ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল শনিবার। ভোটাররা জানিয়েছেন, নির্দলীয়ভাবে হওয়া এ নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখবে ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন
জয়ে ভূমিকা রাখবে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার মেয়র প্রার্থীরা বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু নগরীর বাঁশবাড়ী এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় সকালের দিকে জনসংযোগ করেন। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এহতেশামুল আলম গণসংযোগ করেন কলেজ রোড, কাচিঝুলিসহ আশপাশের এলাকায়। হাতি প্রতীকের প্রার্থী সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু ধোবাখলা মোড়, ক্যাডেট কলেজ এলাকা, হিন্দুপল্লীসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন।
ময়মনসিংহ এখন ভোট উৎসবের নগরী। প্রধান সড়কসহ নগরীর প্রতিটি অলিগলিতে পোস্টারের ছড়াছড়ি। প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পেও সমর্থকের ভিড়।
একাধিক সচেতন ভোটার বলেন, ‘দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচিতি ও যোগ্যতায়ই ভোট টানতে হবে। যে প্রার্থীর যত বেশিসংখ্যক ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ, সেই প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা তত প্রবল। এ ক্ষেত্রে ১৫ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি থাকায় ইকরামুল হক টিটু সুবিধাজনক অবস্থানে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
শহীদুল ইসলাম নামে একজন ভোটার জানান, প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা বিগত সময়ে তাঁদের খোঁজখবর নিয়েছেন, তিনি তাঁকেই ভোট দেবেন। নাজনীন বন্যা নামের একজন গৃহিণী জানান, যে প্রার্থীকে তাঁরা চেনেন, প্রার্থীও তাঁদের চেনেন, এমন ব্যক্তিকেই ভোট দেবেন তাঁরা।
রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাঁরা আশা করছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, ৩৩টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন, ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১২৮টি ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন তিন হাজার ২৫৩ জন কর্মকর্তা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে লাল কার্ড সমাবেশ


মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ওপর হামলা সাংবাদিকসহ আহত ২০
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বের করা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছয় সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
আহত ইউপি সদস্য মো. শেখর জানান, ‘আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আল্লাহ চত্বরে এসে সমাবেশ শুরু করার পরপরই সমাবেশ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় আমাকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।’
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, ‘মিছিল নিয়ে এসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লোকজন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে ওমর আলী নামের যুবদলকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা আমিন কাদের খান বলেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা আগেই আমাদের কাছ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের লিখিত অনুমতি নিয়েছেন। তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছিলেন, এ সময় পাশে অবস্থানকৃত কিছু লোক বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এর পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। এতে কিছু লোক আহত হয়েছে। উপজেলা সদরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা আছে।

রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলা
গ্রেপ্তার ৫ জনই নীলফামারীর, আজ রিমান্ড শুনানি
রংপুর অফিস ও গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের রংপুর আমলি আদালতে (গঙ্গাচড়া) শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ওই পাঁচজনই ঘটনাস্থলের পাশে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াছিন আলী (২৫), একই গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২), মাগুড়া ধনিপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে স্বাধীন মিয়া ( ২৮), দক্ষিণ চাঁদখানা মাঝপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৮) এবং উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের মৃত বাবুল খানের ছেলে এম এম আতিকুর রহমান খান।
আদালত পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল রংপুর আমলি আদালতের (গঙ্গাচড়া) বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল এমরান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে আসামিদের রংপুর সদর কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, রঞ্জন রায় নামের এক কিশোর তার ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট করে।
অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে রঞ্জন রায়কে আটক করে পুলিশ। পরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে ৩টি গুরুতর ব্লক জরুরি বাইপাসের সিদ্ধান্ত
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে তিনটি গুরুতর ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সে জন্য জরুরি বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মঞ্চেই পড়ে যান ডা. শফিকুর রহমান। এর পর থেকে তিনি চিকিৎসকদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে ছিলেন।
চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির পাশাপাশি বিদেশে চিকিৎসার কথাও বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের চিকিৎসকদের ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
এই বাইপাস সার্জারি কবে কোথায় এবং কার তত্ত্বাবধানে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই। এ বিষয়ে পারিবারিক ও দলীয় পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
ডা. শফিকুর রহমান এবং তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যেন মহান আল্লাহ তাঁকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন, তিনি যেন আবারও দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।