে।
কার্নির দল একক সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে, নাকি জোট সরকার গঠন করতে হবে, তা পূর্ণ ফলাফল প্রকাশের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নির্বাচনে জয়ের পর দেওয়া ভাষণে সতর্ক করে কার্নি ট্রাম্পের হুমকির মুখে কানাডীয়দের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা আমাদের জমি, সম্পদ, পানি ও দেশ চায়।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য বানানোর হুমকি ছিল কার্নির প্রচারণার মূল বিষয়। মুক্ত বাণিজ্যের জন্য নতুন হুমকি যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবেলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে কার্নি বলেন, ‘আমরা আমেরিকার বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি। কিন্তু এই শিক্ষা আমাদের কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
তবে কার্নির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির পইলিভর নিজের সংসদীয় আসন অন্টারিওর কার্লেটনে লিবারেল পার্টির ব্রুস ফ্যানজয়ের কাছে হেরে গেছেন। তা সত্ত্বেও দলটির কার্যত নেতা থাকছেন তিনি। ফলে তিনি পার্লামেন্টের গ্যালারিতে বসে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারলেও বিতর্ক বা ভোটে অংশ নিতে পারবেন না।
নির্বাচনে পরাজয়ের পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লিবারেলদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা জানিয়ে পইলিভর বলেন, ‘আমরা সব সময় কানাডাকে অগ্রাধিকার দেব। কানাডার স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি একটি নতুন বাণিজ্যচুক্তি করার লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সব দলের সঙ্গে কাজ করবে কনজারভেটিভ পার্টি।
নির্বাচনে মার্ক কার্নির দলের জয়ের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতারা অভিনন্দন জানিয়েছেন। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, সিবিসি নিউজ
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স