জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া বাবা জসিম উদ্দিনের কবরের পাশেই দাফন করা হয়েছে ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করা লামিয়াকে। পটুয়াখালীর দুমকীতে পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে গতকাল রবিবার তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে লামিয়ার করা মামলায় তার সহপাঠী সিফাত মুন্সি এবং মেহেরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাকিব মুন্সিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় তারা। স্বীকারোক্তিতে লামিয়ার আরেক সহপাঠী ইমরান মুন্সির নাম এসেছে।
লামিয়ার মা-বাবা ঢাকায় থাকতেন। বাবার মৃত্যুর পর মা তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। লামিয়া থাকতেন তার নানিবাড়ি দুমকীর আলগী গ্রামে। আসামিরা সবাই আলগী গ্রামের বাসিন্দা।
তাদের সঙ্গে লামিয়ার পরিচয় ছিল।
লামিয়ার সহপাঠীদের বরাত দিয়ে একাধিক শিক্ষক বলেন, ঘটনার দিন লামিয়া তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে দাদাবাড়ি নলদোয়ানি গ্রাম থেকে নানাবাড়ি আলগী গ্রামে যাচ্ছিলেন। তখন আসামিরা তাকে জোর করে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। তৃতীয় কেউ সেই ঘটনার ভিডিও করে।
ধারণা করা হচ্ছে সেখানে ইমরান ছিল। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলেই রহস্য বেরিয়ে আসবে।
সরকারি জনতা কলেজের উপাধ্যক্ষ আ. লতিফ হাওলাদার, প্রভাষক শহীদুল ইসলাম ও প্রভাষক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কালের কণ্ঠের কথা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, লামিয়া আর সিফাত মুন্সি সহপাঠী। তারা দুজনেই এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
সিফাত গ্রেপ্তারের পর থেকেই অপর সহপাঠী ইমরান কলেজে আসছে না।
দুমকীর সাংবাদিকরা ইমরানের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাননি। স্থানীয়রা জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই ইমরান এলাকা ছাড়া। তার পরিবার জানায়, ইমরান আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গেছে।
লামিয়ার দাদা আ. সোবাহান নাতির কবর খুঁড়েছেন। পাশেই তাঁর ছেলে জসিমের কবরও তিনি খুঁড়েছিলেন। দিনমজুর সোবাহান বলেন, ‘সোমবার ডিসি দুই লাখ টাকা দেবেন। সেই টাকা গ্রহণের জন্য রবিবার নাতির বাড়ি ফেরার কথা। নাতি সেই কথা রেখেছে। সে আসছে ঠিকই, তবে কফিনবন্দি হয়ে।’
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ কালের কণ্ঠকে জানান, দুই আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিতে দলবদ্ধ ধর্ষণের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। জবানবন্দিতে আরেকজনের নাম এসেছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।