ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৮ মহররম ১৪৪৭

আরো ৯০০ দুস্থ পরিবার পেল বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা

  • সিরাজগঞ্জের ৯ উপজেলায় ৩ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ শেষ
অসীম মণ্ডল ও নাজমুল হুদা, সিরাজগঞ্জ থেকে
অসীম মণ্ডল ও নাজমুল হুদা, সিরাজগঞ্জ থেকে
শেয়ার

আরো ৯০০ দুস্থ পরিবার পেল বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা
সিরাজগঞ্জ জেলার শহীদ এম মনসুর আলী অডিটরিয়ামে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা বিতরণ কাজে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ। ছবি : কালের কণ্ঠ

বাঘা সূত্রধর। পরনে ছেঁড়া গেঞ্জি আর চিটচিটে ধুলোর আস্তরণে মোড়ানো লুঙ্গি। ১৫ বছর আগে বার্জারস রোগের কারণে এক পা কেটে ফেলতে হয়। একই সমস্যায় আট বছর আগে অন্য পাও কেটে ফেলতে হয়।

কৃত্রিম পা লাগিয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে এখন চলেন। তবে কাজ করার সামর্থ্য নেই তাঁর। পরিবারে আছেন বৃদ্ধ বাবা শচীন্দ্রনাথ সূত্রধর। ৯০ বছর বয়সেও বাধ্য হয়ে কাজ করেন তিনি।
সামান্য যেটুকু আয়, তা দিয়ে খেয়ে-না খেয়ে বেঁচে আছেন তাঁরা। গতকাল সোমবার সিরাজগঞ্জের জেলা শিল্পকলা একাডেমির শহীদ এম মনসুর আলী অডিটরিয়ামে বাঘার হাতে তুলে দেওয়া হয় বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা। খাদ্য সহায়তা পেয়ে অশ্রুসিক্ত বাঘা বলেন, ‘আমি তো এর আগেও ইলিপ নিছি। এত ফাইন কইরা কেউই দেয় নাই।
এখানে এত বড় ঘরের ভিতারে বসাইয়া ত্রাণ দিছে। আল্লাহ বসুন্ধরার ভালো করুক।’

বাঘা সূত্রধরের মতো আরেক প্রতিবন্ধী দেলোয়ার হোসেন। বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হলে তাঁর দুই হাত কেটে ফেলা হয়। এর পর থেকে কর্মক্ষমতাহীন তিনি।

বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে দেলোয়ার বলেন, ‘তোমরা এত ফাইন অডিটারে সাহায্য দিলেন। এর আগে কহনো পাই নাই। আল্লাহ তাগের হায়াত দিক। আরো দিবার তৌফিক দিক। বসুন্ধরার জন্য আন্তরতে দোয়া দেই।’

গতকাল সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা ও কামারখন্দ—এই দুই উপজেলায় এদের মতো ৯০০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। এর মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলায় তিন হাজার অসহায় পরিবারের মধ্যে বসুন্ধরার সহায়তার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কাজ শেষ হয়েছে গতকাল। এ সময় সবার মাঝে মাস্ক বিতরণ এবং করোনা সুরক্ষায় সচেতনতামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতকাল সদর উপজেলার শহীদ এম মনসুর আলী অডিটরিয়ামে ৪৫০ এবং কামারখন্দের সরকারি হাজি কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজ মাঠে আরো ৪৫০ দুস্থ পরিবারের হাতে এই খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

বাসের হেলপারি করে সংসার চালাতেন আব্দুস সামাদ। লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তার খাদ্যসামগ্রী পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে তাঁর। সামাদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বসুন্ধরা গ্রুপ যে উপকার করছে তা আমাগের খুব কাজে লাগছে। আল্লার কাছে দোয়া করি মেলা দিন বাঁচায় রাখুক তোমাগের। কামাই-কাজে যেন ভালো হয়। বাল-বাচ্চারে যেন মুসিবত না দেয়।’

বৃদ্ধ নূর ইসলাম খাদ্যসামগ্রী পেয়ে বলেন, ‘এর আগে কহনো সাহায্য পাই নাই। এটাই প্রথম পাইলাম। আমারে এহনো বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয় নাই। তোমাগের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন বসুন্ধরার আরো উন্নতি দেয়। বসুন্ধরা যেন আরো দান করবার পারো।’

সদর উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কাজে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘সরকারিভাবে আমরা চেষ্টা করেছিলাম লকডাউনে কর্মহীন ও অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার। সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপও দেশজুড়ে অসহায় ও কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। সিরাজগঞ্জ জেলায় তিন হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ায় আমি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা

জানাই। আর শুভসংঘকে ধন্যবাদ জানাই প্রকৃত দুস্থদের খুঁজে বের করে তাদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য। করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে আপনারা সবাই টিকা নিবেন। সব সময় সঠিকভাবে মাস্ক পরবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। সরকারের দেওয়া বিধি-নিষেধ মানবেন।’

সদরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকাজে আরো উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল হামিদ মিয়া, সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হেলাল আহমেদ এবং শুভসংঘের সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি চিকিৎসক ডা. নিত্য রঞ্জন পাল।

কামারখন্দে বসুন্ধরার খাদ্যসামগ্রী বিতরণকাজে যোগ দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, ‘শুভসংঘের সদস্যদের আয়োজনে বসুন্ধরা গ্রুপ কামারখন্দ উপজেলায় ৪৫০ দুস্থ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। আমি আমাদের এই উপজেলার পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বসুন্ধরা গ্রুপের আজকের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমটি খুব সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও যদি আপনারা আবার এই উদ্যোগ নেন, আমি অনুরোধ করব, কামারখন্দ উপজেলার দরিদ্র মানুষের কথা মনে রাখবেন। আপনাদের এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা করি। আপনাদের মঙ্গল কামনা করি।’

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘সরকারের সহায়তায় আমরা সব উপজেলায় দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছি। আজকে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শুভসংঘ আপনাদের সাহায্য করেছে। করোনাকালে তাদের এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাই। আপনারা সবাই করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা নিবেন। সবাই মাস্ক পরবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।’

কামারখন্দে আরো উপস্থিত ছিলেন সরকারি হাজি কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইবুল আলম সরকারসহ স্বেচ্ছাসেবী মিজানুর রহমান মিজু, কারিমুল ইসলাম, মাসুদ, পাহাল, সুমন, রবিন, রবিন হাসান, উৎস ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের নেতারা।

গতকাল খাদ্যসামগ্রী বিতরণের দুটি কাজেই উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মো. ইমরান হোসেন, সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির উপদেষ্টা প্রদীপ সাহা, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি আব্দুস সামাদ সায়েম, শুভসংঘের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন আলীসহ সুজিত সরকার, তোফায়েল আহমেদ তমাল, অশোক ব্যানার্জি, অর্ণব মণ্ডল, মাহমুদুল, আজমীর, রমেন, গোলাম মোস্তফা রুবেল ও উত্তরা ইউনিভার্সিটির সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন রনি।

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন

শেয়ার
বিজিবি মোতায়েন
শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সচিবালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে বের করে দেয়। গতকাল সকালে ফটকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। ছবি : শেখ হাসান
মন্তব্য

পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।

অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।

এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বদলের পরপরই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন অস্থিরতা দেখা দেয় এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। আগের সরকারের সময় নানা সুবিধা পাওয়া অনেক ঠিকাদার প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ফলে নতুন সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে থাকে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।

এসব প্রকল্পের জন্য সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছর শেষে ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ পুরো বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশের মতো অর্থ খরচই হয়নি।

অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।

অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে জুন মাসে খরচ হয়েছিল ৫৮ হাজার ৭৪২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা ছিল বরাদ্দের ২৩.০৯ শতাংশ। অর্থাৎ মাসিক হিসাবেও ব্যয় কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।

আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।

এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতাএই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

 

 

 

মন্তব্য
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির

কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
শফিকুর রহমান

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।

গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্যঅতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।

নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে, কোনো   মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না।

স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেইজনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ কিসের রাজনীতি যে জনগণকে সাফারিংয়ের মধ্যে রেখে দেব?

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে। আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।

আমরা কাউকে কোনো মাস্টারমাইন্ড মানি না এবং নিজেদেরও মাস্টারমাইন্ড দাবি করি না। যদি আমরা নিজেদের মাস্টারমাইন্ড বলি তবে বাকি সবাইকে আন্ডারমাইন্ড করা হবে।

তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিইচারিত্রিক সম্পদের অভাব। দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেনআমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেনআমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি। তিনি দুঃখ করে বলেন, এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।

মন্তব্য

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।

গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।

আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। অনেকের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আহত হয়েছে শতাধিক। তিনি আরো লেখেন, নিহতের তালিকায় থাকা মেহরিন চৌধুরী অনেক শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেছেন।
শিশুদের রক্ষায় তিনি ধোঁয়া ও আগুনের স্ফুলিঙ্গের মধ্যে চলে যান। তাঁর এই সাহসিকতা ভোলার মতো নয়। বাংলাদেশের প্রতি সংহতি জানিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম লেখেন, আমি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখে সমবেদনা জানাব। এই দুঃখের মুহূর্তে আমরা আপনার পাশে আছি।
আমরা প্রতিটি হারানো প্রাণের জন্য শোকাহত এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই। উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ