ঢাকা, বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫
২২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১১ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫
২২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১১ সফর ১৪৪৭
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলা চিঠি

চার দিনে ৫২ জেলায় ২০৫টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
চার দিনে ৫২ জেলায় ২০৫টি সংখ্যালঘু  নির্যাতনের ঘটনা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অবসান ঘটাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশের সংখ্যালঘুরা। তাঁর উদ্দেশে দেওয়া খোলা চিঠিতে এই আহ্বান জানায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর চার দিনে দেশের ৫২টি জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে। এ সময় অন্তত ২০৫টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যে কারণে সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।

অবিলম্বে এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই খোলা চিঠিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরা হয়। সংগঠনের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।

খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে নবযুগের সূচনা হয়েছে।

তারই কাণ্ডারি হিসেবে আপনাকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানাই। জনতার এই বিজয় যখন চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছি, একটি বিশেষ গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে সহিংসতা ছড়িয়ে এই অর্জনকে কালিমালিপ্ত করার ষড়যন্ত্রে মেতেছে। এরই মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় হাজার হাজার হিন্দু পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব। অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক মহিলা নিগৃহীত হয়েছেন।
কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। অন্য সংখ্যালঘুরাও আক্রান্ত হয়েছে। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত আছে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই অবিলম্বে এই অবস্থার অবসান চাই।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, এ পর্যন্ত ৫২ জেলায় ২০৫টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা আমাদের সুরক্ষা চাই। কারণ আমাদের জীবন বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। এমন ঘটনা আমি আগে কখনো দেখিনি। আমরা রাত জেগে নিজের ঘর ও মন্দির পাহারা দিচ্ছি। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের কাছে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে শুধু পবিত্র কোরআন ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ না করার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ। তিনি বলেন, অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ না করার বিষয়টি আমাদের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বৈষম্যবিরোধী চেতনার বিরোধী। আমরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে রাষ্ট্রীয় সব অনুষ্ঠানে প্রধান প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হবে। তিনি বলেন, একজন মানুষ বাধ্য না হলে নিজের ভিটা, দেবালয়, তুলসীতলা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে না। তবে হিন্দু সম্প্র্রদায়ের অনেক মানুষ এখন নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আমি নিজেও আমার পরিচিত একজনের বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছি। যারা দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার করতে হবে। যদি রাজনৈতিক কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি আক্রমণের শিকার হয়, সেটিও কাম্য নয়। কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বাড়িঘর পোড়ানো, লুটপাট নয়, আইন অনুযায়ী বিচার করতে হবে।

সংগঠনের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করার কথা সবার মুখে শুনেছি, কিন্তু বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের জাতীয় সম্পদ, ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। এটা আমাদের কাছে মোটেও কাম্য নয়।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার ও জে এল ভৌমিক, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষুু সুনন্দপ্রিয় প্রমুখ।

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মুরাদনগরে তিন খুন

নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা প্রতিনিধি
শেয়ার
নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।

গতকাল মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি স্টেশন এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়ায় শতাধিক নারী ও শিশু এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামে জনরোষের শিকার হয়ে গণপিটুনিতে এক ছেলে, এক মেয়েসহ নিহত হন মাদক ব্যবসায়ী রুবি আক্তার। পরে রুবি আক্তারের বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৩ জনকে আসামি দিয়ে একটি মামলা করেন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার পর থেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করছে। গ্রামের বাসিন্দা সালমা আক্তার, জমিলা বেগম ও জাহেদা খাতুন বলেন, তাঁদের পরিবারের উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

মাদক ব্যবসায়ীদের পরিবার বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা রয়েছে।

মুরাদনগর বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, ট্রিপল মার্ডারের মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করছি। এ মামলায় নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া আমরা কাউকে হয়রানি বা আটক করছি না।

মন্তব্য
ইন্তিফাদা বাংলাদেশের গণসমাবেশ

ভারতীয় আধিপত্য থেকে মার্কিন আধিপত্যে আশ্রয় নিয়েছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারতীয় আধিপত্য থেকে মার্কিন আধিপত্যে আশ্রয় নিয়েছে সরকার
গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের বার্ষিকীতে গতকাল শাপলা চত্বরে গণসমাবেশের আয়োজন করে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ। ছবি : কালের কণ্ঠ

ইন্তিফাদা বাংলাদেশ অভিযোগ করেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত হয়ে এখন আমেরিকান আধিপত্যবাদ কবুল করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শাপলা চত্বরে শেখ হাসিনার পলায়নের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত গণসমাবেশে সংগঠনটির নেতারা এ মন্তব্য করেন।

গণসমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলোআওয়ামী লীগের খুনিদের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত করতে হবে, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে কর্মরত খুনি ও ধর্ষকদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সাজানো জঙ্গি নাটক ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে, ইসলামবিরোধী সংস্কার বাতিল করতে হবে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এ ভূখণ্ডে প্রতিটি গণ-আন্দোলনে ইসলামপন্থীরা রক্ত দিয়েছে। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু তার পরবর্তী বাংলাদেশে ইসলামকে জনপরিসর থেকে বাদ দেওয়ার এক সচেতন চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনও ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধবিরোধী এজেন্ডা নিয়ে হাজির হয়েছে।

তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকাগুলো প্রশাসনের সঙ্গে মিলে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে নিরপরাধ মানুষকে কারাবন্দি করেছিল, গুম-খুন করেছে এবং ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে, যা আজও চলছে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফুল্লাহ বলেন, ২০২১ সালে প্রায় সাত হাজার আলেম-উলামা কারাবন্দি ছিলেন। তাঁদের অনেককে শতাব্দী নামের একটি ভবনে রাখা হয়েছিল, যেখানে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও রাখা হয়। সেখানে এক শিশুকে দেখা যায়, যাকে শুধু একটি ফেসবুক কমেন্টের জন্য বন্দি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কী করলে জঙ্গি হয়, তার একটি তালিকা করা হোক। তাহলে দেখা যাবে, আমাদের আগে জঙ্গিবাদী কাজ করছে সরকারি দলের লোকেরাই। মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগকে পিটিয়ে দাদার দেশে পাঠানো হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশে মুজিববাদের রাজনীতি করতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা কাফনের কাপড় পরে রাজপথে না নামলে দেশ স্বাধীন হতো না।

সমন্বয়করা তাদের স্বার্থে আন্দোলন করেছে। দেশ স্বাধীন হলেও এখনো জঙ্গি নাটকের শিকারদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। আগামী দুই মাসের মধ্যে সব আলেমকে মুক্তি দিতে হবে। ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিয়ান পাবলিকেশনের এমডি আহমাদ রফিক বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম বিশ্বজুড়ে পশ্চিমা শক্তি সেক্যুলারদের দিয়ে রাজত্ব কায়েম রাখে। আমাদের কেবলা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে সরিয়ে আল্লাহর দিকে দিতে হবে। জাতিসংঘের নাম করে দেশে মানবাধিকার নয়, বরং সমকামিতার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় তারা।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডে বিশ্বাস করে না। অথচ আওয়ামী লীগের অপরাধের সাজা হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। জাতিসংঘ সেই দণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে এ দেশে অফিস খুলতে চায়, যা মেনে নেওয়া হবে না।

ইসলামী বক্তা আসিফ আদনান বলেন, শাপলা চত্বরে মুমিনদের গুলি করে শহীদ করা হয়েছে। আজ আবার তৌহিদি জনতা এখানে জড়ো হয়েছে। আমরা এখনো আমাদের অধিকার ফিরে পাইনি। ফ্যাসিবাদের পতন হলেও ইসলাম কায়েম হয়নি। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার গোপন চুক্তি, জাতিসংঘ অফিস প্রতিষ্ঠার মতো দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত। অথচ আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচার এখনো হয়নি। আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে নেব। বক্তারা আরো বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ইসলামপন্থীদের অবদান উপেক্ষা করা হয়েছে। বরং নতুন করে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আলেমদের হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁরা জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং গণ-অভ্যুত্থানের স্টেকহোল্ডারদের নামে মিথ্যা মামলার নিন্দা জানান।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মীর ইদরীস। আরো বক্তব্য দেন মুফতি তারেকুজ্জামান, ডা. মেহেদী হাসান, ডা. শামসুল আরেফীন শক্তি, এস এম ফাহিম, জাকারিয়া মাসউদ, মুফতি জসিমুদ্দীন রাহমানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুস্তাফা মনজুর, ড. সরোয়ার, মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসুদ, মাওলানা রিদওয়ান, মাওলানা তানজিল আরেফিন আদনান, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা ইমরান রায়হান, রাফিউজ্জমান, মাওলানা ইনামুল হাসান ফারুকী, মাওলানা ফুআদ মুবতাসিম, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, কাজী মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

 

মন্তব্য
ডা. আবদুল্লাহ তাহের

যাদের প্রয়োজনীয় জনসমর্থন নেই, তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
যাদের প্রয়োজনীয় জনসমর্থন নেই, তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধী
আবদুল্লাহ তাহের

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর পদ্ধতি) চালু না করলে দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

ডা. তাহের বলেন, এই পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচনী অপরাধ থাকবে না, ভোট চুরি ও কেন্দ্র দখলের সংস্কৃতি থাকবে না। থাকবে না টাকার খেলা। মূলত যাদের প্রয়োজনীয় জনসমর্থন নেই, তারাই এই পদ্ধতির বিরোধিতা করছে।

তারা মাস্তানি ও অর্থের বিনিময়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু জনগণ সে সুযোগ দেবে না।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে  আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের সামনে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ডা. মোহাম্মদ তাহের বলেন, জনগণের রক্তের ওপর দিয়েই জুলাই বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই আপনি এখন ক্ষমতায়। আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তাই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার এখন জরুরি। একই দিন রাজধানীর পল্টন মোড়ে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত আরেক গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ক্ষমতায় গিয়ে একটি দলের সব সংস্কার মুছে দেওয়ার ঘোষণায় জনমনে গভীর সংশয় তৈরি হয়েছে।
তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় আবির্ভূত হতে চায়। তবে বাংলাদেশের জনগণ আর কোনো ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরো বলেন, দেশ সংস্কারের জন্য গঠিত প্রতিটি সংস্কার কমিশনকে জামায়াতে ইসলামী সহযোগিতা করলেও একটি দল নিজেদের রাষ্ট্রের মালিক মনে করে সরকারকে যথাযথভাবে সহযোগিতা করেনি এবং এখনো করছে না। জাতির প্রত্যাশিত ঘোষণাপত্র উপস্থাপিত না হলে জনগণ সরকারের ঘোষিত কোনো ঘোষণাপত্র মেনে নেবে না।

 

মন্তব্য

লে. কর্নেল (অব.) জিয়া উদ্দিন বীর উত্তম আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
লে. কর্নেল (অব.) জিয়া উদ্দিন বীর উত্তম আর নেই
লে. কর্নেল (অব.) জিয়া উদ্দিন

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেনানায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন (বীর-উত্তম) মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে জেড ফোর্সের প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।

মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন ১৯৩৯ সালের ২২ নভেম্বর বর্তমান কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের পহরচান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর বাবা মোহাম্মদ কাশেম এবং মা মজিদা খাতুন।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন। মেজর আবু তাহের, মেজর মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর ও ক্যাপ্টেন বজলুল গণি পাটোয়ারীর সঙ্গে অ্যাবোটাবাদ সেনানিবাস থেকে ২৫ জুলাই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের দেবীগড়ে পৌঁছেন এবং ২৭ জুলাই দিল্লি হয়ে ৭ আগস্ট কলকাতায় যান। সেখান থেকেই তাঁকে জেড ফোর্সের অধীনে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঠিক আগে ১৩ ডিসেম্বর সিলেটের এম সি কলেজ এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে যৌথ বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সিলেট শহরের উপকণ্ঠে পৌঁছে এবং ১৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। স্বাধীনতার পর তাঁকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত করা হয়।

সরকারি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় জিয়া উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান ছিলেন।

সিডিএর দায়িত্ব ছাড়ার পর আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম নগরীর সুপরিচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্সি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ