ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

১৬ বছরে ৭৪.৪০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে হাসিনা সরকার

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
১৬ বছরে ৭৪.৪০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে হাসিনা সরকার

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ গত ১৬ বছরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ৭৪.৪০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট লাখ ৯২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) এর মধ্যে ৩৯.৩১ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় চার লাখ ৭১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও মোট ঋণের পরিমাণ এবং পরিশোধের চাপ উভয়ই বেড়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৮.১৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৬০ কোটি টাকা, যা ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ছিল ২১ বিলিয়ন ডলার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঋণের একটি বড় অংশ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে, তবে অনেক প্রকল্প থেকে প্রত্যাশিত রাজস্ব আয় না আসায় ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। সহজ শর্তের ঋণের পরিমাণ কমে আসছে এবং কঠোর শর্তযুক্ত ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির জন্য আরো সংকট তৈরি করতে পারে।

ঋণ পরিশোধের ক্রমবর্ধমান চাপ : বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের খরচ গত কয়েক বছরে দ্রুত বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারকে ৬.০৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে।

আগের বছরের তুলনায় এটি ২৭ শতাংশ বেশি।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল ৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা) এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে পরিশোধিত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩.৬১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৩ হাজার ৩২০ কোটি টাকা)

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঋণ পরিশোধের ক্রমবর্ধমান ব্যয় সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যয়ের সুযোগ সংকুচিত করে দিচ্ছে। বিশেষ করে এই বাস্তবতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেট কমার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমছে, কারণ রাজস্ব বৃদ্ধির তুলনায় ঋণের বোঝা অনেক দ্রুত বাড়ছে। যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে সরকারকে নতুন ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করবে।

বড় প্রকল্প ও ঋণের বাস্তবতা : গত এক দশকে বাংলাদেশ বেশ কিছু বৃহত্ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র। তবে অনেক প্রকল্প থেকে প্রত্যাশিত রাজস্ব আয় আসেনি, ফলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তাফা কে মুজেরি কালের কণ্ঠকে বলেন, অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না।

ফলে এসব প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধে সরকারকে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতার কারণে সরকারকে তাদের ঋণও বহন করতে হচ্ছে, যা অর্থনীতির জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বিপজ্জনক হতে পারে।

সুদের হার ও পরিশোধের সময় কমছে : ইআরডির প্রতিবেদন অনুসারে বৈদেশিক ঋণের সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের গড় সুদের হার ছিল মাত্র ০.৯ শতাংশ, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৩ শতাংশে। অর্থাত্ মাত্র কয়েক বছরে সুদের হার প্রায় ২.৫ গুণ বেড়েছে।

একই সঙ্গে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের গড় সময়সীমা কমে গেছে। ২০১৬ সালে যেখানে পরিশোধের গড় সময় ছিল ১২.৩ বছর, সেখানে বর্তমানে এটি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮.৫ বছর। অর্থাত্ কম সময়ে বেশি ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা বাজেট ব্যবস্থাপনার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন যে আগামী কয়েক বছরে বেশ কিছু বড় প্রকল্পের ঋণের কিস্তি এবং সুদ পরিশোধ একসঙ্গে শুরু হবে। বিশেষ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল এবং মেট্রো রেলের মতো প্রকল্পগুলোর ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে আসছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ পড়তে পারে।

ভবিষ্যত্ করণীয় : বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঋণ ব্যবস্থাপনায় এখনই পরিবর্তন আনা না হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে মারাত্মক আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হতে হবে। নতুন ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হতে হবে এবং সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, করব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করতে হবে, কর ফাঁকি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং রপ্তানি আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সহজ শর্তের ঋণের দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে ঋণ পরিশোধের চাপ সহনীয় মাত্রায় থাকে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, সরকার যদি এখনই ঋণ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন না আনে, তাহলে আগামী কয়েক বছরে বাজেট ঘাটতি আরো বাড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হবে। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

 

 

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

শেয়ার
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাই সড়ক থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

    চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।

কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

ওই জমিতে সেচ দিতে গেলে রাজু মিয়ার লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে।

এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে খুলনায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যাময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্তব্য

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এরপর হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

 

মন্তব্য

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

এরপর তা খুঁজে বের করতে জরুরি তল্লাশি অভিযান চলছিল বলে জানান আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলোভ। কিন্তু পরে জানানো হয়, এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তারা বিমানের ফিউজলেজের সন্ধান পেয়েছে।

ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

এমআই-৮ হেলিকপ্টার বিমানটির ফিউজলেজ দেখতে পেয়েছে। এই হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াতসিয়া।

বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।

এটা হতে এটা হতে পারে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার একটি কারণ। সাইবেরিয়াভিত্তিক আঙ্গারা এয়ারলাইনস পরিচালিত বিমানটি চীনের সীমানা লাগোয়া আমুর অঞ্চলের তিন্দা শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এমন সময় এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।

তার মধ্যে পাঁচজন শিশু। তাদের সঙ্গে ছয়জন ক্রু সদস্যও ছিলেন। তিনি বলেন, বিমান অনুসন্ধানে সব প্রয়োজনীয় বাহিনী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়।

উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।

১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।

সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ