ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

১০০ জনে চারজনের বেশি হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত

শিমুল মাহমুদ
শিমুল মাহমুদ
শেয়ার
১০০ জনে চারজনের বেশি হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত

দেশে প্রতি ১০০ জনে চারজনের বেশি হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে সংক্রমিত। এটি ভাইরাসজনিত লিভারের রোগ। এর মধ্যে ক্রনিক হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের একাংশ লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। সময়মতো চিকিৎসকের কাছে না গেলে অবস্থার আরো অবনতি ঘটে।

এমন তথ্য দিয়ে দেশের হেপাটাইটিস রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধে রোগের তথ্য গোপন বা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আজ ২৮ জুলাই বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপ্রাদ্য—‘আর নয় অপেক্ষা, আর নয় ভয়, হেপাটাইটিস প্রতিরোধের এখনই সময়। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশে হেপাটাইটিস-বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় এক কোটি মানুষ। প্রতিবছর মৃত্যু ২২ হাজারের বেশি মানুষের। আক্রান্তদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই জানে না যে সে এই ভাইরাস বহন করছে।

অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশের (এএসএলডিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব কালের কণ্ঠকে বলেন, মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা আছে, এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই।

রোগটি খাবারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, পারস্পরিক ওঠাবসার মাধ্যমে ছড়াতে পারে, তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে সব কিছু থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়া ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াবে। মায়ের হেপাটাইটিস-বি থাকলে বাচ্চারও হবে। এ জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিয়ে করা যাবে না। এসব ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, যদি স্বামী বা স্ত্রী কারো হেপাটাইটিস-বি থাকে, সে ক্ষেত্রে যিনি আক্রান্ত নন, তিনি টিকা নিয়ে নিলে মেলামেশায় কোনো সমস্যা নেই। যদি মায়ের এই ভাইরাস থাকে, তাহলে সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই টিকা দিলে শিশুটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবে না।

২০১৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স সিভিল সোসাইটির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এক হাজার ৩৯ জনের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, চাকরি নিয়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন প্রায় ২৮ শতাংশ, সামাজিক বৈষম্যের শিকার প্রায় ১৫ শতাংশ, চিকিৎসা নিতে বাধার সম্মুখীন প্রায় ৯ শতাংশ, পরিবারে ৭ শতাংশ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ৪ শতাংশ। বৈষম্যের ভয়ে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশ চাকরিক্ষেত্রে, ৭৬ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং ৭ শতাংশ পরিবারে তাদের রোগের তথ্য গোপন রেখেছে।

হেপাটাইটিস সাধারণ মানুষের কাছে জন্ডিস রোগ হিসেবে পরিচিত। চিকিৎসকদের মতে, হেপাটাইটিস ভাইরাস পাঁচ ধরনের। হেপাটাইটিস-এ ও ই স্বল্পমেয়াদি লিভারের রোগ। বিশ্রাম নিলে এক পর্যায়ে এই রোগ থেকে সেরে ওঠা যায়। প্রাণঘাতী হচ্ছে হেপাটাইটিস-বি ও সি ভাইরাসের সংক্রমণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিডিসি শাখার ডেপুটি প্রগ্রাম ম্যানেজার (ভাইরাল হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়া কন্ট্রোল) ডা. অনিন্দ্য রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে প্রতি ১০০ জনে চারজনের বেশি হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে সংক্রমিত। শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার একসময় ০.০৫ শতাংশ ছিল। টিকা কার্যক্রমের ফলে তা কমে এসেছে। হেপাটাইটিস-বি আক্রান্তদের ৯০ শতাংশের তেমন কোনো সমস্যা হয় না। ওষুধ সেবনে একসময় ভালো হয়ে যায়। ১০ শতাংশের দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হয়।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, দেশে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী রয়েছে ০.৭ শতাংশ। তবে আমাদের জাতীয় জরিপে এই হার আরো কম, ০.১ থেকে ০.২ শতাংশ। হেপাটাইটিস-সির কোনো ভ্যাকসিন নেই, তবে চিকিৎসা আছে। শুরুতে যদি শনাক্ত করা যায় এবং নিয়মিত ওষুধ খেলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ থাকে। লিভারের কোনো ক্ষতি হয় না।

হেপাটাইটিসের লক্ষণ

হেপাটাইটিস-বির উপসর্গ হলো জ্বর, দুর্বলতা, অবসাদ, বমি ভাব বা বমি হওয়া। হেপাটাইটিস-এ এবং হেপাটাইটিস-ই পানিবাহিত বা খাবারবাহিত। সাধারণত রোগীর চোখ ও শরীর হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়। খাবারে অনীহা, বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

রোগটি যেভাবে ছড়ায়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ভাইরাসটি নীরব ঘাতক। দীর্ঘ সময় কোনো উপসর্গ না থাকায় রোগী প্রথমে বুঝতে পারে না যে সে ভাইরাসটি বহন করছে। এক পর্যায়ে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটি শনাক্ত হয়।

তিনি বলেন, এটি ছোঁয়াচে নয়। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ছড়ায় রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে। কারণ রক্তদানের আগে যে পরীক্ষা করা হয়, সেখানে সব সময় হেপাটাইটিস-বি ও সি ভাইরাস ধরা পড়ে না। এ ছাড়া চিকিৎসা বা সার্জারির সময় জীবাণুমুক্ত না করে যন্ত্রপাতির ব্যবহার থেকে হতে পারে। সেলুনে শেভ করতে গিয়ে একই ক্ষুর থেকে, একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ, ট্যাটু করা, নাক-কান ফুটো করার মাধ্যমেও এটি সংক্রমিত হতে পারে। চিকিৎসকের অসচেতনতা ও যৌন মিলনের মাধ্যমেও এটির সংক্রমণ ঘটতে পারে।

হেপাটাইটিস-বির চিকিৎসা

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব বলেন, লিভার ক্যান্সার ও সিরোসিসের ঝুঁকি এড়াতে ক্রনিক হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের সব সময় চিকিৎসকের ফলোআপে থাকতে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের প্রয়োজন হয়। ইনজেকশন এবং মুখে খাওয়াদুই ধরনের ওষুধই সহজলভ্য।

 

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন

শেয়ার
বিজিবি মোতায়েন
শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সচিবালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে বের করে দেয়। গতকাল সকালে ফটকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। ছবি : শেখ হাসান
মন্তব্য

পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।

অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।

এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বদলের পরপরই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন অস্থিরতা দেখা দেয় এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। আগের সরকারের সময় নানা সুবিধা পাওয়া অনেক ঠিকাদার প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ফলে নতুন সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে থাকে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।

এসব প্রকল্পের জন্য সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছর শেষে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ পুরো বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশের মতো অর্থ খরচই হয়নি।

অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।

অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে জুন মাসে খরচ হয়েছিল ৫৮ হাজার ৭৪২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা ছিল বরাদ্দের ২৩.০৯ শতাংশ। অর্থাৎ মাসিক হিসাবেও ব্যয় কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।

আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।

এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতাএই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

 

 

 

মন্তব্য
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির

কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
শফিকুর রহমান

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।

গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্যঅতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।

নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে, কোনো   মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না।

স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেইজনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ কিসের রাজনীতি যে জনগণকে সাফারিংয়ের মধ্যে রেখে দেব?

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে। আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।

আমরা কাউকে কোনো মাস্টারমাইন্ড মানি না এবং নিজেদেরও মাস্টারমাইন্ড দাবি করি না। যদি আমরা নিজেদের মাস্টারমাইন্ড বলি তবে বাকি সবাইকে আন্ডারমাইন্ড করা হবে।

তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিইচারিত্রিক সম্পদের অভাব। দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেনআমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেনআমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি। তিনি দুঃখ করে বলেন, এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।

মন্তব্য

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।

গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।

আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। অনেকের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আহত হয়েছে শতাধিক। তিনি আরো লেখেন, নিহতের তালিকায় থাকা মেহরিন চৌধুরী অনেক শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেছেন।
শিশুদের রক্ষায় তিনি ধোঁয়া ও আগুনের স্ফুলিঙ্গের মধ্যে চলে যান। তাঁর এই সাহসিকতা ভোলার মতো নয়। বাংলাদেশের প্রতি সংহতি জানিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম লেখেন, আমি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখে সমবেদনা জানাব। এই দুঃখের মুহূর্তে আমরা আপনার পাশে আছি।
আমরা প্রতিটি হারানো প্রাণের জন্য শোকাহত এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই। উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ