জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দিতে মন্ত্রণালয়ের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জবি শিক্ষার্থীরা।
গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়।
এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষার্থী-শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ইউজিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একটি ক্যাম্পাসের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পড়েছিল। আমি নিজ উদ্যোগে একনেক সভায় পাস করেছি। এটা এত বড় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাস প্রকল্প, যেটা আগে কখনো হয়নি।
এত বড় ক্যাম্পাস পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে জাহাঙ্গীরনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এটি একটি মেগাপ্রজেক্ট বলা যেতে পারে।’
সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের কাজ দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে সেনাবাহিনীকে দিয়ে ক্যাম্পাসের কাজ বাস্তবায়ন করানো হোক। এতে কোনো সমস্যা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি চায়, এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো আপত্তি নেই। বরং আমরা সহযোগিতা করব কিভাবে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যায়।’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেক দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। তাদের কথা শোনার জন্যই অসুস্থ শরীর নিয়ে এসেছি। তাদের প্রতি আমাদের আশা আছে।
’
তিন দিনের আলটিমেটাম থাকছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্র প্রতিনিধি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। তাই তিন দিনের আলটিমেটাম থাকছে না। আমি মনে করি, আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। সুতরাং আমরা আমাদের আলটিমেটাম থেকে সরে আসছি।’
তবে বৈঠক শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে উপাচার্য ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন আন্দোলনের সংগঠক এ কে এম রাকিব। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাত আছে। কিন্তু আজকের মিটিংয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া, পিডিকে বরখাস্ত করা এসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো হাত নেই। প্রশাসন এত দিন মিথ্যা বলেছে।’
পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৈঠক শেষে উপাচার্য ড. রেজাউল করিম জানান, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজে ও আগে সংঘটিত দুর্নীতির বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান পরিচালনা করবে। প্রকল্প পরিচালককে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তা ছাড়া সেনাবাহিনীকে কোন প্রক্রিয়ায় কাজ হস্তান্তর করা যায়, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
আগামী তিন মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।