\'ম্যাডামের এপিএস\' পদে চাকরি!
- ভুয়া প্রতিষ্ঠানের চার প্রতারক গ্রেপ্তার, জেল-জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্পর্কিত খবর

রাউজানে সংঘর্ষ
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও রাউজান প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সংঘর্ষের পর রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাউজান পৌরসভার সত্তারঘাট এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। তাতে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সংসদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাম আকবর খোন্দকার রাউজানের সুলতানপুরে বিএনপির সাবেক নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের পারিবারিক কবরস্থান জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন। পথে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে সংঘর্ষ বাধে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি চলে।
গোলাগুলিতে গিয়াস কাদেরের পক্ষের দুই-তিনজন এবং ইটপাটকেলে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ উভয় পক্ষের আরো অন্তত ৪০ জন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গিয়াস কাদেরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
ঘটনার পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনাকে একাধিকবার সতর্ক করার পরও আপনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছেন। তাই দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপনাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো।’ পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার
একই দিন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করে। তাঁরা হলেন—চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব গাজী নিজাম উদ্দিন, বারৈয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল ইসলাম মিয়াজী, যুবদল নেতা সিরাজুল ইসলাম এবং যুবদল নেতা কামাল উদ্দিন।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, সংঘর্ষের পাশাপাশি চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল, পাল্টাপাল্টি অবস্থান এবং বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় কেন্দ্রীয় কমিটি কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

রংপুরে হিন্দুবাড়িতে হামলা
ফিরেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়িঘর মেরামত করে দিচ্ছে প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ির আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে হিন্দুপল্লীতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত করে দিচ্ছে প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ও রবিবার কয়েক দফা হামলায় অন্তত ২২টি হিন্দু বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় গত তিন দিনেও কোনো মামলা করা হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হামলার কারণে স্বজনদের বাড়িতে যাওয়া রঞ্জন রায়ের পরিবারসহ অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
ইউএনও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শ্রী পরেশ চন্দ্র জানান, শনিবার রাত ও রবিবার দুই দফা হামলায় ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৫টি পরিবার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের নিয়োগ করা শ্রমিকরা সকাল থেকে সেখানে মেরামতের কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে নতুন টিন লাগানো হয়েছে। ঘরের আসবাব মেরামত করা হচ্ছে।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রশাসনের পদক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করলেও আতঙ্ক কাটেনি তাদের। কেশবের স্ত্রী সন্ধ্যা রাণী বলেন, ‘পুলিশ আছে, তার পরও আমাদের আতঙ্ক কাটেনি, আবার হামলা করবে—এমন টেনশন হয়।’
চন্দনা বলেন, ‘সকাল থেকে সমস্যা নাই। সবাই মিলে আছি। বাড়িঘর তো সব ভাঙ্গি দিছে। সকালে সরকার থাকি টিন দিছে, চাল দিছে, রান্না করি খাইছি। কিন্তু টেনশন তো আছে।’
রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম বলেন, ‘মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে আমরা পাঁচ-ছয়জনকে শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, নিরাপত্তার ঘাটতি নেই। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়িতে আছেন।
দুপুর দেড়টার দিকে রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে শাড়ি-লুঙ্গিসহ শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ পেয়ে গত শনিবার রাতে এক কিশোরকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরদিন সাইবার সুরক্ষা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আদালত তাকে শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। ওই কিশোর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।

জামায়াত আমির
বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে বিপর্যয় হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলন ঘিরে আওয়ামী লীগের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের আগে কোনো নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে হবে। বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে সেটা জাতির জন্য ‘ডিজাস্টার’ (বিপর্যয়) হবে।
বিচারের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার চাই, কিন্তু যেন বিচারের নামে ওদের ওপর অন্যায় না হয়। ওদের প্রাপ্য বিচার বুঝিয়ে দেওয়া হোক।’ জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘ইতিহাস যেন হারিয়ে না যায়, সেটিকে ধরে রাখা আমাদের কর্তব্য।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিংয়ের উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘সেখানে কিছু অপূর্ণতা ছিল, তা পূরণ করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ওপর অবিচার হয়েছে, আমাদের নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে—এমন বিচার আর দেখতে চাই না।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘বিচার যেন শতভাগ স্বচ্ছ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে হয়।
তিনি বলেন, ‘যারা খুন করেছে, তারা যেন তাদের ন্যায্য শাস্তি পায় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়। এই প্রক্রিয়ায় দলের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
সরকার গঠনে সুযোগ পেলে কিংবা বিরোধী দলে থাকলেও জামায়াতের ভূমিকা হবে ‘স্পষ্ট, ন্যায়নিষ্ঠ ও অকুতোভয়’ জানান জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে ভয় করব না, শুধু আল্লাহকে।

কুমিল্লার মুরাদনগর
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লার মুরাদনগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ‘সর্বস্তরের সাধারণ ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মুরাদনগর উপজেলা গোলচত্বর থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ চত্বর, থানা প্রাঙ্গণ ঘুরে গোলচত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থীরা।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলারই আকুবপুর গ্রামে।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তারা বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন মাস্টার নানা অপকর্মে জড়িত। তিনি মব সৃষ্টি করে মুরাদনগরের আকুবপুরে ট্রিপল মার্ডার ঘটানোর পেছনে ইন্ধন দিয়েছেন। এক স্কুল শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।
বক্তারা আরো বলেন, ‘আসিফ মাহমুদের বাবা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিরীহ মানুষদের পুলিশ দিয়ে মামলা ও গ্রেপ্তার করিয়ে জেলে পাঠিয়েছেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা হিন্দু পরিষদের নেতা দুলাল দেবনাথ, মুরাদনগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিপ্লবী কমিটির সদস্যসচিব নাহিদুল ইসলাম নাহিদ, ছাত্রদলের আহ্বায়ক খায়রুল হাসান প্রমুখ।