দক্ষিণে বিমানবন্দরের বিপরীত পাশের সড়ক থেকে উত্তরে তুরাগতীরের আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং এলাকার অলিগলির ফুটপাতে হাত মেপে বসানো হয়েছে দোকান। উত্তরা এলাকার ফুটপাতে প্রায় ১০ হাজার দোকান রয়েছে। এসব দোকান বসাতে অগ্রিম নেওয়া হয়েছে অন্তত সাত কোটি টাকা। আর প্রতিদিন চাঁদাবাজি হয় ২৫ লাখ টাকা।
অগ্রিম ৭ কোটি, দিনে চাঁদা ২৫ লাখ টাকা
লায়েকুজ্জামান

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতি সন্ধ্যায় ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য লোক রয়েছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব বদল হওয়ার পর পরিবর্তন এসেছে চাঁদাবাজ নেতাদেরও। তবে বেশ কয়েকজন রয়েছেন যাঁরা আগেও ফুটপাতে চাঁদাবাজি করতেন, এখনো করছেন। নেতৃত্ব বদলের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা আনুগত্য বদলে মিশে গেছেন নতুন নেতার সঙ্গে। এমন তিন চাঁদাবাজ হলেন উত্তরা পশ্চিম থানা শাখা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল, একই সংগঠনের পরিচয় দেওয়া উজ্জল এবং আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ এলাকার কথিত যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন। এক যুগ ধরেই তাঁরা দাপটের সঙ্গে চাঁদাবাজি করে চলেছেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ফুটপাতের দোকানভেদে অগ্রিম নেওয়া হয়েছে তিন হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। গড়ে কমপক্ষে সাত হাজার টাকা করে ধরলেও অগ্রিম নেওয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় সাত কোটি টাকা। প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয় ২০০ ৭০০ টাকা পর্যন্ত। গড়ে কমপক্ষে ২৫০ টাকা ধরলেও দিনে চাঁদা আদায় হয় ২৫ লাখ টাকা।
যেসব এলাকায় চাঁদাবাজি : বর্তমানে যে এলাকাগুলোতে ফুটপাতে দোকান বসিয়ে চাঁদা তোলা হচ্ছে, সেসব এলাকা হচ্ছে জসীমউদ্দীন এভিনিউ থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত প্রধান সড়কের দুই পাশ, জসীমউদ্দীন এভিনিউয়ের পূর্ব থেকে পশ্চিমে পাকা সড়ক পর্যন্ত, রাজলক্ষ্মী বিপণিবিতান থেকে পশ্চিমে ফ্রেন্ডস ক্লাব হয়ে ৫ নম্বর সেক্টরের কল্যাণ সমিতির কার্যালয় পর্যন্ত, রবীন্দ্র সরণি থেকে পশ্চিমে লাবাম্বা কাবাবের দোকান পর্যন্ত, মাস্কাট প্লাজা থেকে সোনারগাঁ জনপথ সড়ক হয়ে পশ্চিমে লেক পর্যন্ত, পূর্ব দিকে আলাওল এভিনিউ হয়ে রেললাইন পর্যন্ত, ঈশা খাঁ এভিনিউ হয়ে রাজউক কলেজ, শাহাজালাল এভিনিউ থেকে আজমপুর মোড়, আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পূর্বে রেললাইন, ৭ নম্বর সেক্টরের ৩৫ নম্বর সড়ক, আমিন কমপ্লেক্স থেকে এইচএম প্লাজা, গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ, ময়লার মোড়, শাহ মখদুম এভিনিউ, সাউথ ব্রিজ সু্কলের সামনের সড়ক, বিমানবন্দরের বিপরীত দিকের সড়ক ও আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ এলাকা।
ফুটপাতের এসব দোকানে প্রসাধনসামগ্রী, জুতা, শাড়ি, পোশাক, বিছানার চাদর, ফাস্ট ফুডের দোকান, ভাতের হোটেল থেকে শুরু করে সব পণ্যই বিক্রি হয়। সোনারগাঁ জনপথ সড়কের কাপড়ের দোকানি জামসেদ আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রায় তেরো বছর হইল এখানে ব্যবসা করি, সমস্যা হয় না। শুধু নতুন নতুন চাঁদাবাজ আসে। চাঁদাটা ঠিকমতো দিলে সমস্যা নেই। তবে চাঁদাবাজ বদল হলে আবার নতুন করে অগ্রিম টাকা দিতে হয়।’
মাস্কাট প্লাজার সমানের ফুটপাতের বস্ত্রসামগ্রী বিক্রেতা সোহান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে চাঁদা নেন রাসেল। উনি আগেও ছিলেন, এখনো আছেন। অন্যান্য জায়গায় নতুন চাঁদাবাজ এলেও রাসেলের বদল হয়নি।’
গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ এলাকার ফুটপাতের ফাস্ট ফুডের এক দোকানি অনুরোধ করেন যেন তাঁর নাম ছাপা না হয়। তাঁর ভাষায়, ‘পত্রিকায় নাম এলে আপনি আমাকে বাঁচাতে পারবেন না।’ তিনি বলেন, ‘এক টাকা রোজগার না হলেও হুমায়ুন নামের ছেলেটাকে হাওলাত করে চাঁদা দিতে হয়, না হলে মারধর করে, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে।’
চাঁদাবাজিতে যাঁদের নাম আসছে : ফুটপাতের দোকান থেকে আদায় করা চাঁদার টাকার ভাগ নেন উত্তরা পশ্চিম থানা শাখা আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম। তিনি ২০১২ সালে গঠিত উত্তরা থানা যুবদলের সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। নুরুল আমিন নুরুর বাড়ি উত্তরা পশ্চিম থানায় হলেও তিনি অধিপত্য বিস্তার করে আছেন উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায়। তিনিও চাঁদার টাকার ভাগ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যদিও নজরুল ইসলাম ও নুরুল আমিন দুজনই কালের কণ্ঠ’র কাছে দাবি করেন, তাঁরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন। তাঁদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তবে উত্তরায় চাঁদাবাজদের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত কৃষক লীগ নেতা রাসেল কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘আমি চাঁদা তুলে নেতাদের ভাগ দিই। নেতারাই বেশির ভাগ টাকা নিয়ে নেন।’
আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ এলাকার দোকান থেকে চাঁদা আদায় করেন কথিত যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন। তিনি চাঁদার টাকার ২০ শতাংশ রেখে বাকি টাকা জমা দেন মুক্তা মিয়া নামের একজনের কাছে। মুক্তা মিয়া ওই টাকা জমা দেন মতি নামের আওয়ামী লীগের এক নেতার কাছে।
তবে জাকির হোসেন কালের কণ্ঠ’র কাছে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গরীবে নেওয়াজ এভিনিউয়ের ফুটপাতের দোকান থেকে পদহীন যুবলীগ নেতা ইফতেখারুল ইসলাম জুয়েলের নামে চাঁদা আদায় করেন হুমায়ুন নামের এক যুবক।
রাজউকের প্লটে ফার্নিচার মার্কেট : ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালী একটি গ্রুপ সোনারগাঁ জনপথ সড়কে রাজউকের ১৮টি প্লট অবৈধভাবে দখলে নিয়ে ফার্নিচার মার্কেট তৈরি করেছে। সেখানে দোকান আছে ৮০টি। প্রতিটি দোকান থেকে মাসে ভাড়া আদায় করা হয় ৪০ হাজার টাকা করে। সে হিসাবে মাসে ভাড়া আদায় হয় ৩২ লাখ টাকা।
রাজউকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে তাঁরা প্রকৃত মালিকদের প্লট বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। তবে শিগগিরই তাঁরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের প্লট দখল করে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায় করছেন ইফতেখারুল ইসলাম জুয়েল। এলাকায় নিজেকে যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও তিনি সংগঠনের কোনো পদে নেই। অভিযোগ রয়েছে, একসময় তিনি ছাত্রদল নেতা আজিজুল বারী হেলালের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। মার্কেটের ৫৪ নম্বর দোকানটি তাঁর। ২৯ নম্বর দোকানের আংশিকও তাঁর দখলে। এলাকার কিশোর গ্যাংকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কিছুদিন আগে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর জুয়েলকে পুলিশ আটক করলেও খুব প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতার অনুরোধে জিডি মুছে ফেলে তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। ফার্নিচার মার্কেটের সঙ্গে আরো জড়িত রয়েছেন এক ক্ষমতাশালী রাজনীতিকের ভাগ্নে কবির হাসান। আরো রয়েছেন শ্রমিক নেতা ইউনুস ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার দলীয় নেতা সোহেল।
ফার্নিচার মার্কেটে দোকান ও ফুটপাতে চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে ইফতেখার হোসেন জুয়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, এগুলো অপপ্রচার। আমি বিত্তবান ঘরের সন্তান। নিজে ব্যবসা করি, রাজনীতি করি। আমার চাঁদাবাজির প্রয়োজন হয় না।’
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আকতারুজ্জামান ইলিয়াস কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে চাঁদাবাজি হয়। এগুলো বস্তির লোকেরা করে।’
উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মো. কামালউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভাই, আপনি-আমি একই দেশেই বসবাস করি, বাস্তবতাটা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক সময় আমরা চাইলেও ফুটপাত থেকে দোকান উচ্ছেদ করতে পারি না। চাঁদাবাজিও বন্ধ করতে পারি না। তবে চেষ্টা করি তুলে দিতে, আবার এসে বসে।’
সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত


সুজনের সংলাপে রাজনৈতিক ও নাগরিক নেতারা
জাতীয় সনদ প্রণয়নে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বদল নিশ্চিত করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সনদ প্রণয়নে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বদলের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, শেখ হাসিনা যে পথে চলে স্বৈরাচার হয়েছিলেন, সেই পথে চললে স্বৈরাচার হবেন, এটা নিশ্চিত। প্রয়োজন ওই পথ বন্ধ করা, অর্থাৎ স্বৈরাচারীব্যবস্থার পরিবর্তন। তাই নির্বাচনীব্যবস্থা পরিবর্তন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) আয়োজিত ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে প্রস্তাবিত জাতীয় সনদ সম্পর্কে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন তাঁরা। সুজন সভাপতি বিচারপতি এম এ মতিনের সভাপতিত্বে ও সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার কমিশনের সভাপতি ড. তোফায়েল আহমেদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনুভা জাবিন, বাংলাদেশ জাসদের ডা. মুশতাক হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সাবেক সচিব আব্দুল আওয়াল মজুমদার, প্রফেসর গাজী জাহিদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, সুজনের কেন্দ্রীয় সদস্য একরাম হোসেন প্রমুখ।
সংলাপে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের জন্য সুজনের দেওয়া ২১ দফা প্রস্তাব হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানে দ্বিকক্ষ সংসদ, মন্ত্রিপরিষদ ‘শাসিত’ সরকার, ক্ষমতার ভারসাম্য, সংসদ সদস্য প্রত্যাহার, মৌলিক অধিকারের পরিধি বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৃণমূলে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জনগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ সর্বপ্রথম আমরাই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। সে অনুযায়ী চলমান সংস্কারকাজে আমরা সহযোগিতা করেছি।
বিচার ও সংস্কারের পাশাপাশি আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে পারেনি। ফলে বৈষম্য, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘মেরুদণ্ডহীন ও সবচেয়ে দুর্বল’ আখ্যা দিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, স্বাধীনতার পর কোনো সরকার এত বড় সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় রাজনৈতিক শক্তিগুলো এ সরকারকে সহযোগিতা করছে। সিভিল সোসাইটিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলেরও সমর্থন রয়েছে। তবু সরকার নিজে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
বিদ্যমান সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনগণ শেখ হাসিনার সরকারকে ফেলে দিয়েছে উল্লেখ করে ডা. তাসনুভা জাবিন বলেন, এনসিপি নির্বাচন ভয় পায় না। তবে নির্বাচনব্যবস্থায় গলদ আগে পরিবর্তন করতে চায়। এ জন্য মৌলিক সংস্কার হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, বৈপ্লবিক পরিবর্তন না এলেও যেগুলোতে ঐকমত্য এসেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলেও রাষ্ট্রব্যবস্থায় সত্যিকার অর্থে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। চলতি মাসেই জাতীয় সনদ প্রণয়নের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জামায়াত আমির
শহীদ পরিবার ভিক্ষা নয়, সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চায়
নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা কারো করুণা বা ভিক্ষা চান না, তাঁরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চান। গতকাল শনিবার জুলাই শহীদদের স্মরণে ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য চাকরি বা সুযোগ-সুবিধা দেওয়াকে অনেকে কোটা বলছেন। কিন্তু এটাকে কোটা বলা যায় না।
শফিকুর রহমান জানান, শহীদদের অন্তত ৭০ শতাংশ ছিলেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
জামায়াত আমির বলেন, “শহীদ পরিবারগুলো এখন ‘জুলাই সনদ’-এর দাবি তুলেছে। এটি কেবল তাদের দাবি নয়, এটি ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সনদ।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে বলেন, জুলাইয়ের শহীদরা জীবন না দিলে আজ আপনাদের কেরানীগঞ্জ বা কাশিমপুর কারাগারে থাকতে হতো। তাই আগে জুলাই সনদ প্রণয়ন করুন, অন্য সব কাজ পরে হবে।
অনুষ্ঠানটি স্থানীয় সরকার বিভাগের সহযোগিতায় যৌথভাবে আয়োজন করে জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি এবং ন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্রসহ সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপর রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। নির্বাচনের আগে এসব অবৈধ অস্ত্র দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনস পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এখনো সব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি, তবে নির্বাচনের আগে এগুলো উদ্ধার করা হবে।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা যদি সত্য তুলে ধরেন, বিভ্রান্তি দূর হবে। আমরা চাই নিরপেক্ষভাবে সব তথ্য আসুক। রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের জন্য মাঠে থাকবে, আর আমাদের দায়িত্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক মামলার তদন্ত এগিয়েছে। তবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেককে আসামি করায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এলাকায় র্যাব-১১-এর সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে থাকলে তাদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করা হবে।
ঢাকার মোহাম্মদপুরে আলোচিত ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তিনজনকে গ্রেপ্তার ও ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তদল কাজ করছে। ওই সময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইসরাত জাহানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।