ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র নিহত

  • আরো ৯ জেলায় ৩ খুন ৭ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র নিহত

রাজধানী ঢাকার প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শনিবার শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে এক ছাত্র নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ব্যবসায়ীকে এবং হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কুমিল্লায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার পর থানায় গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন স্বামী। আরো ছয় জেলায় যুবদল নেতাসহ সাতজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গত শুক্রবার দিবাগত রাতে এবং গতকাল শনিবার এসব ঘটনা ঘটে।

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর নাম জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৩)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহে। পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বনানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

এ সময় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ছুরিকাঘাতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজ নিহত হন।

বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, নিহত শিক্ষার্থী পারভেজের লাশ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে।

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের ফেসবুক পোস্টে নিহতের একটি ছবি প্রকাশ করে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায় পারভেজ হত্যার ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

রাজধানীর ডেমরার পাইটি গ্রামে গতকাল বিকেলে মিনা আক্তার (১৭) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সে পাইটি গ্রামের বাসিন্দা কাঁচামাল ব্যবসায়ী আল-আমিন মোল্লাহর মেয়ে। সে এ বছর স্থানীয় ই-হক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

শাহজাদপুর : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পৌর সদর রামবাড়ী মহল্লার বিপুল হোসেন (৪২) নামের এক ব্যবসায়ীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে।

হবিগঞ্জ : চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ডুলনা গ্রামে গতকাল দুপুরে আব্দুল হাই (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

তিনি ঘটনাস্থলের পাশের জারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সামাদ উল্যা বাচ্চু (৪০) নামের এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গতকাল সকালে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটি শৈলজুড়া (গৈয়বপুর) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সামাদ উল্যা গৈয়বপুর গ্রামের প্রয়াত ইউসুফ উল্যার ছেলে এবং রাজিউড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি।

বড়াইগ্রাম : নাটোরের বড়াইগ্রামে নিজ শয়নকক্ষ থেকে পরিবহন শ্রমিক ও যুবদল নেতা আয়নাল হকের (৪৫) অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া কালিরঘুন এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। আয়নাল নটাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।

কুমিল্লা : বাজার থেকে কিনে আনা পুঁটি মাছ কাটা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর স্বামী নিজেই থানায় গিয়ে স্ত্রী হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগরের উত্তর ত্রিশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মৌসুমী আক্তার (২৯) দেবীদ্বার উপজেলার নবীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। অভিযুক্ত বাছির উদ্দিন (৩৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে।

গোয়ালন্দ : কোয়েল পাখির ফার্মের দুর্গন্ধ ছড়ানোকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সঙ্গে ছেলের মারামারি হয়। এই মারামারি ঠেকাতে গিয়ে আক্কাস আলী শেখ নামের এক বৃদ্ধ বাবার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর মরদেহটি রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ পৌরসভার কুমড়াকান্দি মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।

ভোলা : ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় আবুবক্করপুর ইউনিয়নে দুই লাখ টাকা চাঁদার জন্য মো. মাসুদ (৩৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মো. আল আমিনের (৪৫) বিরদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই তাঁকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ভোলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল এবং তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনের জেলার নেতারা। ঘটনার ১৩ দিন পর মামলার প্রধান আসামি আল আমিনকে ঢাকার মতিঝিল থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নরসিংদী : নরসিংদীতে নিজ ঘর থেকে গলায় ওড়না  পেঁচানো অবস্থায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর পৃথক স্থান থেকে স্বামীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মাদকাসক্ত স্বামী। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার বালুসাইর গ্রাম থেকে স্ত্রীর ও গতকাল দুপুরে শেখেরচর বাবুরহাটের একটি তিনতলা ভবনের কার্নিশ থেকে স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত দম্পতি সদর উপজেলার মহিষাশূরা ইউনিয়নের বালুসাইর গ্রামের তিন সন্তানের জনক রাজু মিয়া (৪২) ও তাঁর স্ত্রী মানছুরা বেগম (৩৮)।

ময়মনসিংহ : প্রায় এক বছর ধরে এক সন্ত্রাসী এলাকার কমপক্ষে ১০ জনকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। প্রাণ না যাওয়ায় আক্ষেপ করে নিজের ফেসবুক আইডিতে একাধিক পোস্টসহ লাইভে এসে নানা কথা বলার পাশাপাশি আরো অনেককেই হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ হত্যার হুমকি দিয়ে ১৮ দিন পর গত শুক্রবার বিকেলে এক কলেজছাত্র হত্যা হওয়ার পর নিজের ফেসবুক আইডিতে হত্যা করার ইঙ্গিত দিয়ে পোস্ট দেন ওই সন্ত্রাসী। তাঁর নামে থানায় হত্যাচেষ্টার সাতটি মামলা হলেও পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নিহত ওই কলেজছাত্র ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের ধুরুয়া গ্রামের মো. কাশেম আলী ফকিরের ছেলে মারফত আলী ফকির (২২)।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন

শেয়ার
বিজিবি মোতায়েন
শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সচিবালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে বের করে দেয়। গতকাল সকালে ফটকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। ছবি : শেখ হাসান
মন্তব্য

পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।

অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।

এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বদলের পরপরই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন অস্থিরতা দেখা দেয় এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। আগের সরকারের সময় নানা সুবিধা পাওয়া অনেক ঠিকাদার প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ফলে নতুন সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে থাকে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।

এসব প্রকল্পের জন্য সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছর শেষে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ পুরো বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশের মতো অর্থ খরচই হয়নি।

অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।

অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে জুন মাসে খরচ হয়েছিল ৫৮ হাজার ৭৪২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা ছিল বরাদ্দের ২৩.০৯ শতাংশ। অর্থাৎ মাসিক হিসাবেও ব্যয় কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।

আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।

এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতাএই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

 

 

 

মন্তব্য
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির

কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
শফিকুর রহমান

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।

গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্যঅতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।

নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে, কোনো   মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না।

স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেইজনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ কিসের রাজনীতি যে জনগণকে সাফারিংয়ের মধ্যে রেখে দেব?

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে। আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।

আমরা কাউকে কোনো মাস্টারমাইন্ড মানি না এবং নিজেদেরও মাস্টারমাইন্ড দাবি করি না। যদি আমরা নিজেদের মাস্টারমাইন্ড বলি তবে বাকি সবাইকে আন্ডারমাইন্ড করা হবে।

তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিইচারিত্রিক সম্পদের অভাব। দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেনআমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেনআমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি। তিনি দুঃখ করে বলেন, এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।

মন্তব্য

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।

গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।

আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। অনেকের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আহত হয়েছে শতাধিক। তিনি আরো লেখেন, নিহতের তালিকায় থাকা মেহরিন চৌধুরী অনেক শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেছেন।
শিশুদের রক্ষায় তিনি ধোঁয়া ও আগুনের স্ফুলিঙ্গের মধ্যে চলে যান। তাঁর এই সাহসিকতা ভোলার মতো নয়। বাংলাদেশের প্রতি সংহতি জানিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম লেখেন, আমি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখে সমবেদনা জানাব। এই দুঃখের মুহূর্তে আমরা আপনার পাশে আছি।
আমরা প্রতিটি হারানো প্রাণের জন্য শোকাহত এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই। উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ