ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

করোনাভাইরাস কাগজে ছড়ায় না : নোয়াব

  • সবাইকে পত্রিকা পড়ার আহ্বান
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
করোনাভাইরাস কাগজে ছড়ায় না : নোয়াব

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ আতঙ্কিত ও উত্কণ্ঠিত হয়ে পড়েছে। এই আতঙ্কের বোধগম্য কারণ আছে। মানুষ এমন একটি জীবাণুর জন্য প্রস্তুত ছিল না। ফলে এই জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার যে ব্যাপ্তি এবং মৃত্যুর যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, তার বিপরীতে জীবাণুটির গতি-প্রকৃতি ও এতে সংক্রমিত রোগীর চিকিত্সা নিয়ে গবেষণা এখনো চলমান।

এই স্পর্শকাতর সময়ে গভীর সহমর্মিতায় নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) সবার সঙ্গে আন্তরিক একাত্মতা প্রকাশ করছে।

নোয়াবের পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটি একটি দুর্যোগের মুহূর্ত। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য। আমরা প্রত্যয় ও গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, এ দেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক, সামাজিক বা প্রাকৃতিক যেকোনো জাতীয় দুর্যোগে সংবাদপত্র সব সময় মানুষের পাশে ছিল।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়ও বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকাগুলো পাঠকদের জন্য সহায়ক এবং প্রতিকার ও সচেতনতামূলক তথ্য প্রকাশ করে আসছে। করোনাভাইরাস নিয়ে চলমান গবেষণা, নিত্যনতুন স্বাস্থ্যবিধি ও আচরণীয় এবং সফলতার ঘটনাগুলো প্রকাশ করছে পত্রিকাগুলো।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে মানুষের দুর্বলতার এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য পরিস্থিতি আরো নাজুক করে তুলছে। কাগজ থেকে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে, এমন অনুমানে কিংবা বিভ্রান্তির শিকার হয়ে অনেকে পত্রিকা পড়া থেকে বিরত থাকছেন।

প্রকৃতপক্ষে এই অনুমানের কোনো গবেষণালব্ধ ভিত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন তাদের গবেষণায় দেখেছে, করোনাভাইরাস বাতাসে বেঁচে থাকে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা, কার্ডবোর্ডে এক দিন এবং প্লাস্টিক ও স্টেইনলেস স্টিলে দুই থেকে তিন দিন। কিন্তু নানা ধরনের করোনাভাইরাস নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণারত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যারোলাইন ম্যাখামার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বলেছেন, নানা বস্তুতলে ভাইরাস টিকে থাকে কথাটা শুনতে ভীতিকর শোনালেও সেখানে তারা টিকে থাকতে পারে অত্যন্ত কম, মাত্র এক হাজার ভাগের এক ভাগ (০.১ শতাংশ)। বস্তুতল থেকে এ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা প্রায় নেই।’

তবে কাগজে করোনাভাইরাস টিকে থাকার কোনো তথ্য বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পাওয়া যায়নি।

করোনাভাইরাস সংক্রমিত এলাকা থেকে আসা কোনো মোড়ক গ্রহণ করা নিরাপদ কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সংক্রমিত ব্যক্তির মাধ্যমে বাণিজ্যিক পণ্য দূষিত হওয়ার আশঙ্কা কম। বিবিধ তাপমাত্রায় বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা পণ্যবাহী মোড়ক থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও যত্সামান্য। যুক্তরাষ্ট্রের দি ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বলেছে, কাগুজে পত্রিকার মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা নেই।

তা সত্ত্বেও নোয়াব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এর সব সদস্য পত্রিকার পক্ষ থেকে পত্রিকার এজেন্ট ও হকারদের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে নোয়াবের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ঢাকা নগরসহ সর্বত্র এজেন্ট ও হকারদের মধ্যে মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হচ্ছে। নোয়াবের পক্ষ থেকে এজেন্ট ও হকারদের জন্য এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে।

এ রকম একসময়ে সঠিক তথ্য জানা ও জানানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার সেরা উপায় একেবারে সাম্প্রতিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্যে নিজেকে প্রস্তুত রাখা। পত্রিকায় খবর পরিবেশন একটি পেশাদারি কাজ। খবর ছাপানোর আগে অভিজ্ঞ কর্মীদের মাধ্যমে নিবিড় যত্নের সঙ্গে তথ্য যাচাই ও বাছাই করা হয়। নির্ভরযোগ্য যেকোনো তথ্যের জন্য পত্রিকাই বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা। করোনাভাইরাস নিয়ে এই দুর্যোগের সময়েও প্রকৃত সুরক্ষা, সতর্কতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পত্রিকাই পাঠকদের পাশে জাগ্রত বন্ধুর মতো তত্পর রয়েছে।

সবার সুস্থতা, নিরাপত্তা ও মঙ্গলই আমাদের কাম্য। সবাইকে আমরা পত্রিকা পড়ার জন্য আহ্বান জানাই।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ