মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারের পথ ধরে এবার ক্রিস্টাল মেথ বা আইস পাচারের হিড়িক পড়েছে। ২০১৯ সালে ঢাকায় প্রথম নতুন ধরনের এই মাদকের অস্তিত্ব মেলে। দুই বছর না পেরোতেই মিয়ানমার-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম পথটিকে আইস পাচারের জন্য ‘নিরাপদ’ ভাবছে পাচারকারীরা। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত জব্দ হওয়া ১৬টি চালানের তথ্য পর্যালোচনা করে ইয়াবা পাচারের পথ ধরেই যে দেশে আইস ঢুকছে সেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ইয়াবার পথে ঢুকছে আইস
বাহক পড়ছে ধরা, হোতারা আড়ালে
এস এম রানা, চট্টগ্রাম

আইসের ব্যাপারে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াবার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নেশা হয় আইস সেবনে। ফলে মাদকসেবীদের শারীরিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়। কিন্তু নেশাগ্রস্তরা সেটা বুঝতে পারে না।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বহনকারীদের ধরতে পারলেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আইস পাচার করে আনা মূল হোতাদের শনাক্ত করতে পারছে না।
১৬টি অভিযানের মধ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ মাসে চলে ৯টি অভিযান।
আইস পাচারের এমন বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা।
সিরাজুল মোস্তফার তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ সালাম কবিরের কথায়। তিনি বলেন, বর্তমানে উচ্চবিত্ত পরিবারের কিছু বখে যাওয়া সন্তান আইস সেবন শুরু করেছে। আগে ইয়াবা সেবনে আসক্ত থাকা নেশাগ্রস্তরাই মূলত আইসের গ্রাহক। বেশি দামের কারণে এখন পর্যন্ত উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা মাদকসেবী তারাই শুধু আইস সেবন করছে, নিম্নবিত্তরা এখনো আইসের নাগাল পায়নি।
সিরাজুল মোস্তফা আরো বলেন, ‘ইয়াবা পাচারের পথ ধরেই আইস আসছে। পাচারকারীও অভিন্ন। এর সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিক যেমন জড়িত, তেমনি বহনকারী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে রোহিঙ্গরাও।’ পাচার রোধে করণীয় কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করলেই পাচার রোধ সম্ভব। পাচারের ধরন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কেউ শরীরে কৌশলে লুকিয়ে, কেউ বাসার মালামাল ঢাকায় নেওয়ার নাম করে কিংবা কেউ বাজারের থলের ভেতরে লুকিয়ে পাচার করছে আইস, যা দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচারকারীদের কৌশলের মতোই অভিন্ন।
আইসের চাহিদা ও জোগান বাড়ার বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের উপপরিচালক হুমায়ুন কবির খোন্দকার বলেন, মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ এখন ইয়াবা ছেড়ে আইসের দিকে ঝুঁকছে, এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে চাহিদা ও জোগান বেড়েছে। আবার ধরাও পড়ছে বেশি। আইস জব্দের তথ্য পর্যালোচনা করে কিছু উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের চাহিদা বেড়ে যাওয়া ও ইয়াবার বদলে আইসের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রমাণ মিলেছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও ফেনীতে সর্বনিম্ন পাঁচ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ তিন কেজি পর্যন্ত ১৬টি আইসের চালান ধরা পড়ে।
মূল পাচারকারীদের মিলছে না খোঁজ : ১৭ জুন কর্ণফুলী থানা পুলিশের অভিযানে আইসসহ গ্রেপ্তার হওয়া মো. সাগরের নামে অভিযোগপত্র দাখিলের তথ্য নিশ্চিত করেন ওই থানার ওসি দুলাল মাহমুদ। তিনি বলেন, সাগরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সাগর যাঁর কাছ থেকে আইস সংগ্রহ করেছিলেন, তাঁর নামও বলেছিলেন। তবে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করতে পারেনি। শেষে সাগরকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
২০০ গ্রাম আইসহ চন্দনাইশ থেকে গ্রেপ্তার আতাউল করিমের নামে অভিযোগপত্র জমা দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কিন্তু বহনকারী আতাউল করিম ছাড়া মূল পাচারকারীকে শনাক্ত করতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক হুমায়ুন কবির খোন্দকার বলেন, মূল পাচারকারীকে ধরা যায়নি। তবে আতাউল দাবি করেছেন, তিনি নিজেই টেকনাফ থেকে এক রোহিঙ্গার কাছ থেকে আইস সংগ্রহ করেছিলেন। আতাউল যাঁর কাছ থেকে আইস সংগ্রহ করেছেন এবং চট্টগ্রাম নগরীতে যাঁর কাছে সরবরাহ করার কথা ছিল, ওই দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। একইভাবে কোতোয়ালি ও খুলশী থানায় দায়ের করা মামলাগুলোতে বহনকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সেই মামলায়ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা পাচারকারীদের শনাক্ত করতে পারেননি।
চট্টগ্রামের মতো কক্সবাজারেও একই অবস্থা। মূল পাচারকারীকে শনাক্ত না করেই অভিযোগপত্র দাখিলের ঘটনা ঘটেছে। গেল ৪ মার্চ কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে দুই কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোপগত্র জমা দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, আবদুল্লাহ আইস সংগ্রহ করেছিলেন পলাতক আবদুর রহমানের কাছ থেকে। রহমানকেও অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি করা হয়েছে। তবে মিয়ানকার থেকে কে পাচার করে দেশে এনেছেন সেটা বের করা যায়নি।
তৎপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী : ইয়াবার পথ ধরে আইস পাচারের ব্যাপারে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া পাচারকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইয়াবার পথ ধরেই দেশে ঢুকছে আইস। আগে সাগরপথে বেশি ইয়াবা পাচার হলেও এখন মিয়ামনার-বান্দরবান সীমান্তের গহিন অরণ্য পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করছেন পাচারকারীরা। তিনি আরো বলেন, গত ১ অক্টোবর বান্দরবানের আলীকদম এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার লাখ ৯৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এখন ইয়াবার বড় চালান গহিন অরণ্য দিয়েও পাচার হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে পাহাড়ি পথে বান্দরবানে ঢোকার পর সেখান থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন


পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন
এম আর মাসফি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।
অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।
আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।
এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।
এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতা—এই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।
গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য—অতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।
স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেই—জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়—রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে।’ আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।
তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিই—চারিত্রিক সম্পদের অভাব।’ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেন—আমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেন—আমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি।’ তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।’

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।
গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।