ভালো বেতনে গার্মেন্টে কাজের আশ্বাসে কিরগিজস্তানে পাচার হওয়া ১৩ বাংলাদেশি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন পাচারকারীদের হাতে আটক রয়েছেন। ছয়জন পালিয়ে সেখানকার ওয়াসিস নামের একটি সংস্থার হোমে আশ্রয়ে আছেন। আটকদের ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক নির্যাতন।
কিরগিজস্তানে ১৩ বাংলাদেশির মানবেতর জীবন
- বেতন চাইলেই মারা হয় চাবুক
যশোর প্রতিনিধি

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট তাহমিদ আকাশ ও আবু মহসিন। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন ওয়াসিসের হোমে থাকা কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মো. আসাদুজ্জামান।
তাঁদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, কারখানায় আটকে রেখে তাঁদের দিয়ে নির্ধারিত সময়েরও বেশি অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া হতো। বেতন চাইলে তাঁদের ওপর চাবুক চালানো হতো। এ ছাড়া কথায় কথায় কিল-ঘুষি তো রয়েছেই। কুমিল্লার মুরাদনগরের মো. ওলিউল্লাহও একই রকম বর্ণনা দেন।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাত মাস আগে মাহমুদুল হাসান মীর নামের এক দালাল বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ১৪ জনকে কিরগিজস্তানে গার্মেন্টে কাজে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এ জন্য তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে তিন লাখ করে টাকা নেন। সবাইকে বলা হয়, কিরগিজস্তানে একেকজনের বেতন হবে ৬০০ ইউএস ডলার এবং কাজের সময় আট ঘণ্টা। কিন্তু ১৪ বাংলাদেশি কিরগিজস্তানে যাওয়ার পর সঠিক কাজ ও মজুরি পাননি। তাঁদের গার্মেন্টে কাজ না দিয়ে একটি কাপড়ের ছোট কারখানায় কাজ দেওয়া হয়।
পাচারকারীদের হাতে আটক থাকা শ্রমিকরা হচ্ছেন—কুমিল্লার চান্দিনার মো. শরিফুল ইসলাম, মুরাদনগরের মো. আলমগীর হোসেন, একই এলাকার দেলোয়ার হোসেন, আবু মুসা, জাহাঙ্গীর আলম, নরসিংদীর সামসুল ইসলাম ও চুয়াডাঙ্গার মো. নুরুজ্জামান।
ওয়াসিসের শেল্টার হোমে রয়েছেন কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মো. আসাদুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের মো. সজল মিয়া, নারায়ণগঞ্জ বন্দরের আমির হামজা, কুমিল্লার মুরাদনগরের মো. ওলিউল্লাহ, দেবিদ্বারের মো. লিমন এবং চুয়াডাঙ্গার বিপুল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্ট মেসার্স মক্কা মদিনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (আরএল নং-৮১০) ও মেসার্স আল লাবিন ইস্টাবলিশমেন্ট লিমিটেড (আরএল নং ৮৮৪) ওই শ্রমিকদের কিরগিজস্তানে পাঠিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে রাইটস যশোর এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সচিব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সচিব প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আইজিপি পুলিশ হেড কোয়ার্টার, তাসখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের অ্যাম্বাসাডর, কিরগিজস্তানের কনসুলেটসহ সংশ্লিষ্ট সব জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার দপ্তরে বিষয়টি উল্লেখ করে পত্র দিয়েছে। ওই বাংলাদেশিদের দ্রুত উদ্ধারে তিনি সরকারের সহযোগিত কামনা করেন।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সজল মিয়ার মা ওয়াহেদা খাতুন গত ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মাহমুদ হাসান মীরের নামে মামলা করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স