শুক্রবার সকাল ১০টা। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের চতুর্থ তলার ‘এ’ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ রোগী ঘুমাচ্ছে। জেগে থাকা কয়েকজন ছটফট করছে। কেউ কাঁদছে।
হাসপাতালে জুলাই যোদ্ধারা
‘এবারের ঈদে আনন্দ, নতুন কাপড় কিছুই নাই’
শিমুল মাহমুদ

তাদের একজন মোহাম্মদ হাসান। গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলির আঘাতে এই কিশোরের ডান পায়ের ছয় ইঞ্চি পরিমাণ হাড় ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। এখন চলছে কৃত্রিম উপায়ে হাড় জোড়া দেওয়ার কাজ।
হাসানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর মা হাসি বেগম জানান, কয়েক দিন ধরে ছেলের গুলির ক্ষতে ব্যথা বেড়েছে। কিন্তু ব্যথা কমার ওষুধ বন্ধ থাকায় কাঁদছে। তিনি বলেন, ব্যথার ওষুধ খেতে খেতে এখন কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই ডাক্তার ব্যথার ওষুধ বন্ধ রেখেছেন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালের এই ওয়ার্ডের ৪২ নম্বর শয্যায় ভর্তি হাসান রাজধানীর ফরিদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। মা-বাবার সঙ্গে জুরাইন এলাকায় থাকে।
পঙ্গু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত এমন ৯৫ জন এখন এই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে ‘এ’ ওয়ার্ডে ৪৭ জন এবং ‘বি’ ওয়ার্ডে ৪৮ জন। সবাই এবার ঈদের দিন কাটাবে হাসপাতালে।
‘এ’ ওয়ার্ডের ২৮ নম্বর শয্যায় ভর্তি মনির খান প্রথম পরিবার ছাড়া ঈদ করছেন। তিনি বলেন, ‘২০ বছর বয়সে কখনো পরিবার ছাড়া ঈদ করিনি। ভাগ্যে ছিল, এবার হাসপাতালে ঈদ করতে হবে, কিছু করার নাই। কিন্তু কষ্ট লাগে, এবারের ঈদে পরিবারের কারো আনন্দ নাই। নতুন কাপড় নাই।’
ঈদের ছুটিতে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় একটি বিশেষ টিম করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের দিন বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান। তিনি বলেন, ‘ঈদে বাড়ি যাবে—এমন আবদার নিয়ে কেউ ছুটি চাইলে আমরা দেব। কিন্তু কেউ আসেনি।’
আহতদের অঙ্গ বাঁচানোর অক্লান্ত চেষ্টা : পঙ্গু হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. বদিউজ্জামান জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়ে অঙ্গহানি ঘটেছে—এমন রোগী ২১ জন। ১৭ জন পা হারিয়েছেন, চারজন হাত। যাঁদের অঙ্গহানি হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকের জীবন সংকটাপন্ন ছিল। জীবন রক্ষা করতে গিয়ে অঙ্গহানি করতে হয়েছে।
ডা. মো. বদিউজ্জামান বলেন, হাড় ভাঙার তীব্রতা, স্থান ও রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর জোড়া লাগার সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে। যদি চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেও জোড়া না লাগে, তাহলে তাকে ডিলেইড ইউনিয়ন বা বিলম্বিত জোড়া বলা যায়। আর ৯ থেকে ১২ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও জোড়া না লাগলে তাকে নন-ইউনিয়ন বা জোড়া না লাগার সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। বিলম্বে হাড় জোড়া লাগা একটি বিশেষ সমস্যা। দীর্ঘদিন এসব সমস্যা থাকলে জোড়া বা জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায় এবং মাংসপেশি শুকিয়ে যায়, সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সঙ্গে আরো কিছু সমস্যার কারণে অনেক রোগীর ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে দেরি হতে পারে।
চোখ হারানোর কষ্ট অনেকটা বড় : জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের স্পেশালাইজড ডেডিকেটেড ইউনিটে ভর্তি ৬১ জনের সবাই দৃষ্টি হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জনের চোখে সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হওয়ায় এবার ঈদ করবেন হাসপাতালে। অন্যরা ঈদের এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন।
গতকাল দুুপুরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে গেলে চোখে পড়ে, সূর্যের ছবি আঁকা, পাশে লেখা—‘পৃথিবীটা অনেক সুন্দর, কিন্তু আফসোস, আমাদের অনেকের এই সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হয়তো হবে না।’
পিবি-২৬ নম্বর শয্যায় শুয়ে থাকা আহত মিজানুর রহমানের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর। পেশায় দোকানদার। থাকতেন রাজধানীর আশুলিয়া এলাকায়। গত ৫ আগস্ট পুলিশের ছররা গুলিতে তাঁর এক চোখ দৃষ্টিহীন। মিজান জানান, এবার ঈদে তাঁর পরিবারের কারো নতুন কাপড় কেনা হয়নি। তাই নিজেও কোনো কাপড় কেনেননি।
এই ওয়ার্ডের আরেক শয্যায় ভর্তি হাসিবের বাড়ি নেত্রকোনার মদন এলাকায়। তিনি জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে কাল গ্রামে যাচ্ছেন। কিন্তু এতে তাঁর কোনো আনন্দ নেই। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন আমার চারপাশে যারা আছে, সবাই দৃষ্টিহীন। এখানে সবার দুঃখটা মিলে যায়। তাই হাসিখুশিতে দিন কেটে যায়। গ্রামে গেলে মানুষ দৃষ্টিহীনতার বিষয়টি নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ করে। তাই এখন আর গ্রামে যেতে ইচ্ছা করে না।’
চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে গত ৫ আগস্ট থেকে ভর্তি হিল্লোল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজকে আমরা এখানে পরিবার ছাড়া ঈদ করছি। রমজানে এক দিনের জন্যও কেউ দেখতে আসেনি। এখানে কারো পরিবারে ঈদ নেই, নতুন কাপড় নেই, হাসি নেই।’
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যাঁরা হাত-পা হারিয়েছেন, তাঁরা তবু সবকিছু দেখতে পান; কিন্তু আমরা কিছুই দেখি না। এই কষ্ট কাউকে বোঝানো যাবে না।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৮৬ জন। বেশির ভাগই ছররা গুলিতে আহত। এর মধ্যে উভয় চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৩২ জন। এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন ৪৯৩ জন। এ ছাড়া গুরুতর দৃষ্টিস্বল্পতা দেখা দিয়েছে ৬৬ জনের। গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টি হারানো আহতদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষার্থী। অন্যদের মধ্যে শ্রমিক, গাড়িচালক ও চাকরিজীবী দুজন করে ছয়জন। একজন শিক্ষক। অন্যদের পেশাগত পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন


পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন
এম আর মাসফি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।
অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।
আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।
এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।
এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতা—এই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।
গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য—অতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।
স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেই—জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়—রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে।’ আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।
তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিই—চারিত্রিক সম্পদের অভাব।’ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেন—আমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেন—আমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি।’ তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।’

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।
গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।