রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে জরিপ চালানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও আগ্রহী জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারবে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সঙ্গে হওয়া সংলাপের শুরুতে এ কথা জানান তিনি। বৈঠকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে দলটির ১৩ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ গত ২০ মার্চ শুরু হয়। ঈদের ছুটির কারণে সংলাপ বন্ধ থাকলেও গতকাল সোমবার থেকে আবারও শুরু হয়েছে। ওই সংলাপে অংশ নিয়ে এবি পার্টি সংস্কার প্রশ্নে তাদের দীর্ঘ বক্তব্য তুলে ধরেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশন উত্থাপিত ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১০৮টির সঙ্গে একমত হয়েছে এবি পার্টি। ২৬টি প্রস্তাবে তারা আংশিক একমত আর ৩২টি প্রস্তাবে তাদের দ্বিমত রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে ২৯টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আশা করি, মে মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ রাজনৈতিক দল ও জোটগতভাবে প্রথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে।
এরপর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জুলাই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করাই কমিশনের লক্ষ্য।’
আলোচনায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘যেসব বিষয়ে দ্বিমত এবং আংশিকভাবে একমত, সেসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। জাতীয় সংকট নিরসনে আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরেও পর্দার অন্তরালে আলোচনা করতে হবে। অনেক বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হইনি, কিন্তু ভবিষ্যতে সংলাপের মাধ্যমে একমত হব।
অথবা আমাদের মতামতের ভিত্তিতে আপনাদের মতামত প্রত্যাহার করে, একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছব।’
তিনি আরো বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে একমতে আসার মতো কঠিন কাজ কিছু হতে পারে না। তার পরও আমরা আশাবাদী জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সফল হবে, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে।’
উল্লেখ্য, সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠিত পাঁচটি কমিশনের ১৬৬ সুপারিশে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চায় কমিশন। এর আগে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, লেবার পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে আলোচনা করেছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে একমত হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে সই হবে জুলাই সনদ।