ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭
পাখি

রাঙাচ্যাগা : পাখিকুলের দ্রৌপদী-অর্জুন

  • ইনাম আল হক
শেয়ার
রাঙাচ্যাগা : পাখিকুলের দ্রৌপদী-অর্জুন
মেয়ে রাঙাচ্যাগা ও ছেলে রাঙাচ্যাগা। ছবি : লেখক

পাখির তালাশে বৃষ্টি মাথায় করে কেরানীগঞ্জ আসার পুরস্কার পেতে দেরি হয়নি। পথে নামতেই চোখে পড়েছে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে রাঙাচ্যাগা, পাখিকুলের দ্রৌপদী-অর্জুন। নির্জন পথের পাশে হাজামজা একটি ডোবায় কচুরিপানার ওপর বুক টান করে দাঁড়িয়ে ছিল মেয়ে পাখিটি। আর ডোবার পারে ঝরাপাতার মাঝে সন্তর্পণে লুকিয়ে ছিল ম্রিয়মাণ তার পুরুষ সঙ্গীটি।

সবুজ পানার ওপর দাঁড়ানো মেয়ে পাখিটির ঠোঁটে কমলা রং, গলায় ব্রোঞ্জ-ছটা আর ডাগর চোখের চারপাশে টানা সাদা কাজলরেখা থেকে দৃষ্টি সরানো কঠিন ছিল। মনে পড়েছিল নন্দনকাননে দ্রৌপদী শিরোনামে লেখা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দীর্ঘ কবিতার শেষাংশে নিজেকে নিয়ে দ্রৌপদীর এই কথাগুলো :

পায়ের আঙুল থেকে কেশাগ্র পর্যন্ত যৌবনের আঁচ  সেই আঁচ কিছুটা ভাসিয়ে দেবো স্বর্গনদী স্রোতে। 

ওদিকে ডাঙায় বস্ফািরিত চোখে আমাদের দিকে কোপদৃষ্টি দিয়ে সটান দাঁড়িয়ে ছিল সাদামাটা, খর্বাকার ছেলে রাঙাচ্যাগাটি। মাটিতে বসে ডিমে তা দিতে আর মাটিতেই ছানা নিয়ে হাঁটতে হয় বলে পুরুষের পালকে এই অনাড়ম্বর মেটে রং।

তবু আমরা হলফ করে বলতে পারি যে এই চাকচিক্যহীন ছেলেটিই ওই ডোবা আলো করা দ্রৌপদীর আরাধ্য অর্জুন।

বর্ষার শুরুতেই পাখিকুলের এই দ্রৌপদী সম্ভবত এক দফা সংসারধর্ম পালন করে ফেলেছে। একটি প্রজনন মৌসুমে একাধিক সংসার করার বিরল ক্ষমতা রাখে স্ত্রী রাঙাচ্যাগা। দূরের কোনো ডোবায় ওর প্রথম স্বামী একাকী ডিমে তা দিয়ে হয়তো এখন ছানা লালন করছে।

মহাভারত উপাখ্যান অনুসরণ করে আমরা সেই অদেখা পাখিটির নাম দিতে পারি যুধিষ্ঠির এবং ছানার নাম প্রতিবিন্ধ্য।

ডিম দেওয়া ছাড়া সংসারের কোনো কাজ করে না স্ত্রী রাঙাচ্যাগা। ডিমে তা দেওয়া আর ছানা পালনের পুরোটাই পুরুষের কাজ। এক প্রজনন মৌসুমে একটি স্ত্রী একাধিক পুরুষের ঘরে ডিম দিলে তবেই শত্রুসংকুল কাদামাটিতে পোকা খুঁটে খাওয়া এই পাখিকুলের বংশ রক্ষা হয়। স্ত্রী রাঙাচ্যাগা পাখিদের তাই মহাভারতের দ্রৌপদীর মতোই হতে হয় বহুগামী।

বহুগামী বলেই স্ত্রী রাঙাচ্যাগাকে দ্রৌপদীর মতোই রূপসী, সুকণ্ঠী, সর্বংসহা ও সবল হতে হয়। ভীমের মতো বিশালদেহি না হলেও মহাভারতের দ্রৌপদী অবলা ছিল না মোটেই; সিন্ধুরাজ জয়দ্রথকে সে এক ধাক্কায় ধরাশায়ী করেছিল। রাঙাচ্যাগার মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে আকারেও বড়; তাই তারা প্রতিটি প্রজনন মৌসুমেই একাধিকবার স্বয়ম্বরা হতে ইতস্তত করে না।

মনে হয়, ঢিলা-বর্ষার মেঘাচ্ছন্ন দিনে উত্সুক রাঙাচ্যাগাকুলের দ্রৌপদী এসেছে কৃশকায় কিন্তু বলিষ্ঠ এই অর্জুনের কাছে প্রণয়ের বাণী নিয়ে। সন্দেহ নেই, আমরা সরে গেলেই সে গলা ফুলিয়ে মিষ্টি সুরে কুক-কুক-কুক... ডেকে ছেলেটিকে কাছে টানার চেষ্টা করবে। ছেলে রাঙাচ্যাগার গলায় কিন্তু সুর নেই, যেমন তার পালকে নেই কোনো রংচং। বংশ রক্ষার কাজে যার শ্রম যত বেশি, তার প্রাধান্যও তত বেশি; এবং তার পার্টনার নাচ-গান করে কেবল নিজ অবদানের ঘাটতি পূরণেরই চেষ্টা করতে পারে। বেশির ভাগ পাখির ক্ষেত্রে সাজগোজ আর নাচ-

গানের দায়টি তাই ছেলেদের। তবে ছেলে রাঙাচ্যাগার বেলায় তা নয়; বংশ রক্ষার কাজে তার অবদানই বড়। ডিম ফুটিয়ে ছানা বড় করার কাজে ছেলেদের জীবনের বড় শক্তি ব্যয় হয়। সাজুগুজু করে আর গান গেয়ে ছেলেকে তুষ্ট না করে তাই স্ত্রীর গতি নেই।

পড়ন্ত এই প্রজনন মৌসুমে ডোবার এই দ্রৌপদীকে দ্রুত দুটি ডিম দিতে হবে তার নবলব্ধ অর্জুনের ঘরে। বর্ষা শেষ হওয়ার আগেই ডিম না ফুটলে ছানারা মাটিতে পর্যাপ্ত পোকামাকড় খুঁজে পাবে না; ক্ষীণ হয়ে যাবে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা। ডোবার কিনারা ছেড়ে তাই আমরা সরে পড়লাম। আমরা চাই দ্রৌপদীর ইচ্ছাটুকুই পূর্ণ হোক; অর্জুন প্রীত হোক এবং তার ঘরে বেড়ে উঠুক শ্রুতকর্মার মতো একটি সবল ছানা।

আমরা তো চাই রাঙাচ্যাগাকুলের এই দ্রৌপদীর ঘরে সুতসোম, শতানীক ও সুতনুর মতো আরো অনেক পুত্র-কন্যা হোক। কারণ মাটিতে জীবন কাটাতে হয় বলে রাঙাচ্যাগার ছানার জীবনে ঝুঁকির অন্ত নেই। অনেক সবল পুরুষের বাসায় ডিম দিয়ে গেলে তবে হেমন্তের খোলা প্রান্তরে দু-একটি বাড়ন্ত ছানা দেখার ভাগ্য হবে স্ত্রী রাঙাচ্যাগার।

এখন বছর ধরেই ধানক্ষেতে পানি থাকে বলে এ দেশে রাঙাচ্যাগা ছানার বিচরণভূমির অভাব নেই। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে রাঙাচ্যাগার সংখ্যা কমা ছাড়া বাড়ার লক্ষণ দেখা যায়নি বাংলাদেশে। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ক্ষেত-খামারে পোকামাকড় নিপাত হয়ে যাওয়ার জন্যই রাঙাচ্যাগার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না বলে সন্দেহ করা হয়। 

কিন্তু রাঙাচ্যাগার মতো একটি পাখিকে তো আমরা বাংলাদেশ থেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যেতে দিতে পারি না। অনন্য এই পাখির পুরো নাম বাংলা-রাঙাচ্যাগা এবং এর আন্তর্জাতিক নাম রোস্ট্রাটুলা বেঙ্গালেন্সিস অর্থাৎ বাংলার কাদাখোঁচা। বাংলার নামে পৃথিবীতে যে ১১ প্রজাতির পাখির বৈজ্ঞানিক নামকরণ হয়েছে বাংলা-রাঙাচ্যাগা তারই একটি।

এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেই বাংলা-রাঙাচ্যাগা আছে। বেঙ্গালেন্সিস নামের কারণে সব দেশের পাখিদর্শককেই সে প্রতিনিয়ত বাংলার কথা মনে করিয়ে দেয়। পাখিটি বাংলার মতোই প্রাণবন্ত ও সর্বংসহা। এই বাংলা-রাঙাচ্যাগা ছাড়া পৃথিবীতে মাত্র আর দুই প্রজাতির রাঙাচ্যাগা আছে; এর একটি অস্ট্রেলিয়া আরেকটি দক্ষিণ আমেরিকায় বাস করে।

ডোবা ভরাট করে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের জায়গাগুলোতে ঘরবাড়িসহ স্থাপনা উঠবে। সেই গৃহে মানুষ এসে সংসার পাতার অনেক আগেই বাংলা-রাঙাচ্যাগা এখানে তাদের আবাস হারাবে। কেরানীগঞ্জের অধিবাসীরা জানতেও পারবে না, একদিন এখানে প্রথম দৃষ্টি বিনিময় করেছিল পাখিকুলের দ্রৌপদী-অর্জুন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ