ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

করোনার এমআরএনএ টিকার জন্য নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
করোনার এমআরএনএ টিকার জন্য নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী
ড্রু ওয়াইজম্যান ও কাতালিন ক্যারিকো

করোনাভাইরাসের ভয়াবহ থাবায় বিপর্যস্ত বিশ্ব। সারা বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছিল। তখন করোনার টিকার এমআরএনএ প্রযুক্তি আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দুই বিজ্ঞানী। তাঁরাই পেয়েছেন সবচেয়ে গৌরবময় নোবেল পুরস্কার।

২০২৩ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পেয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান বিজ্ঞানী কাতালিন ক্যারিকো ও মার্কিন বিজ্ঞানী ড্রু ওয়াইজম্যান। করোনাভাইরাসের কার্যকর টিকা আবিষ্কারে তাঁদের গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, এ জন্যই তাঁরা এই পুরস্কার পেলেন। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডিশ নোবেল কমিটি এই দুই বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা নোবেল পদকের পাশাপাশি পাবেন একটি সনদপত্র, মোট ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার বা ১১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

করোনার টিকা তৈরির পদ্ধতি গতানুগতিক টিকার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সাধারণ টিকা তৈরি দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। তাতে কয়েক বছর থেকে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে। কিন্তু করোনা মোকাবেলায় দরকার ছিল দ্রুত টিকা আবিষ্কারের।

এ জন্য বিজ্ঞানীরা হাঁটেন বিকল্প পথে। তাঁরা করোনার জিনোম বিশ্লেষণ করে আরএনএ ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন দ্রুততম সময়ে।

সুইডিস নোবেল কমিটির ফিজিওলজি বা মেডিসিন বিভাগের সেক্রেটারি টমাস পার্লম্যান বলেন, তাঁদের গবেষণা নতুন দিক উন্মোচন করেছে। তাঁরা দেখিয়েছেন কিভাবে আরএনএ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে, এ বিষয়ে আমাদের আগের ধারণাটাই বদলে দিয়েছে। তাঁদের দেখানো পথ  করোনার টিকা তৈরি ও বিকাশে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে।

৩০ জানুয়ারি ২০২০, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিকভাবে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করে। কারণ, চীনের উহান প্রদেশ থেকে পুরো বিশ্বে বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারস-কোভ-২  (SARS-CoV-2)  নামের করোনাভাইরাস। জরুরি অবস্থা জারি করেও লাভ হলো না। এই ভাইরাস পুরো পৃথিবীতে মহামারি বাধিয়ে দেয়। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ মারা পড়ে করোনার সংক্রমণে। পৃথিবীর মানুষকে বাঁচানোর গুরুদায়িত্ব তখন সব স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের কাঁধে। ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার মোক্ষম উপায় হলো টিকা প্রয়োগ।

বিশ্বের বিজ্ঞানীরা তখন উঠে পড়ে লাগেন করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে। এত দ্রুত টিকা প্রস্তুত করতে পারার একটা প্রধান কারণ এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার। ক্যাতারিন ক্যারেকি ড্রু ওয়াইজম্যান অনেক আগেই দেখিয়েছেন এমআরএনএর নাইট্রোজেনাস ক্ষার পরিবর্তন করে এমআরএনএ কিভাবে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে।

কোনো জীবাণুকে এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে টিকা প্রয়োগ। আগে সাধারণত টিকা তৈরি করতে দুর্বল কিংবা মৃত ভাইরাস ব্যবহার করা হতো। আক্রান্ত হওয়ার আগেই দুর্বল কিংবা মৃত ভাইরাসকে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো মানুষের শরীরে। ফলে আগে থেকেই মানবদেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকতে পারে। পোলিও কিংবা হামের টিকাগুলো এই গতানুগতিক পদ্ধতিতেই তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এ ধরনের টিকা তৈরি করতে অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই এই নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছে।

নতুন এই টিকা তৈরি করতে সম্পূর্ণ ভাইরাসটিকে ব্যবহার না করে কোনো অংশ যেমনপ্রোটিন কিংবা ভাইরাসের জিনোমের কোনো অংশ ব্যবহার করা হয়। কিংবা ভাইরাসের জিনোমের কোনো অংশ ক্ষতিকর না এমন কোনো ভাইরাল বাহকের ভেতর প্রবেশ করিয়েও টিকা প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ ভাইরাস, প্রোটিন কিংবা বাহক ব্যবহার করে তৈরি টিকার একটা সীমাবদ্ধতা হচ্ছেবেশ বড় পরিসরে কোষ কালচার করতে হয়, যার জন্য অনেক সময়ের দরকার হয়। কিন্তু মহামারির সময় অল্প সময়ে প্রচুর পরিমাণে টিকা উৎপাদন করাটা জরুরি হয়ে পড়ে।

আমাদের কোষে প্রোটিন তৈরি হয় বার্তাবাহক আরএনএ (mRNA-messenger RNA)

 থাকা জিনোম সংকেত থেকে। আর এই এমআরএনএ তৈরি হয় ডিএনএ থেকে ট্রান্সক্রিপশন প্রক্রিয়ায়। আশির দশকেই বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে কোনো রকম কোষ কালচার ছাড়াই কিভাবে এমআরএনএ প্রস্তুত করতে হয় সেই পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেলেন। এই আবিষ্কারই এমআরএনএ ব্যবহার করে টিকা তৈরির দ্বার খুলে দেয়। কিন্তু একটা বড় বাধা রয়ে গেল। গবেষণাগারে বানানো এমআরএনএর স্থিতিশীলতা খুব কম হয়। ফলে এভাবে তৈরি এমআরএনএ কোষের ভেতর প্রবেশ করানোটা একটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। এ জন্য এমআরএনএকে বিশেষ প্রকার লিপিডের তৈরি ক্যাপসুলের ভেতর আবদ্ধ করে নিতে হয়। পাশাপাশি গবেষণাগারে তৈরি এমআরএনএ প্রয়োগে শরীরের ভেতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিন্তু এসব বাধা থামাতে পারেনি হাঙ্গেরিয়ান প্রাণরসায়নবিদ ক্যাতালিন ক্যারিকোকে। তিনি তখন এমআরএনএকে চিকিৎসা থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করে গবেষণা করছিলেন। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় মার্কিন ইমিউনোলজিস্ট ড্রু ওয়াইজম্যানের। ওয়াইজম্যান ডেনড্রাইটিক কোষ নিয়ে বেশ কৌতূহলী ছিলেন। এই বিশেষ ধরনের কোষগুলো ভ্যাকসিন প্রয়োগে সৃষ্ট প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে সক্রিয়করণে ভূমিকা রাখে। পরে এই দুই সহকর্মী এক জোট হয়ে গবেষণা শুরু করলেন, বিভিন্ন ধরনের আরএনএ কী করে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে সেটা বোঝাতে।

ক্যারিকো ও ওয়াইজম্যান খেয়াল করলেন, ডেনড্রাইটিক কোষগুলো গবেষণাগারে প্রস্তুত এমআরএনএকে অ্যান্টিজেন হিসেবে শনাক্ত করে। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এমআরএনএর বিরুদ্ধে সক্রিয় করতে নানা রকম প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক তৈরি করতে থাকে। কিন্তু সরাসরি স্তন্যপায়ী কোষ থেকে নেওয়া এমআরএনএর ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না। আরএনএতে এডিনিন, সাইটোসিন, ইউরাসিল ও গুয়ানিন নামের চার রকমের বেস থাকে। সরাসরি স্তন্যপায়ী কোষ থেকে নেওয়া এমআরএনএর বেসগুলোতে বেশ দ্রুত রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। কিন্তু গবেষণাগারে তৈরি এমআরএনএর ক্ষেত্রে সে রকমটা হয় না। আর সে কারণেই স্তন্যপায়ী কোষ থেকে নেওয়া এমআরএনএ সে রকম কোনো সাড়া তৈরি করে না। পরে ২০০৮ এবং ২০১০ সালে, ক্যারিকো এবং ওয়াইজম্যান দেখান, বেস পরিবর্তন করে এমআরএনএ অপরিবর্তিত এমআরএনএর তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন তৈরি করে। আর এভাবেই, এমআরএনএর বেস পরিবর্তন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পরিমাণ কমিয়ে আনে এবং প্রটিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে এমআরএনএকে থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করায় আর কোনো বাধা রইল না। আর এরই ধারাবাহিকতায়, সম্ভব হয়েছে এমআরএনএ ভ্যাকসিন আবিষ্কার। এ ধরনের ভ্যাকসিন উৎপাদন করার জন্য অনেক বেশি সময় নিয়ে কোষ কালচার করার দরকার পড়ে না। কেননা ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য দরকারি এমআরএনএ গবেষণাগারেই প্রস্তুত সম্ভব হয়। ফলে অল্প সময়ে অনেক বেশি পরিমাণে টিকা উৎপাদনও সম্ভব হয়।

কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রু ওয়াইজম্যান বেশ আগে থেকেই আরএনএ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছিলেন। তাঁদের সেই গবেষণা ফলপ্রসূ হলো করোনা ভ্যাকসিন তৈরির সময়। এ কারণেই তাঁদের ঝুলিতে উঠল নোবেলের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
শেয়ার
বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

পার্বত্য বান্দরবানের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জেলার ছাত্রসমাজ। একই সঙ্গে বান্দরবানে এনসিপির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা এসেছে ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে।

গতকাল রবিবার দুপুরে বান্দরবান প্রেস ক্লাবে ছাত্রসমাজের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্রনেতারা বলেন, গত ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার এক সমাবেশে বান্দরবানকে শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলির জায়গা বলে মন্তব্য করেন সারজিস আলম।

এই বক্তব্যকে তাঁরা চরম অবমাননাকর ও জাতিগত বৈষম্যপূর্ণ বলে আখ্যা দেন।

ছাত্রনেতারা জানান, ওই মন্তব্যের পর তাঁরা এনসিপির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সারজিস আলমকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন। তাঁরা আশ্বাসও পান, ১৯ জুলাই বান্দরবানের পদযাত্রা কর্মসূচিতে সারজিস আলম ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং এনসিপির কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বিষয়টি নিয়ে মুখও খোলেননি।

বান্দরবান ছাত্রসমাজের নেতা আসিফ ইসলাম বলেন, সারজিস আলম ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বান্দরবানে তাঁর উপস্থিতি এবং এনসিপির সব কার্যক্রম অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। পার্বত্যাঞ্চলকে শাস্তির জায়গা বলা মানে আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল, সহসভাপতি মাহির ইফতেখার, আমিনুল ইসলাম, খালিদ বিন নজরুল, হাবিব আল মাহমুদ প্রমুখ।

রাঙামাটিতে এনসিপির পদযাত্রায় পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

এদিকে গতকাল শনিবার রাঙামাটি শহরে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এতে উচ্চ মাধ্যমিক, অনার্স ও পাস কোর্সের শত শত পরীক্ষার্থী চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছতে অনেককেই রোদে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবু সাইয়েদ আহমেদ বলেন, গাড়ি বন্ধ থাকায় সকালে প্রশ্নপত্র আনতেও সমস্যায় পড়ি। ৮৩৪ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা ছিল, অনেকে কেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি করে।

এনসিপির পদযাত্রা দুপুরে শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

পদযাত্রার পর অনুষ্ঠিত সমাবেশে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে গঠিত ১৯৭২ সালের সংবিধান বিভেদের সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সমুন্নত রেখে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করতে।

সমাবেশে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি ভুল করি, সেটা সংশোধন করব। তবে কথার প্রতিবাদে সহিংসতা কিংবা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হতে পারে না।

তবে সমাবেশের কারণে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের ঘটনায় ছাত্রদল ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে। ছাত্রদলের জেলা সভাপতি ফারুক আহমেদ সাব্বির বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে পরীক্ষার দিন রাস্তায় সমাবেশ করে।

ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ সারজিসের

সমালোচনার মুখে গতকাল দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন সারজিস আলম। তিনি লেখেন, সংগ্রাম, সৌন্দর্য ও সৌহার্দ্যের রাঙামাটি থেকে...

আমরা লড়াই করব সকল জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিয়ে; জুলাই পদযাত্রা থেকে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

বান্দরবান নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়ন হয়েছে, সেটার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শেয়ার
এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র এ বছর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি সামরিক মহড়া চালাবে এবং নতুন দক্ষতা সংযোজনের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারি বজায় রাখবে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

যৌথ সামরিক মহড়া ও নতুন দক্ষতা সংযোজন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, এগুলো আমাদের অভিন্ন নিরাপত্তা লক্ষ্যকে আরো দৃঢ় করবে। এই প্রচেষ্টাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলকে আরো শক্তিশালী ও নিরাপদ করে তোলে।

টাইগার লাইটনিং মহড়া : টানা চতুর্থ বছরের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্যাসিফিক টাইগার লাইটনিং মহড়া পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাস্তবধর্মী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের সৈনিকরা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, শান্তিরক্ষা, জঙ্গলে অভিযান, আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত সরিয়ে নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক ডিভাইস (আইইডি) প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি অর্জন করবে।

টাইগার শার্ক ২০২৫ মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, টাইগার শার্ক (ফ্লাশ বেঙ্গল সিরিজের অংশ) একটি যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া যেখানে আমাদের দুই দেশের বিশেষ বাহিনী যুদ্ধকৌশল অনুশীলন করে। ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই মহড়ায় প্যাট্রল বোট পরিচালনা এবং স্বল্পপাল্লার অস্ত্রের লক্ষ্যভেদে দক্ষতা অর্জনের অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডকে সংকট মোকাবেলায় আরো দক্ষ করে তুলবে।

এই যৌথ মহড়ার বিশেষ আকর্ষণ হলো উভয় দেশের ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম।

প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল। এই মহড়ায় আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, আমাদের সি-১৩০ বহরকে তুলে ধরা হবে। এটি দুর্যোগকালে আকাশপথে সরঞ্জাম সরবরাহ ও চলাচল সংক্রান্ত অভিযানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই মহড়াটি অনুসন্ধান ও উদ্ধার (এসএআর) এবং অ্যারোমেডিক্যাল কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব দেয়, যা মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াবে।

আরকিউ-২১ কর্মসূচি চালু : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সঙ্গে একত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি মানববিহীন আকাশযান ব্যবস্থা (ইউএএস) সক্ষমতা গড়ে তুলছে। বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি রেজিমেন্ট নতুন আরকিউ-২১ ব্ল্যাকজ্যাক সিস্টেম পরিচালনা করবে। এই সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশকে সমুদ্রসীমা পর্যবেক্ষণ, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনায় সক্ষম করে তুলবে।

মন্তব্য
ডাকসু নির্বাচন ২০২৫

তফসিল ২৯ জুলাই ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
তফসিল ২৯ জুলাই   ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৯ জুলাই। এরপর নির্বাচন সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। গতকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এসব তথ্য জানান ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর, প্রোক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, অনুষদের ডিন, শিক্ষকদের প্রতিনিধি, হল প্রভোস্ট, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

স্বাগত বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী অংশীজনদের আগের পরামর্শের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সভায় জানানো হয়, নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ছয়টি নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলো হলো১. কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল) : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ২. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র : জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৩. ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) : রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র : বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৫. সিনেট ভবন কেন্দ্র (অ্যালামনাই ফ্লোর, সেমিনারকক্ষ, ডাইনিংরুম) : স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৬. উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র : সূর্য সেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীমউদ্দীন হল ও শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন।

সভায় আরো জানানো হয়, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত ৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আরো ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত লাইট স্থাপন করা হয়েছে।

প্রোক্টরিয়াল মোবাইল টিমের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা গেটগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

মন্তব্য

আবারও মালিকদের ধর্মঘটের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আবারও মালিকদের  ধর্মঘটের হুমকি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর সংশোধন, বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়ানোসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সমিতি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই দাবিগুলো না মানা হলে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণাও দিয়েছে তারা। গতকাল দুপুরে সমিতির কার্যালয়ে মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এতে সারা দেশ থেকে পরিবহনের মালিক-শ্রমিক নেতারা যোগদান করে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরে সরকারের প্রতি দাবিগুলো প্রস্তাব করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. কফিল উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনটি একটি প্রতিশোধপরায়ণ, নিপীড়নমূলক এবং ক্ষতিকর।

বিগত সরকারের আইনে বাণিজ্যিক মোটরযানের মধ্যে বাসের ইকোনমিক লাইফ ২০ এবং ট্রাকের লাইফ ২৫ বছর করা হয়েছে। এ আইনটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পরিবহন সেক্টরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে ৭০ ভাগ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে মৌখিকভাবে দাবি করেছি, কোনে অস্থিরতা তৈরি না করে পরিবহন সেক্টরের মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বসে এই উদ্ভূত পরিস্থিতির নিরসন না করা হলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সেক্টরে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ