উচ্ছ্বাস আর আনন্দে মেতেছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। সবাইকে বিস্মিত করে গত রবিবার রাতে এখানে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে হাতিশাবক। পার্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, আবদ্ধ পরিবেশে বন্য হাতির শাবক প্রসবের নজির দেশে এটিই প্রথম। কৌতূহল আর আনন্দ ছুঁয়েছে দর্শনার্থীদেরও।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
হাতির সংসারে নতুন অতিথি
শরীফ আহেমদ শামীম ও শাহীন আকন্দ, গাজীপুর

সাফারি পার্কের বাসিন্দা মুক্তি রানী-শেল বাহাদুর হাতি দম্পতির সংসারে নতুন অতিথির আগমন ঘটে রবিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে। মা মুক্তি রানী প্রায় ৬০ কেজি ওজনের শাবকের জন্ম দেয়। শাবক পেয়ে মা মুক্তি রানীর আচরণ পুরোপুরি বদলে গেছে। শাবককে দুধ পান আর আদর করে কাটছে মায়ের সময়।
পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানান, হাতি বেষ্টনী থেকে শাবকসহ মা হাতিটি সরিয়ে রাখা হয়েছে। জন্মের পর শাবকটি মা হাতির সার্বক্ষণিক নজরে রয়েছে। শাবকসহ মা হাতিটি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে। শাবকটি তার মায়ের সঙ্গেই খেলছে, খুনসুটি করছে।
সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) ও পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন জানান, কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০১৩ সালে পাঁচটি বন্য হাতি আনা হয় এই পার্কে। ২০১৫ সালের ২১ মে আনা হয় আরো একটি হাতি। পার্কের মোট ছয়টি হাতির মধ্যে দুটি পুরুষ ও বাকি চারটি মাদি।
পার্কের প্রাণী পরিদর্শক সরোয়ার হোসেন খান জানান, গর্ভবতী হাতি মুক্তি রানী বেষ্টনীর মধ্যে অন্য হাতিগুলোর সঙ্গেই ছিল। রবিবার রাত ৮টার দিকে প্রসবব্যথা উঠলে সেটিকে আলাদা খোলা স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত ১০টা ৪৯ মিনিটে প্রাকৃতিকভাবেই মুক্তি রানী একটি ফুটফুটে শাবক প্রসব করে। মা হাতি নিজেই বাচ্চার জন্য নরম স্থান নির্ণয় ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নেয়। জন্মের পর মা নিজেই বাচ্চার শরীর পরিষ্কার করে দেয়। আর জন্মের ১৫ মিনিটের মধ্যে শাবকটি উঠে দাঁড়ায়। কয়েকবারের চেষ্টায় গতকাল সোমবার ভোরের দিকে শাবকটি প্রথম মায়ের দুধ পান করে। এ সময় মা তার শুঁড় দিয়ে বাচ্চাকে আদর করতে থাকে।
সরওয়ার হোসেন জানান, গর্ভধারণের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই তাঁরা মুক্তি রানীকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন এনে পরীক্ষার মাধ্যমে হাতির প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে কয়েক দিন ধরেই অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা।
গতকাল সকালে সাফারি পার্কে হাতির বেষ্টনীতে গিয়ে দেখা গেছে, মাহুত, বেষ্টনীর কর্মচারী এবং অন্যরা মা হাতি ও শাবকের খাবার, নিরাপত্তা ও তত্ত্বাবধান নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। তাদের চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক। শাবককে নিয়ে হাতিটি বেষ্টনীর পাশের ঝোপের ভেতর অবস্থান করছে। বাচ্চা মায়ের পাশে ঘুরঘুর করছে, খেলছে। মাঝেমধ্যে দুধ খাচ্ছে। মা বাচ্চার দিকে কঠোর নজরদারি করছে। কাছে এলে শুঁড় দিয়ে সন্তানকে আদর করছে।
সরোয়ার হোসেন আরো জানান, প্রসবের পর মা হাতি যেন অপুষ্টিতে না ভোগে সে জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবারসহ ওষুধও। গতকাল হাতিটিকে ২০ কেজি কলাগাছ, ৫০ কেজি মিষ্টি কুমড়া, ৫০ কেজি আখ, ১০ কেজি গাজর, ৩ কেজি জাউ ভাতসহ (তরল ভাত) তৃণজাতীয় খাবার দেওয়া হয়েছে।
পার্কের প্রাণী পরিদর্শক আনিছুর রহমান জানান, জন্মের পর শাবকটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ কেজি। সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির ওজন চার থেকে পাঁচ হাজার কেজি হয়ে থাকে। ১৮ থেকে ২০ বছরে হাতি প্রজনন সক্ষম হয়। এদের গর্ভকাল প্রাণিরাজ্যে দীর্ঘতম সময় ২০ থেকে ২২ মাস। হাতি সাধারণত চার থেকে পাঁচ বছর অন্তর একটি করে বাচ্চা প্রসব করে। সামনের দুই পায়ের মধ্যস্থলে বক্ষদেশে থাকে স্তন। হাতি শাবক সাড়ে তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে থাকে।
তিনি আরো জানান, গড় আয়ু ১০০ বছর বলা হয়ে থাকলেও হাতি ৬০ থেকে ৮০ বছরের বেশি বাঁচে না। দলবদ্ধ এই জন্তুর জীবদ্দশায় ছয়বার কষ দাঁত বের হয়। দাঁত গজানোর পর খাদ্য গ্রহণ করতে গিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে তা ক্ষয়ে যায়। কষ দাঁতের শেষ সেট গজায় ষষ্ঠ দশকে, যা ক্ষয়ে যাওয়ার পর খাদ্য গ্রহণ করতে না পেরে অনাহারে হাতির মৃত্যু হয়।
পার্কের প্রকল্প পরিচালক উপপ্রধান বন সংরক্ষক শামসুল আজম বলেন, সাফারি পার্ক কিংবা চিড়িয়াখানায় আবদ্ধ পরিবেশে (ক্যাপটিভিটি) হাতির শাবক প্রসবের ঘটনা এই দেশে বিরল। আর ওই বিরল ঘটনাটিই ঘটল এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, বেষ্টনীতে আগে থেকেই থাকা ছয়টি হাতির সবই এশিয়ান প্রজাতির। প্রতিটি হাতিরই পৃথক নাম রয়েছে। যে হাতিটি মা হয়েছে তার নাম ‘মুক্তি রানী’। আর শাবকের বাবার নাম ‘শেল বাহাদুর’। অন্য পুরুষ হাতিটির নাম ‘আমির বাহাদুর’। অপর মাদি হাতি তিনটির নাম যথাক্রমে ‘কুসুমকলি’, ‘পূজা রানী’ ও ‘বেলখলি’। সাফারি পার্কে আসার আগেই তাদের এসব নাম দেওয়া হয়েছিল। নতুন বাচ্চারও নামকরণ করা হবে। এখন শাবকের কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। তাই এটি পুরুষ না মাদি তা বোঝা যাচ্ছে না। কিছুদিন গেলে লিঙ্গ নির্ণয়ের পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে শাবকটির নাম রাখা হবে।
সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে
।
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।
আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।
কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।
গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে ‘যৌক্তিক সংস্কারের’ দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।
দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, “আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে ‘মবতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার—সবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত ‘শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায়’ কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।
দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।
গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।
দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।’
শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে ‘সন্দেহজনক’ হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।’
মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।
এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।