গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় গণমাধ্যমকে। স্বাধীন গণমাধ্যম হলো গণতন্ত্রের অন্যতম পূর্বশর্ত। গণমাধ্যম যতটা স্বাধীন হবে, গণতন্ত্র, জবাবদিহি ও সুশাসন ততটাই সুনিশ্চিত হবে। আর এ কারণেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গণমাধ্যম যাবতীয় ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে স্বাধীনভাবে তার মতামত প্রকাশ করতে পারে—সেই মতামত কারো পছন্দ হোক বা না হোক।
বিশেষ লেখা
মিডিয়াকে হুমকি গণতন্ত্রের পরিপন্থী
- অদিতি করিম

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণে গণমাধ্যমের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আপনারা মন খুলে সমালোচনা করুন। আমাদের দোষত্রুটিগুলো ধরিয়ে দিন।’ শুধু প্রথম ভাষণ নয়, বিভিন্ন সময় তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বারবার উচ্চারণ করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ রাজশাহীতে একটি কথা বলেছেন, যা রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। তিনি মিডিয়াকে হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘খুনি হাসিনার পক্ষে বসুন্ধরার মিডিয়া যে ভূমিকা পালন করেছে, আমরা তা ভুলে যাইনি।’ বসুন্ধরা গ্রুপের সাংবাদিকরা আবারও নগ্নভাবে অপরাধের বৈধতা দিতে মাঠে নেমেছেন। তাঁরা আরেকটি এক-এগারো ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছেন। জনগণ তা কখনো বরদাশত করবে না।’ তাঁর এই বক্তব্য একদিকে যেমন আবেগপ্রসূত, পাশাপাশি অজ্ঞতাপ্রসূতও বটে।
এই ধরনের মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহর মতো একজন দায়িত্বশীল তরুণ নেতা যখন দেন তখন গণমাধ্যম শুধু নয়, পুরো দেশবাসী উদ্বিগ্ন হতে বাধ্য। কারণ এ ধরনের বক্তব্য কখনোই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে না। বরং এ ধরনের হুমকি ফ্যাসিস্ট আমলের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের কথাই মনে করিয়ে দেয়। জুলাই আন্দোলনের বীর যোদ্ধা আবেগে কোনো গণমাধ্যমের প্রতি অসন্তুষ্ট হতে পারেন কিংবা ওই মিডিয়া হাউসের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকতে পারে, তাই বলে তিনি প্রকাশ্যে একটি জনসভায় মিডিয়াকে রীতিমতো হুমকি দেবেন, এটি কল্পনা করলেও আঁতকে উঠতে হয়। তাহলে কি এনসিপি বা ছাত্রদের কোনো কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করা যাবে না? তাদের শুধু প্রশংসাই করতে হবে? আওয়ামী লীগও গত ১৫ বছর এভাবেই ভয়ভীতি দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল। তার পরিণাম সবাই জানে।
আমরা লক্ষ করেছি, গত ১১ মাসে দেশজুড়ে মব সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। যেকোনো একজন নেতা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছেন, ফেসবুকে তাঁকে ধমকাচ্ছেন। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গেই কিছু লোক জড়ো হয়ে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা করছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় কারো বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেই ওই মিডিয়া হাউসের বিরুদ্ধে কেউ কেউ উসকানিমূলক অবস্থান নিচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একটি পত্রিকা বা একটি গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় নীতি-আদর্শের সঙ্গে যেকোনো মানুষের বিরোধ থাকতেই পারে। একটি মিডিয়ার প্রতিবেদন যে সব রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি পছন্দ করবেন তেমন নয়, কেউ একটি প্রতিবেদন অপছন্দ করতেই পারেন। অপছন্দ করলেই কি মিডিয়াকে হুমকি দিতে হবে? একটি গণমাধ্যম যদি কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দল সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রকাশ না করে, সে ক্ষেত্রে প্রতিবাদ জানানোর স্বীকৃত পদ্ধতি আছে। ‘হুমকি’ কখনো প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। সবাই যদি বিএনপি, এনসিপি কিংবা জামায়াতের প্রশংসা করে, তাদের গঠনমূলক সমালোচনা করতে ভয় পায়, তাহলে আর মিডিয়ার দরকার কি? এ ধরনের হুমকি গণতন্ত্রের উত্তরণের পথেও অন্তরায়। এ রকম সংস্কৃতি চালু হলে রাজনৈতিক দলগুলো তার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো বুঝতে পারবে না।
যেমন ধরা যাক, জুলাই যোদ্ধাদের দল এনসিপি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই সংগঠনটির মধ্যে অনেক রকম সমস্যা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি মানুষ লক্ষ করেছে। এনসিপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার বিরুদ্ধে পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন এখন তদন্ত করছে। এনসিপিও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং ওই নেতাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এনসিপির আরেক নেতা সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে একজন নারীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকেও এখন আপাতত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি ইতিবাচক দিক হলো, কোনো সমালোচনাই তারা উপেক্ষা করছে না। যখন যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্পূর্ণ নতুন। এ জন্য এনসিপি ধন্যবাদ পেতেই পারে।
কিন্তু এনসিপির এই অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য। একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ভুলত্রুটি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এনসিপি একটি নতুন রাজনৈতিক দল এবং এই রাজনৈতিক দলের সবাই তারুণ্যে ভরপুর, নতুন এবং তাদের সৃষ্টিসুখের উল্লাস আছে। এই তারুণ্যের উচ্ছ্বাস যেন সঠিক পথে, একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক মূলধারায় পরিণত হতে পারে সে জন্য তাদের সমালোচনা করা যেমন জরুরি, তেমনি তাদের এই সমালোচনা গ্রহণ করাও অত্যন্ত জরুরি। সমালোচনা করলেই সেই পত্রিকা ফ্যাসিস্টের দালাল হয়ে যাবে বা সেই পত্রিকার বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হতে হবে, সেই পত্রিকাকে আক্রমণ করতে হবে—এই ধরনের মানসিকতা কখনো গণতান্ত্রিক হতে পারে না। এমনিতেই গত ১১ মাসে গণমাধ্যমের অবস্থা ভালো নয়। শুধু ১১ মাস নয়, ১৬ বছর ধরেই গণমাধ্যম একটা বন্দি অবস্থায় রয়েছে। আমরা জানি আওয়ামী লীগ শাসনামলে মিডিয়া কিভাবে পরিচালিত হতো। হাসনাত আবদুল্লাহ নিজেই একাধিকবার বলেছেন যে মিডিয়া কন্ট্রোল করত গোয়েন্দা সংস্থা এবং আওয়ামী লীগের কিছু ব্যক্তি। তাঁরা মিডিয়ায় বিরোধী দলের কোনো সংবাদ প্রকাশ করতে দিতেন না। অনেক ব্যক্তি মিডিয়ায় লিখতে পারতেন না। বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কণ্ঠ একা নয়, কোনো মিডিয়াই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, তাদের দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারত না। ৫ আগস্টের আগেই বসুন্ধরা গ্রুপের একাধিক পত্রিকার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইনে বহু মামলা হয়েছে। হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বহু সংবাদকর্মীকে। এইসব মামলা করেছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও প্রশাসন। চাঁদা, মানহানির মামলাসহ বানোয়াট ফৌজদারি মামলা করেও বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়াকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল সেই সময়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে গত বছর ৩১ মার্চ কালের কণ্ঠ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি নিয়ে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই সংবাদটি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রথম ধাপ। সেই ধারাবাহিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল। সারা দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছিল আওয়ামী লীগের আমলে কী পরিমাণ লুণ্ঠন ও দুর্নীতি হচ্ছিল। পুলিশের একজন আইজি কিভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করেছিলেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা হতে থাকে। তৎকালীন প্রশাসন ও সরকার এই মামলাগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, গণমাধ্যম যেন আওয়ামী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম না ধরে, কথা না বলে। কাজেই হাসনাত আবদুল্লাহ যখন বলেন যে বসুন্ধরা গ্রুপের পত্রিকাগুলো ফ্যাসিস্টের দালাল, তাহলে তিনি হয়তো পুরো ১৫ বছরের গণমাধ্যমের চিত্র সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত নন। ১৫ বছর মিডিয়া বন্দি ছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে মিডিয়াকে মুক্ত করতে হবে এই সরকারকে, এই তরুণদের। তাহলেই আমরা পাব কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ।
গণ-অভ্যুত্থানের পর সবাই আশা করেছিল যে মিডিয়া স্বাধীন হবে এবং মিডিয়ায় সবাই মন খুলে কথা বলতে পারবে, সমালোচনা করতে পারবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য, ৫ আগস্টের পর আমরা দেখছি যে মিডিয়ার ওপর নানা রকম হয়রানি, মব আক্রমণ ও হুমকি আসছে। আগেও মিডিয়ায় আতঙ্ক ছিল, এখনো আতঙ্ক আছে।
পরমতসহিষ্ণুতা হলো গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত। আমরা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাস করি যে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং তাঁর দল এনসিপি বাংলাদেশে গণতন্ত্র, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার একটি ধারা তৈরি করতে চান। সেই ধারা যদি তৈরি করতে হয়, তাহলে গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দিতেই হবে। গণমাধ্যম যে সমালোচনা করে, সেই সমালোচনাকে উপলব্ধি করতে হবে, ধারণ করতে হবে এবং সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যদি সেটি না থাকে তাহলে আওয়ামী লীগ থেকে হাসনাত আবদল্লাহর পার্থক্য কী? আমরা মনে করি, হাসনাত আবদল্লাহর স্বৈরাচার পতনে বিশাল অবদান রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তিনি আন্দোলন করেছিলেন একটি মুক্ত বাংলাদেশের জন্য, যে মুক্ত বাংলাদেশে গণমাধ্যম প্রাণ খুলে কথা বলতে পারবে। কাজেই ১৫ বছরে কে কী করেছে, সেই হিসাব যদি নেওয়া যেতে পারে, তাহলে কম্বল বাছতে লোম উজাড় হয়ে যাবে। ছাত্রলীগের ভয়ে সেই সময় যাঁরা ছাত্রলীগ সেজেছিলেন তাঁরাও কি তাহলে ফ্যাসিস্টের দালাল? কারণ সে সময় শুধু গণমাধ্যম না, সবাই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে তৎকালীন সরকারের কথা শুনতে বাধ্য হয়েছে। না হলে তাদের ওপর খড়্গ নেমে এসেছে। এই বাস্তবতা উপলব্ধি না করে হুটহাট করে গণমাধ্যমকে আক্রমণ করা, গণমাধ্যমকে হুমকি দেওয়াটা একটি খারাপ প্রবণতা। এর ফলে পুরো গণমাধ্যম কুণ্ঠিত থাকবে। সত্য প্রকাশের সাহস পাবে না। যদি সত্যপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এনসিপি এবং হাসনাত আবদুল্লাহই।
লেখক : নাট্যকার ও কলাম লেখক
ই-মেইল : auditekarim@gmail.com
সম্পর্কিত খবর

শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়তে চান পান্না, ট্রাইব্যুনালের না
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলায় জেড আই খান পান্না রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হতে চাওয়ার আবেদন করলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বলেছেন, ‘ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে।’
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১-এ আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে চলা মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হতে চান। উনি অসুস্থ, তাই উনার পক্ষে আমি এই আবেদনের বিষয়টি তুলে ধরছি।’
এ সময় ট্রাইব্যুনাল ১ বলেন, ‘উনি (জেড আই খান পান্না) এই নির্দিষ্ট মামলায়ই আসতে চাচ্ছেন কেন? আর ওই মামলায় তো রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এখন আছেনই।
এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ জেড আই খান পান্নার রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হওয়ার আবেদন প্রসঙ্গে বলেন, “ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে।

সারজিসের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা বিএনপি নেতার
- এসব মামলা দিয়ে আমাদের ভয় দেখানো যাবে না : সারজিস আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মানহানির মামলা করেছেন বিএনপির এক নেতা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক মো. আলমগীর আল মামুনের আদালতে মামলাটি করা হয়।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা বিএনপির সভাপতি মো. তানভীর সিরাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
এ ব্যাপারে সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে।
মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শুনানি শেষে বিচারক সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত-পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সারজিস বেশ কয়েকবার বিএনপিকে নিয়ে এমন অপপ্রচার চালিয়েছেন।
মামলার বাদী তানভীর সিরাজ অভিযোগ করে বলেন, ‘অপরাধীচক্রের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু সারজিস আলম না জেনেই ফেসবুকে এই ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন, যা দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।
সারজিস আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে গত ৭ আগস্ট রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে লেখেন, ‘গাজীপুরে এক বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি নিয়ে নিউজ করায় দুপুরে আনোয়ার নামের এক সাংবাদিককে ইট দিয়ে থেঁতলে দেয় বিএনপির কর্মীরা।
সারজিস আলমের প্রতিক্রিয়া : এদিকে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত জাতীয় যুব সম্মেলনে সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা দিয়ে আমাদের ভয় দেখানো যাবে না।’ বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে সারজিস আলম বলেন, ‘বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান ও ফজলুর রহমানের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের আশাহত করে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তাঁরা বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করেন না।’ এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আগে এ্যানি ভাইয়েরা (বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির প্রতি ইঙ্গিত করে) কারাগার থেকে বুক ফুলিয়ে কোর্টে হাজিরা দিতে আসতেন। আমরা তাঁদের সাহস দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। আজ আমি যদি বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলি, আমার নামে ১০ কোটি টাকার মামলা করা হয়। আমরা স্তব্ধ থাকব না। আওয়ামী লীগ হোক, বিএনপি হোক কিংবা এনসিপি, আমরা ছাড় দেব না।’
তিনি বলেন, ‘ডিবি অফিসে রুহুল কবীর রিজভী, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও অন্য সাহসী নেতাদের সঙ্গে ছোট্ট একটি গারদে থাকার স্মৃতি আজও জীবন্ত। সেই দিনগুলোতে আমরা অনেক বেশি সাহস নিয়ে ফিরতাম।’
তিনি বলেন, ‘আজ তানভীর সিরাজ, ফজলুর রহমানের মতো নেতাদের বক্তব্য আমাদের হতাশ করেছে। সত্যিকার অর্থে যদি আমাদের দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকে, তাহলে বিএনপির সেন্ট্রাল অফিস থেকে এসব নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৯৩৫ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে দুই জাহাজ
- শত প্রতিষ্ঠান ছাপবে প্রাথমিকের ৪ কোটি বই
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বই ছাপানোর দরপত্র প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এই বই ছাপানোর কাজ করবে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণের জন্য সরকার চার কোটি চার লাখ ৪২ হাজার ৪৯১ কপি পাঠ্যবই এনসিটিবির কাছ থেকে সংগ্রহ করবে। বইগুলোর মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে প্রায় ২০০ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া সভায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি জাহাজ ও সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন হয়েছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯৮টি লটের মধ্যে ৯৬টি লটের বই ছাপা, বাঁধাই ও সরবরাহের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবে মোট চার কোটি চার লাখ ৪২ হাজার ৪৯১ কপি বই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী নতুন বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর কাছে তাদের প্রত্যাশিত পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করবে সরকার। এ জন্য প্রাথমিক স্তরের (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের ৯৮টি লটে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানে ১৮২টি দরপত্র পড়েছে।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষ। টিইসি ৯৮টি লটের বিপরীতে ৯৬টি লটে সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা ৫৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২০০ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮০ টাকায় চার কোটি চার লাখ ৪২ হাজার ৪৯১টি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হচ্ছে দুই জাহাজ : যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৫-৬৬ হাজার ডিডব্লিউটিসম্পন্ন দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি থেকে এই জাহাজ দুটি কিনতে ব্যয় হবে ৯৩৫ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই জাহাজ কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ৫৫-৬৬ হাজার ডিডব্লিউটিসম্পন্ন বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ অর্জন প্রকল্পের আওতায় দুটি জাহাজ ও আনুষঙ্গিক সেবা ক্রয়ের জন্য একধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব জমা দেয়। এর মধ্যে দুটি প্রস্তাবই বিবেচিত হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি থেকে ৭৬.৬৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে জাহাজ দুটি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৯৩৫ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। জাহাজ দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা হবে।
৯৮৭ কোটি টাকায় কেনা হবে দুই কার্গো এলএনজি : দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিঙ্গাপুর থেকে এই দুই কার্গো এলএনজি আনতে ব্যয় হবে ৯৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ১৮ হাজার ৯২ টাকা। ক্রয় কমিটিতে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। সিঙ্গাপুরের আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই জ্বালানি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দাম ধরা হয়েছে ১১.৯৭ মার্কিন ডলার। এতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি ব্যয় ৫০২ কোটি ৯৪ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৮ টাকা।
বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আরেক প্রস্তাবে একই প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে আরো এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এই এলএনজি সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের পেট্রোকেমিক্যাল ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দাম ধরা হয়েছে ১১.৯০ মার্কিন ডলার। এতে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৪৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ৬৯৪ টাকা।

রোডম্যাপে এগোচ্ছে বিসিএস, আগামী বছর থেকে কমবে জট
শরীফুল আলম সুমন

বিসিএসের জট কমাতে সম্প্রতি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ীই এগোচ্ছে বিসিএস। একই সঙ্গে ৪৬তম বিসিএস থেকে ‘সার্কুলার পদ্ধতি’তে দেখা হবে লিখিত পরীক্ষার খাতা। এতে খাতা দেখায় আগের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ সময় লাগবে।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক বিসিএসের জট লেগে আছে পিএসসিতে। একটি বিসিএস শেষ করতে তিন বছর বা এরও বেশি সময় লাগছে। প্রায় চার বছর ধরে আটকে থাকা ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল গত জুনে প্রকাশ করা হয়েছে।
পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রোডম্যাপ অনুযায়ীই বিসিএস এগোচ্ছে। এ বছর ছয়টি বিসিএস চলমান ছিল। এরই মধ্যে আমরা একটি সাধারণ বিসিএস অর্থাৎ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছি। বাকি পাঁচটির মধ্যে এ বছরই ৪৫তম, ৪৮তম বিসিএস শেষ হবে। ৪৯তম বিসিএসের কার্যক্রম চলমান, চেষ্টা চলছে এ বছরের মধ্যেই শেষ করার। আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। সেগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হলে বিসিএসে আর জট থাকবে না বলে আমরা আশা করছি। তবে এ জন্য আমাদের আরো কিছুটা সময় প্রয়োজন।’
পিএসসির হিসাব অনুযায়ী, এ বছরের বাকি সময়ে ৪৫তম, ৪৮তম ও ৪৯তম—এই তিনটি বিসিএস শেষ হয়ে যাবে। এরপর থাকবে ৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএস। আর নভেম্বরে যুক্ত হবে ৫০তম বিসিএস। ৪৬তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা যদি আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে শুরু হয়, তাহলে তিন-চার মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব। তাহলে থাকবে মাত্র দুই বিসিএস। এভাবে আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে জট অনেকটা কমে আসবে।
নতুন কমিশন বিসিএসের জটের পেছনের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে। তারা দেখেছে, একটি বিসিএসে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখায়। এই কাজে আট মাস থেকে এক বছর বা তারও বেশি সময় লেগেছে। ফলে বিসিএসের জট লেগে যায়। এ জন্য ৪৬তম বিসিএস থেকেই ‘সার্কুলার পদ্ধতি’তে খাতা দেখার উদ্যোগ নিয়েছে পিএসসি। এই পদ্ধতিতে শিক্ষকরাই কমিশনে এসে খাতা দেখবেন। একটি বিষয়ের খাতা দেখার জন্য একাধিক টিম থাকবে। প্রতিটি টিমে ১৩ জন সদস্য থাকবেন। ১০ জন পরীক্ষক খাতা দেখবেন। যিনি ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দেখবেন তিনি প্রতিটি খাতার সেটিই দেখবেন। যিনি ২ নম্বরটি দেখবেন তিনি প্রতিটি খাতার সেটিই দেখবেন। এভাবে ১০ জন পরীক্ষক ১০টি প্রশ্নের উত্তর দেখবেন। দুজন পরীক্ষক নম্বর যোগ করবেন। আর একজন প্রধান পরীক্ষক একটি বান্ডেলের মধ্য থেকে কিছু খাতা রিচেক করবেন, কোনো ভুলভ্রান্তি বা অসামঞ্জস্য আছে কি না। এতে একই খাতা একাধিক পরীক্ষককে দেখতে হবে না। আবার অনেক সময়ও বাঁচবে। এই পদ্ধতিতে একটি বিসিএসের খাতা তিন মাসের মধ্যে দেখা সম্ভব বলে মনে করছে পিএসসি।
পিএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তরপত্রে দেখা যায়, একজন পরীক্ষার্থী প্রথমে ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখছেন, এরপর আবার ৭ নম্বর লিখছেন, আবার ৩ নম্বর লিখছেন। এতে যিনি খাতা দেখেন তাঁর মূল্যায়নে বেশি সময় লেগে যায়। এ ছাড়া একেকবার একেক প্রশ্নের উত্তর দেখায় নম্বরের ক্ষেত্রে পরীক্ষক কিছুটা দ্বিধায় পড়ে যান। এ জন্যই উত্তরপত্রের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরপত্রে যদি প্রশ্নের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া যায়, তাহলে পরীক্ষার্থীদেরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। কারণ একই পরিমাণ জায়গায় কে কতটা গুছিয়ে উত্তর লিখতে পারে সেটাই হবে প্রধান বিবেচ্য। ৫০তম বিসিএস থেকে লিখিত পরীক্ষার খাতায় উত্তরের জন্য নির্ধারিত জায়গা রাখার পরিকল্পনা করেছে কমিশন।
জানা যায়, বর্তমান কমিশনে চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি নিয়মিত মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তবে আইন অনুযায়ী, আরো পাঁচজন সদস্য দেওয়ার সুযোগ রয়েছে সরকারের। সেটা হলে কাজের গতি আরো বাড়বে বলে মনে করছেন কমিশনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।