<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কারবালার ময়দানে হুসাইন বিন আলী (রা.)-সহ নবীপরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে যাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম উম্মে ওয়াহাব বিনতে নমর (রহ.)। কোনো কোনো ঐতিহাসিক তাঁর নাম </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কুমারী</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (উজ্জ্বল বর্ণের নারী) বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি ও তাঁর স্বামী আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) উভয়ে কারবালার ময়দানে শহীদ হন। তাঁর স্বামী ছিলেন কারবালার ময়দানের দ্বিতীয় শহীদ। তিনি হুসাইন (রা.)-এর সামনেই শহীদ হন। ঐতিহাসিকরা বলেন, উম্মে ওয়াহাব (রহ.) ছিলেন একজন দক্ষ অশ্বারোহী ও সাহসী যোদ্ধা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) যখন জানতে পারেন কুফাবাসী হুসাইন (রা.)-এর সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে এবং কুফার শাসক হুসাইন (রা.)-কে প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন তিনি নবীপরিবারকে রক্ষার জন্য হুসাইন (রা.)-এর সঙ্গে যোগদানের প্রতিজ্ঞা করেন। তাঁর সঙ্গে স্ত্রী উম্মে ওয়াহাব (রহ.)-ও যুদ্ধে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অতঃপর উভয়ে হুসাইন (রা.)-এর কাফেলায় যুক্ত হন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইমাম তাবারি (রহ.) লেখেন, আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) নাখিলা নামক স্থানে মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে দেখলেন। তিনি তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলেন। তারা বলল, রাসুল (সা.)-এর দৌহিত্র হুসাইন (রা.)-এর জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, আমি সব সময় অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আগ্রহী ছিলাম। আমি আশা করি, যারা নবী (সা.)-এর দৌহিত্রের জন্য যুদ্ধ করবে, তাদের প্রতিদান অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জিহাদকারীদের চেয়ে কম হবে না। এরপর তিনি তাঁর ইচ্ছা ও প্রতিজ্ঞার কথা স্ত্রীকে জানান। স্ত্রী উম্মে ওয়াহাব (রহ.) তাঁকে বলেন, আপনি ঠিকই চিন্তা করছেন। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে আপনাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। আপনি এগিয়ে চলুন এবং আমাকেও আপনার সঙ্গী করে নিন। তাঁরা রাতের আঁধারে বের হয়ে গেলেন এবং হুসাইন (রা.)-এর কাফেলায় যুক্ত হলেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) ছিলেন সম্মুখসারির যোদ্ধা। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি শত্রুপক্ষের এগিয়ে আসা যোদ্ধার বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইলেন। তিনি উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদের সেবক সালিমের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন। প্রথমে তিনি আহত হন, বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। তার পরও সালিম ও আরেক প্রতিপক্ষকে হত্যা করেন। তিনি হুসাইন (রা.)-এর কাছে ফিরে এসে আবার তাঁর প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দেন। এরপর তিনি আবারও যুদ্ধের ময়দানে ফিরে যান। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বামীর বীরত্বে উম্মে ওয়াহাব (রহ.) খুবই গর্বিত বোধ করেন। কিন্তু তাতে তৃপ্ত হতে পারলেন না। তিনি চাইলেন নিজেও যুদ্ধে অংশ নেবেন। তাঁবুর খুঁটি উপড়ে নিয়ে স্বামীর পেছনে ছুটলেন। আবদুল্লাহ (রহ.) তাঁকে বারবার ফিরে যেতে বললেন। কিন্তু তিনি কিছুতেই ফিরলেন না। তাঁবুর খুঁটি দিয়েই লড়াই করে গেলেন। অবশেষে শত্রুপক্ষের আঘাতে দাঁত পড়ে গেলে হুসাইন (রা.)-এর নির্দেশে উম্মে ওয়াহাব (রহ.) তাঁবুতে ফিরে যান। আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) সম্মুখযুদ্ধে দুজনকে হত্যা করায় তাঁর ওপর প্রতিপক্ষ প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত ছিল। তারা যুদ্ধের ময়দানে তাঁকে হত্যার সুযোগ খুঁজছিল। তাঁকে শনাক্ত করার পর তারা তাঁকে ঘিরে ধরে এবং চতুর্মুখী হামলা করে। আবদুল্লাহ বিন উমায়ের (রহ.) বীরবিক্রমে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে যান।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উম্মে ওয়াহাব (রহ.) স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। স্বামীর শাহাদাতের সংবাদ পেয়ে তিনি সেখানে ছুটে গেলেন। স্বামীর মাথার কাছে বসে রক্ত-মাটি স্পর্শ করে বলেন, তোমাকে জান্নাতে অভিনন্দন! আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি তোমাকে যে জান্নাত দিয়েছেন সেখানে আমাকেও যেন তোমার সঙ্গী করেন। এরই মধ্যে ইয়াজিদ বাহিনীর একজন পেছন থেকে আঘাত করে তাঁকে শহীদ করে দেন। কারবালার ময়দানে তিনিই ছিলেন প্রথম নারী শহীদ। অন্য বর্ণনায় এসেছে, উম্মে ওয়াহাব (রহ.)-এর ছেলেও কারবালার ময়দানে শহীদ হন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তথ্যসূত্র : আল</span></span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> মাজমাউস সগির : ২/৮৪০; আলামুন নিসা : ৫/২৯০।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>