ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭
সমাজবীক্ষণ

তালা ও চাবি কি একই চিজ!

  • জিয়াউদ্দিন সাইমুম
শেয়ার
তালা ও চাবি কি একই চিজ!

কেবল ঘরে ঢুকতেই চাবি লাগে? সম্পর্ক, মন, বন্ধুত্বসব কিছুতে ঢোকার জন্য একটা চাবির প্রয়োজন। চাবি ভুল হলে দরজা আটকায়। আর না খোলার যন্ত্রণাই জটিল করে তোলে আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া। বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন বলেই শক্তিমান কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর চাবি কবিতায় মানবমনের চিরন্তন অভিব্যক্তিটি ছুড়ে দিয়েছেন এভাবে : আমার কাছে এখনো পড়ে আছে তোমার প্রিয় হারিয়ে যাওয়া চাবি, কেমন করে তোরঙ্গ আজ খোলো?

দরজা বা দরকারি কিছু আবদ্ধ করে রাখতে আমরা যে যন্ত্রটির আশ্রয় নিই, সেটির প্রচলিত নাম তালা।

শব্দটি সংস্কৃত তলক থেকে এসেছে। তবে বহুতল বিল্ডিংয়ের প্রতিটি স্তরকেও আমরা তালা বলিযা আসলে তলাকানে তালা লাগা বললে আবার অন্য অর্থ বোঝায়। মধ্যযুগের কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর রচনায় পাই : দারুণ প্রহার তার উদরের জ্বালা।
ঘন শ্বাস বহে তার কানে লাগে তালা।

প্রধান অর্থেও চাবি শব্দটির ব্যবহার হতে পারেচাবিকবিতা, চাবিধারণা, চাবিব্যক্তিত্ব, চাবিশব্দ। যাই হোক, কলের পুতুল চাবি দিলেই নড়ে এবং ঘোরে। আবার আগের দিনের ঘড়িতে সময় বেঁধে চাবি দেওয়া হতো।

বিষয়টি বাংলার লোককবি ও বাউলেরা তাঁদের গানে        রূপকার্থে ব্যবহার করেছেন : একবার চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া, জনম ভইরা ঘুরতে আছে। আবার আমাদের সংসারজীবনে এক গোছা চাবির গুরুত্ব অনেক। চাবির গোছাটি যে নারীর আঁচলে বাঁধা থাকে তিনিই সংসারের কর্ত্রী বিবেচিত হন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় রয়েছে ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে? অথবা কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় রয়েছে তব মসজিদ-মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবি, মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবি! রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল তাঁদের কবিতায় তালার বদলে চাবি ব্যবহার করেছেন! কেউ কেউ মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের অনেক স্থানে আমরা যাকে তালা বলি সেটা চাবি নামে পরিচিত। তাই লেখা হয়েছে ভেঙে মোর ঘরের চাবি

আবার অনেকে মনে করেন, কবিতার ছন্দ রক্ষার স্বার্থে চাবি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণেই বলা হয়, বাংলা ভাষায় তালাচাবি মূলত একই জিনিস!

বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে প্রচলিত চাবি শব্দের মূল পর্তুগিজ ভাষার chave. পর্তুগিজ ভাষায় chave মানে চাবি। অর্থাৎ চাবি শব্দটি আমরা পর্তুগিজদের কাছ থেকে পেয়েছি। তবে পর্তুগিজ ভাষায় চাবির উচ্চারণ শাবি। সাড়ে চার শ বছর আগে উত্তর ভারতে চাবিকে বলা হতো কুঞ্জী আর বাংলায় বলা হতো কাঠি। তালাচাবিকে রাঢ়ে এখনো কেউ কেউ কুলুপকাঠি বলেন। কেউ কেউ চাবিকাঠিও বলেন। কুঞ্জী শব্দটি এককালে উর্দু ভাষায় চালু ছিল। যেমন—‘কিতাবোঁ কী কুঞ্জী তেরে হাথোঁ মে হৈ, অগর ইয়াদ করলেঁ তো ক্যা বাত হৈবইয়ের চাবি তোমার হাতেই রয়েছে। যদি মুখস্থই করে নিলে তাতে ক্ষতিটা কী?

চাবির সমতুল শব্দ ব্রাজিলিয়ান ও ইউরোপিয়ান পর্তুগিজে chave (শাবি); চেকে klíč (ক্লিৎস); ডেনিশে nøgle (নইলে); ডাচে sleutel (স্লইটল্); ইংরেজিতে key; ইউরোপিয়ান ও লাতিন আমেরিকান স্প্যানিশে llave (জাবে); ফিনিশে avain (আভাইন্); ফ্রেঞ্চে clé (ক্লী); জার্মানে Schlüssel (স্লুসার); গ্রিকে ক্লীভি; ইতালিয়ানে chiave (চিয়াভে); রুশে ক্লুচ; তুর্কিতে anahtar.

বাংলা শব্দ নিয়ে বিখ্যাত ইংরেজি অভিধান হবসন-জবসনে চাবি (chabee) শব্দটি রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, Chave বন্দর থেকে chabee নামটি এসেছে। এতে আরো বলা হয়, এই chabee শব্দটির বাংলা রূপ sabi আর তামিলে savi। এই চাবির কারণে আমরা যে প্রাচীন শব্দটি হারিয়েছি, সেটি হচ্ছে কুঁজি (সম্পদের সীমা নাই বুড়া গরু পুঁজি। রসনা কেবল কথা সিন্দুকের কুঁজিঅন্নদামঙ্গল, ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর)।

বিদ্যুতেও চাবি থাকে। তবে এখানে চাবির কেতাবি নাম সুইচ। অন্যভাবে বলা যায়, সুইচ হলো এমন একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র, যা কোনো বিদ্যুৎ বর্তনীতে লাগালে তা বর্তনীতে ইলেকট্রন তথা বিদ্যুত্প্রবাহ চালু বা বন্ধ করতে পারে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রতীক ও কোট অব আর্মসে প্রদর্শিত চাবির ছবি ভিন্ন ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। হলি সী (রোমের সি, পেট্রিন সি বা অ্যাপোস্টলিক সিও) তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এটি হলো ক্যাথলিক চার্চ ও ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদ। উপর থেকে দেখলে বোঝা যায়, হলি সী ভবনের নকশা দেখতে ঠিক চাবির মতো। বিশ্বে প্যালেস্টাইনিয়ান কী-ও বেশ আলোচিত। ১৯৪৮ সালে নাকবা থেকে বর্বর ইহুদিদের নির্যাতনে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের সম্মিলিত প্রতীকটিই প্যালেস্টাইনিয়ান কী হিসেবে পরিচিত। আর বিশ্বের সবচেয়ে ভারী চাবির রেকর্ড কাতারের। এটার ওজন ২.৭ টন। প্রস্থ তিন মিটার আর উচ্চতা ৭.৮ মিটার।

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম চাবির সন্ধান পাওয়া গেছে মিসরে। প্রায় চার হাজার বছর আগেকার সেই কাঠের তালাচাবির সিস্টেম ছিল ত্রুটিপূর্ণ। রোমানরা তাই ওয়ার্ডেড লক (খাঁজকাটা) উদ্ভাবন করে। সেই চাবিও তেমন সুবিধার ছিল না। অবশেষে, ১৮০০ শতকে আমেরিকান লিনাস ইয়েল এবং তাঁর ছেলে স্প্রিংচালিত পিন-টাম্বলার লক তৈরি করেন। ওটিই আমরা এখন ব্যবহার করছি। একটি ব্রিটিশ সংস্থা অনুমান করছে, একজন মানুষ সারা জীবনে গড়ে তিন হাজার ৬৮০ ঘণ্টা ব্যয় করে শুধু স্মার্টফোন বা চাবির মতো ছোটখাটো জিনিস খুঁজতে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ