কয়েক দিন ধরে গলা আর বুক জ্বালা করছিল আব্দুল মালেকের। চিকিৎসার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিন্তু রোগীর চাপ থাকায় ফিরে আসতে হয়। বিকেলে আবার সেখানে যান।
‘চিকিৎসক সময় নিয়া আমার কথা শুনছেন’
- কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

এতেও খুশি যশোরের কেশবপুর উপজেলার ভ্যানচালক আব্দুল মালেক (৫৮)।
দেশে গত ৩০ মার্চ পরীক্ষামূলকভাবে জেলা পর্যায়ে ১২টি ও উপজেলা পর্যায়ে ৩৯টি হাসপাতালে চলছে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা। চিকিৎসকরা সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিজ হাসপাতালে বসে রোগী দেখছেন। এই সময়ে রোগীরা তাদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষাও করাতে পারে।
কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আখেরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বিকেলে রোগীর চাপ কম থাকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর বলেন, রোগীদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট চিকিৎসক নিয়োজিত থাকেন। কবে কোন চিকিৎসক সেবা দেবেন, তা উল্লেখ করে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ব্যানার দেওয়া হয়েছে। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় আজ (গতকাল) দুজন রোগী সেবা নিয়েছে।
এ বছরের মধ্যে দেশের সব জেলা-উপজেলায় এই কার্যক্রম চালুর আশা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ধবৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, এ দেশে প্রচুর মানুষ, প্রচুর রোগী। হাসপাতালগুলোতে বারান্দায় রোগী রাখতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারের ভাবনা সরকারের ভালো উদ্যোগ। তবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার অবকাঠামো পর্যাপ্ত নয়। রাজধানীর বাইরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানের পদ খালি। এসব বিষয়ে একটু কাজ করা উচিত।
চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সেসের সাবেক উপাচার্য ডা. লিয়াকত আলী বলেন, নীতিগতভাবে এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর প্রচার খুব একটা হয়নি। সরকারের উচিত আরো বেশি বেশি প্রচার করা। এতে সরকারি অবকাঠামোর যে সীমিত ব্যবহার, তা অনেক বেশি ব্যবহার করা যাবে। জনগণ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সুলভ মূল্যে একটা নৈতিক পরিবেশে সেবা পাবে। এতে একটা বড় সুবিধার বিষয় আছে। তবে এর সঙ্গে আরো কিছু সমন্বিত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
তিনি বলেন, যখন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা সেবা দেবেন, তখন সেখানে ডায়াগনস্টিক ফ্যাসিলিটিসহ অন্যান্য চিকিৎসা অবকাঠামো যদি না থাকে, তাহলে রোগীর আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাইরে যেতে হবে। এই সমস্যা যেন না হয়।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স