শিল্পী, সংগীতজ্ঞ ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানা অসুখে ভুগছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পুত্রবধূ লাইসা আহমদ লিসা।
সন্জীদা খাতুন
এক মহীয়সীর চিরবিদায়
- আজ দুপুরে ছায়ানটে সর্বজনের শ্রদ্ধা নিবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সন্জীদা খাতুনকে ধানমণ্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে নেওয়া হবে। সেখানে তাঁর প্রতি সর্বজনের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এরপর দুপুর আড়াইটায় তাঁর কফিন নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সেখানে তাঁকে শেষবিদায় জানাবে সর্বস্তরের মানুষ। তবে এর পরের কার্যক্রম নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা কালের কণ্ঠকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতাসহ নানা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন সন্জীদা খাতুন। ছয় মাস ধরে তাঁর নিয়মিত ডায়ালিসিস করানো হচ্ছিল। এরই মধ্যে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। সর্বশেষ রক্তচাপ নেমে তিনি কোমায় চলে যান।
সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। তাঁর পিতা ছিলেন বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন। তিনি পড়ালেখা করেছেন কামরুন্নেসা স্কুল ও ইডেন কলেজে। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক এই গুণী শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী থেকে ১৯৫৫ সালে প্রথম বিভাগে স্নাতকোত্তর এবং পরে সেখান থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন সন্জীদা খাতুন। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে আত্মনিবেদিত সন্জীদা খাতুন ভাষা আন্দোলন, সাংস্কৃতিক স্বাধিকার আন্দোলন, শত বাধার মুখে রবীন্দ্র শতবর্ষ উদযাপন, রমনার বটমূলে বর্ষবরণ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বাঙালির সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করে বাঙালিত্বের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপনে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
দেশ-বিদেশে সন্জীদা খাতুনের পরিচিতি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও গবেষক হিসেবে। সন্জীদা খাতুন প্রথম গান শেখা শুরু করেন সোহরাব হোসেনের কাছে। তাঁর কাছে তিনি দীক্ষা নেন নজরুলসংগীত, আধুনিক বাংলা গান ও পল্লীগীতির। রবীন্দ্রসংগীতের তালিম নিয়েছেন হুসনে বানু খানম, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, আবদুল আহাদ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেনের কাছে। শিল্পী কামরুল হাসানের নেতৃত্বে তিনি ব্রতচারী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
তাঁর ঐকান্তিক সহযোগিতায় গড়ে ওঠে ছায়ানট ও রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের মতো সংগঠন। তাঁর হাত ধরেই প্রতিষ্ঠা ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের। বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার অগ্রণী প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের সভাপতি ছিলেন তিনি। দায়িত্ব পালন করেছেন উদীচীর উপদেষ্টা হিসেবেও। গানের মানুষ সন্জীদা খাতুন গবেষণা, সাহিত্য সমালোচনা, সমাজ-সংস্কৃতি, আত্মজীবনী মিলিয়ে ৪০টির বেশি বই লিখে গেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ তাঁর আকাশ ভরা কোলে, স্বাধীনতার অভিযাত্রা, অতীত দিনের স্মৃতি, কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, রবীন্দ্রসংগীতের ভাবসম্পদ, তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে, রবীন্দ্রনাথ : বিবিধ সন্ধান, রবীন্দ্রনাথের হাতে হাত রেখে, ধ্বনি থেকে কবিতা, সংস্কৃতির বৃক্ষছায়ায়, সংস্কৃতিকথা সাহিত্যকথা, বাংলাদেশের সংস্কৃতির চড়াই-উতরাই এবং শিশু-কিশোরদের জন্য কাজী মোতাহার হোসেন, জননী জন্মভূমি ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক ছাড়াও সন্জীদা খাতুন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রবীন্দ্র পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি পরিচালিত সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভূষিত করেছে পদ্মশ্রী সম্মাননায়। ১৯৮৮ সালে কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার, দেশিকোত্তম পুরস্কার।
সন্জীদা খাতুনের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘সন্জীদা খাতুন আমৃত্যু বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংগীত ও সংস্কৃতি চর্চায় নিবেদিতপ্রাণ ও লড়াকু যোদ্ধা ছিলেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং সাংস্কৃতিক সংগ্রামের সঙ্গে তাঁর নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। রবীন্দ্র-নজরুল অধ্যয়ন এবং দেশজ সংস্কৃতির অনুশীলন ও বিকাশে তিনি কিংবদন্তির ভূমিকা পালন করে গেছেন।’
সন্জীদা খাতুনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ছায়ানট, উদীচীসহ বিভিন্ন সাহিত্য-সংস্কৃতি সংগঠন।
সম্পর্কিত খবর

এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে দুজনসহ তিন জেলায় চার খুন
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লায় ঘুমন্ত নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। দিনাজপুরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান ও আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি ইফতেখার হাসান বলেন, চাঁদ উদ্যান সড়কের লাউতলায় আল আমিন (৩০) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এর এক ঘণ্টা পর আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে ইব্রাহিম নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদাবর থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সজীব ও রুবেল নামের দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
কুমিল্লা : দেবীদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঝরনা বেগমের স্বামী আব্দুল করিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল। স্বামীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাঁকে প্রায়ই ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। আগের রাতে ঝরনা তাঁকে আটটি ঘুমের বড়ি খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন, ‘ওই নারীর মাথায় তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে, যেগুলো ইলেকট্রিক প্লায়ার্স বা স্ক্রু ড্রাইভারের আঘাত হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নানামুখী, আমরা তদন্ত করছি।’
দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৩ নম্বর ধামইর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার যুগীহারীখাড়িপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বড় ভাই মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পুরনো ভ্যান বিক্রি করে নতুন ভ্যান কেনেন আসাদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সেই ভ্যান চালাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি।
রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আগলা গ্রামে ঘাসের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. আবরার (৬) ওই এলাকার ডা. শওকত শরীফের ছেলে। ডা. শওকত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিশেষজ্ঞ।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কিশোরী হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি সুমন কাদেরী এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়, ১৯৮৬ এশিয়া কাপ দিয়ে। তখন পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এরপর সময় গড়িয়েছে, কালের বিবর্তনে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সব ফরম্যাটে জয়ও আছে।

জেতার জন্য ১৩৩ রান টি-টোয়েন্টিতে বড় লক্ষ্য নয়। তবে অলিখিত ফাইনালের চাপ, ব্যাটিংয়ের ফাঁকফোকর আর প্রেমাদাসার উইকেট বিবেচনায় এটা আবার আয়েশে পাড়ি দেওয়া দূরত্বেরও নয়।
মাস তিনেক আগে ঘটা করে তাঁকে টি-টোয়েন্টির সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম সফরে নীরবে নতুন দায়িত্বের সঙ্গে একাদশেও জায়গা হারিয়েছিলেন শেখ মেহেদী। তাই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটায় আর সবার চেয়ে তাঁর ওপর চাপ ছিল বেশি। যদিও মাঠে সে রকম কিছু মনে হয়নি। বরং মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন মেহেদী, যা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংও। এর মধ্যে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে করা ২ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন। নিজের কোটা পূর্ণ করেছেন ফিল্ডিং বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার পর। সে স্পেলেও জোড়া শিকার মেহেদীর। আর উইকেটগুলো যথাক্রমে কুশল পেরেরা, দীনেশ চান্ডিমাল, চারিথ আশালঙ্কা ও পাথুম নিশাঙ্কার—বকলমে যাঁরা শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাদ পড়া মুস্তাফিজুর রহমান গতকালও উজাড় করে দিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে নিখুঁত নিশানায় দুই ওভার করেছেন। পরের স্পেলে স্লোয়ার আর কাটারে ধন্দে রেখেছেন লঙ্কান ব্যাটারদের। তাতে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান গুনেছেন মুস্তাফিজ, সঙ্গে আঁটসাঁট বোলিংয়ের পুরস্কার হিসেবে একটি শিকার। এর মধ্যে শামীম হোসেনকে দিয়ে দুই ওভার বোলিং করিয়ে নিয়েছেন লিটন দাস। এই সিরিজে যেন অধিনায়ককে বিমুখ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শামীম! ১০ রানের বিনিময়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মুখে কামিন্ডু মেন্ডিসকে থামিয়েছেন তিনি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কাচটি দারুণ দক্ষতায় নিয়েছেন এক ম্যাচ বিরতির পর একাদশে ফেরা তানজিম হাসান। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়েছেন। তবে এক দিনে সবার তো আর সব হয় না। বাংলাদেশের বোলিং বিভাগে যেমন শরিফুল ইসলাম রান গুনেছেন ৫০! তাতে শ্রীলঙ্কার ইনিংসও শেষ দিকে দাসুন শানাকার ঝটকায় এক শ ছাড়িয়ে যায়। ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।
অবশ্য ম্যাচের নির্ঘণ্ট করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আশালঙ্কা একটা কথাই বারবার করেছেন, ‘মেহেদী দারুণ বোলিং করেছে।’ টি-টোয়েন্টির একাদশে প্রত্যাবর্তনের রোমাঞ্চকর গল্প লিখলেন এই অফস্পিনার অলরাউন্ডার।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক দিনে ৫৫ জনকে পুশ ইন
নিজস্ব প্রতিবেদক ও মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা

ভারত থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি সীমান্তপথে ৫৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৩৩ জন নারী এবং ১০টি শিশু।
গতকাল বুধবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এই পুশ ইনের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক।
এর আগে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ভারতীয় অংশে অবৈধভাবে অবস্থান করা সাত বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক আবু হানিফ মো. সিহানুক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিবি।সিলেট বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, নোয়াকোট, কালাইরাগ, তামাবিল ও শ্রীপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত দিয়ে চারটি গ্রুপে এসব বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়। পরে সীমান্ত এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের সবাইকে আটক করেন।
বিজিবি সূত্র জানায়, সিলেট জেলার কালাইরাগ সীমান্তে সাতটি পরিবারের ১৯ জনকে আটক করা হয়। শ্রীপুর সীমান্তের মোকামপুঞ্জি এলাকা দিয়ে পুশ ইন করা হয় ১৩ জনকে। তামাবিল বিওপির নলজুরি থেকে দুজনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নোয়াকোট বিওপি এলাকার ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা হয় ২১ জনকে।
মহেশপুর সীমান্তে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর : ঝিনাইদহের মহেশপুর বিজিবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশ আসার সময় বিএসএফ তাদের আটক করে। পরে মহেশপুর সীমান্তের বাগাডাঙ্গা বিওপিকে অবগত করে তারা। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের কাছ থেকে তাদের গ্রহণ করা হয়।

কুমিল্লায় ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত নারীকে, দিনাজপুরে ভ্যানচালককে হত্যা
- রাজশাহীতে শিশুর লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুমিল্লায় ঘুমন্ত নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। দিনাজপুরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। রাজশাহীর পুঠিয়ায় পাওয়া গেছে ছয় বছরের এক শিশুর লাশ। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :
কুমিল্লা : দেবীদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঝরনা বেগমের স্বামী আব্দুল করিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল। স্বামীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাঁকে প্রায়ই ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। আগের রাতে ঝরনা তাঁকে আটটি ঘুমের বড়ি খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন, ‘ওই নারীর মাথায় তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।
দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৩ নম্বর ধামইর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকালে রাস্তা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের যুগীহারীখাড়িপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বড় ভাই মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পুরনো ভ্যান বিক্রি করে নতুন ভ্যান কেনেন আসাদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সেই ভ্যান চালাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি।
রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আগলা গ্রামে ঘাসের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. আবরার (৬) ওই এলাকার ডা. শওকত শরীফের ছেলে। ডা. শওকত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কিশোরী হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি সুমন কাদেরী এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে দুই কিশোরী আবরারকে খেলতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আবরারকে ঘাসের ভেতরে পাওয়া যাবে বলে তারা জানায়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।