বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। শুধু রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে ‘শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশনে’ বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
রাজধানীর মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যূনতম মজুরি, শ্রমিক পরিস্থিতি ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই কনভেনশন হয়।
কনভেনশনে ২০টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এটি শ্রমিক-কর্মচারীদের দ্বিতীয় কনভেনশন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদের পতনের আন্দোলনের সময় প্রথম কনভেনশন হয়েছিল।
কনভেনশনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, খালেদা জিয়া যাতে রাজনীতি করতে না পারেন সে জন্য তাঁকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।
খালেদা জিয়া কোনো দুর্নীতি করেননি। দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকার যে দুর্নীতির কথা বলা হয়, সেই টাকা এখন আট কোটির ওপরে। টাকা ব্যাংকেই জমা আছে।
খালেদা জিয়ার সংকটজনক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখে তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, এই সরকার একটা ভয়াবহ দানব সরকার। লুটেরা সরকার, বর্গিদের মতো সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করে বাড়িঘর বানাচ্ছে। আর দেশে মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে। তারা এ রকম একটা ভয়াবহ রাষ্ট্র তৈরি করেছে।
কনভেশনে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘অনেকে আলটিমেটাম দিচ্ছে যে আমাদের রাস্তায় নামতে দেবে না। আমরা কিন্তু এখনো আলটিমেটাম দিইনি। যখন দেব তখন পরিস্থিতি কী হবে জানি না। তবে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। জনগণ ধরলে কেউ রক্ষা পাবেন না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকার নড়বড় করছে। দেশে-বিদেশে কোথাও তারা জায়গা পাচ্ছে না। সবই মিলে জোরে একটা ধাক্কা দিলে সরকারের পতন হবে।’
শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশন আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সভাপতি টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া শ্রমিক ফেডারেশন, সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ, চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতিসহ বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।