<p>গোসলের আগে প্রস্রাব-পায়খানা সেরে নেবে। এতে বীর্য ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে বের হওয়া সহজ হয়। প্রথমে দুই হাত কবজি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে। এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে বাঁ হাত দিয়ে শরীরের যেসব জায়গায় বীর্য ও নাপাকি লেগে থাকে, তা ধুয়ে পরিষ্কার করবে। এবার বাঁ হাত ভালো করে ধুয়ে ফেলবে। তারপর অজু করবে, তবে পা ধৌত করবে না। অতঃপর পুরো শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে তিনবার ডানে, তারপর তিনবার বাঁয়ে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুতে হবে, যেন শরীরের কোনো অংশ এমনকি কোনো লোমও শুকনা না থাকে। নাভি, বগল ও অন্যান্য জায়গায় পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে। সব শেষে গোসলের জায়গা থেকে সামান্য সরে গিয়ে দুই পা তিনবার ধুয়ে নেবে। (হেদায়া ১/৩০)</p> <p>নিম্নে গোসলের শিষ্টাচার বর্ণনা করা হলো—</p> <p>* উঁচু স্থানে বসে গোসল করবে, যাতে পানি গড়িয়ে যায় ও গায়ে ছিটা না লাগে। পানির অপচয় করবে না। বসে বসে গোসল করবে।</p> <p>* লোকসমাগমের স্থানে গোসল করবে না। পবিত্র জায়গায় গোসল করবে। ডান দিক থেকে গোসল শুরু করা। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৪, রদ্দুল মুহতার ১/৯৪)</p> <p>* বাহ্যিক অঙ্গের চুল পরিমাণ জায়গাও শুকনা থাকলে ফরজ গোসল শুদ্ধ হবে না। (শরহে মুখতাসারুত তাহাভি ১/৫১০)</p> <p>* নেইলপলিশ, রং বা সুপার গ্লু ইত্যাদি যা শরীরে পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়, তা উঠিয়ে নিচে পানি পৌঁছানো জরুরি, অন্যথায় গোসল শুদ্ধ হবে না। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩)</p> <p>* ফরজ গোসলে পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল গোড়াসহ সম্পূর্ণ ভালোভাবে ভিজতে হবে। নারীদের চুল বাঁধা থাকলে খোলা ছাড়া যদি চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানো সম্ভব হয়, তাহলে না খুলে শুধু গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। আর যদি চুল খোলা থাকে তাহলে পুরুষের মতো সম্পূর্ণ চুল ধৌত করা ফরজ। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৪, রদ্দুল মুহতার ১/১৪২)</p> <p>* অনুরূপ ফরজ গোসলে নারীদের কান ও নাকফুল নাড়িয়ে ছিদ্রে পানি পৌঁছানো জরুরি। (আল মুহীতুল বুরহানি ১/৮০)</p> <p>* কানের ভেতর ও নাভিতে পানি পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা জরুরি।</p> <p>* বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকের দাঁতে এমনভাবে ক্যাপ লাগানো হয়ে থাকে, যার দরুন কুলি করলে নিচে পানি পৌঁছে না এবং তা খুললেও ক্ষতির আশঙ্কা হয়, তাহলে গোসলের সময় তা খোলা জরুরি নয়, আর যদি এমন কিছু লাগানো থাকে, যা সহজে খোলা যায়, তাহলে খুলে তার নিচে পানি পৌঁছানো জরুরি। (রদ্দুল মুহতার ১/১৫৪, আহসানুল ফাতাওয়া ২/৩২)</p> <p> </p>