<p>দেশভেদে বিয়ের পোশাকে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। যেমন—আমাদের অঞ্চলে নারীদের বিয়ের পোশাক বেশির ভাগ লাল রঙেরই ছিল। এখন অবশ্য যুগের পরিবর্তনে এর মধ্যে নানা রং জায়গা করে নিচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বে সাদা পোশাক জনপ্রিয় হলেও অনেক স্থানে আবার রঙিন পোশাকেরও কদর রয়েছে। দেশ ও জাতিভেদে বিয়ের পোশাকে দেখা যায় বাহারি রঙের ছড়াছড়ি। নারীদের বিয়ের পোশাক কী রঙের হবে, এ নিয়ে ইসলাম অবশ্য কোনো কড়াকড়ি আরোপ করেনি। জিবরাঈল (আ.) যখন রাসুল (সা.)-এর হবু স্ত্রী আয়েশা (রা.)-কে রাসুল (সা.)-এর সামনে স্ত্রীর সাজে চিত্রিত করেছিলেন, তখন তাঁর পোশাকের রং ছিল সবুজ। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, জিবরাঈল (আ.) একখানা সবুজ রঙের রেশমি কাপড়ে তাঁর (আয়েশার) প্রতিচ্ছবি নবী (সা.)-এর কাছে নিয়ে এসে বলেন, তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে আপনার স্ত্রী। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৮০)</p> <p>সবুজ রেশমের পোশাক অবশ্য জান্নাতের পোশাক। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের আবরণ হবে সূক্ষ্ম সবুজ রেশম ও স্থূল রেশম।’ (সুরা : ইনসান, আয়াত : ২১)</p> <p>এ কারণেই হয়তো মহান আল্লাহ রাসুল (সা.)-এর দুনিয়া ও আখিরাতের হবু স্ত্রীকে সবুজ রেশমের পোশাকে চিত্রিত করেছেন।</p> <p>প্রশ্ন জাগতে পারে আমাদের দেশে কি সেই রেশমি কাপড় পাওয়া যায়? হাদিসে যে রেশমি কাপড়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। থাকলে তা চেনার উপায় কী? রেশমি কাপড়ের সংজ্ঞা হলো, রেশম বা গুটিপোকা তুঁতগাছের পাতা খাওয়ার দ্বারা তার থেকে যে সুতা তৈরি হয় এবং ওই সুতা পাকিয়ে তৈরি করা কাপড় হলো রেশমি কাপড়। (আলমিসবাহুল মুনির : ১/১২৯)</p> <p>এটি বাঙালি রমণীর ঐতিহ্যগত সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের প্রতীক। একসময় বাংলায় এত বেশি রেশম উৎপাদিত হতো যে তা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করার পর প্রচুর পরিমাণে বাইরে রপ্তানি হতো। রেশমকে ইংরেজিতে বলা হয় সিল্ক। এই সিল্কের বাজারই প্রথম ইউরোপীয় বণিকদের বাংলায় আসতে আকৃষ্ট করে। সিল্কের বিভিন্ন নমুনা ও ডিজাইনের জন্য বাংলা ভাষায় বিশেষ বিশেষ নাম প্রচলিত, যেমন—গরদ, মটকা, বেনারসি প্রভৃতি।</p> <p>তাই কেউ বিয়েশাদি কিংবা কোনো উৎসবে যদি নিজের প্রিয়জনকে সবুজ রেশমি শাড়ি উপহার দিতে চান তাহলে তা খুব সহজেই সংগ্রহ করতে পারবেন।</p>