ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭

ইসরায়েলসহ ৮৫ দেশে পিআর পদ্ধতি চালু

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলসহ ৮৫ দেশে পিআর পদ্ধতি চালু

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর হচ্ছে নির্বাচনী ব্যবস্থার এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে আসন বণ্টন হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। যদি কোনো দল মোট প্রদত্ত ভোটের ১০ শতাংশ পায়, তাহলে সেই দল আনুপাতিক হারে সংসদের ১০ শতাংশ বা ৩০টি আসন পাবে।

১৭৭৬ সালে আমেরিকান বিপ্লবের সময় দেশটির রাষ্ট্রপতি জন অ্যাডামস তাঁর প্রভাবশালী পুস্তিকা থটস অন গভর্নমেন্ট-এ আনুপাতিকতার প্রথম প্রস্তাবনাগুলি দিয়েছিলেন। তবে আধুনিক বিশ্বে সর্বপ্রথম ১৮৯৯ সালে বেলজিয়ামে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আর বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টি গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে ৯১টি দেশ, অর্থাৎ প্রায় ৫৪ শতাংশ রাষ্ট্র, তাদের আইনসভা নির্বাচনে কোনো না কোনো ধরনের পিআর পদ্ধতি অনুশীলন করে। মূলত উন্নত বিশ্বে পিআর পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বেশি। অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডির ৩৬টি সদস্য দেশের মধ্যে ২৫টি, অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ দেশ এই পদ্ধতি অনুসরণ করে। জার্মানি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন ও লাতিন আমেরিকার একাধিক দেশে এই ব্যবস্থা প্রচলিত।
তবে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের একাধিক উপায় রয়েছে। প্রধান তিনটি উপায় হলোমুক্ত তালিকা, গোপন তালিকা ও মিশ্র পদ্ধতি।

আরেকটি তথ্যৈ দাবি করা হয়েছে, তালিকাভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনীব্যবস্থা ৮৫টি দেশে রয়েছে। মিশ্র সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনীব্যবস্থা সাতটি দেশে ব্যবহৃত হয়।

আর একক স্থানান্তরযোগ্য ভোটদান, যা আয়ারল্যান্ড, মাল্টা, অস্ট্রেলিয়ার সিনেট ও ভারতের রাজ্যসভা সদস্য নির্বাচনে ব্যবহৃত হয়।

মোটামুটিভাবে ইউরোপের নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, জার্মানি (আংশিক); এশিয়ায় ইসরায়েল, ইন্দোনেশিয়া ও নেপাল; আফ্রিকায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়া; লাতিন আমেরিকায় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা এবং উত্তর আমেরিকায় আংশিকভাবে কানাডার পিআর পদ্ধতিই আলোচনার দাবি রাখে। তবে বিশ্বে পিআর পদ্ধতির একটি ক্লাসিক উদাহরণ হচ্ছে ইসরায়েল, যেখানে পুরো দেশই একক ভোট এলাকা। যে দল মাত্র ৩.২৫ শতাংশ ভোট পায়, তারাও আসন পায়। এতে ছোট দলগুলো সব সময় সংসদে প্রবেশ করে।

কিন্তু এ পদ্ধতির কারণে দেশটির সরকার নানা ধরনের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জটিলতার মুখে রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, পিআর পদ্ধতি মোটেও জাদুর কাঠি নয়। সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সাংবিধানিক সংস্কার ও জনসচেতনতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপক্বতা বিবেচনায় ধাপে ধাপে আংশিকভাবে পিআর পদ্ধতির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হতে পারে, যাতে করে ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও ন্যায্য নির্বাচনী কাঠামো গড়ে তোলা যায়। পিআর বিষয়ে একটি বহুল প্রচারিত মত, এটি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সরকারে যেতে সাহায্য করে। কিন্তু বেশির ভাগ গবেষণাই দেখিয়েছে, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিরা খুব সামান্যই নিজ নিজ গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত হয়।

বিশ্বমানের ডাকসাইটে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফ্রেজার ইনস্টিটিউটের মতো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত দিয়েছে পিআর পদ্ধতিকে যতটা ন্যায্য ও সাম্যবাদী মনে হয়, ততটা মোটেই নয়। বরং পৃথিবীর যে দেশেই পদ্ধতিটির প্রয়োগ রয়েছে, সে দেশেই শাসনতান্ত্রিক জটিলতা না কমে বরং বেড়েছে। হানাহানি, বিভাজন, সংকীর্ণতা, অনৈক্য ও ক্ষুদ্র স্বার্থের লড়াই বেড়েছে।

বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতির দিকে নজর দিচ্ছে কিছু রাজনৈতিক দল, যেমনজাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন এবং কমিউনিস্ট পার্টি। তবে বিএনপি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছে। পিআর পদ্ধতিতে এমপির সঙ্গে সরাসরি ভোটারের সম্পর্ক থাকে না। ভোটার শুধু ভোট দেন। আর নেতা নির্বাচন করে দল। অথচ এখনো বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ দিনশেষে মার্কা দেখেই ভোট দেন। তাই পিআর পদ্ধতি তাদের মাঝে অধিকতর হতাশার জন্ম দিতে পারে।

অনুন্নত দেশে পিআর পদ্ধতির সবচেয়ে বাস্তব সমস্যা হলোপ্রায়ই জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য থাকে। দ্বিতীয় সমস্যা হলোপিআর ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জনগণের প্রত্যক্ষ চাপ বা জবাবদিহি কম থাকে। এই ব্যবস্থা কোনো দেশ বা সমাজের মধ্যে জাতিগত, ধর্মীয়, আঞ্চলিক বা সম্প্রদায়গত বিভাজন বাড়িয়ে তুলতে পারে। কারণ এ ব্যবস্থায় বিশেষ সম্প্রদায়ভিত্তিক দলগুলো সহজেই সংসদে প্রতিনিধিত্ব পেতে পারে, যা বিভাজনমূলক রাজনীতির জন্ম দেয়। বিশেষত এই ব্যবস্থায় ছোট দলগুলো অনেক সময় অতিরিক্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, তারা জোট সরকারের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এসব দল তখন নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করতে পারে এবং বড় দলগুলো বাধ্য হয় তাদের শর্ত মানতে। হালে পিআর পদ্ধতির কারণে ইতালিতে বারবার সংকট তৈরি হয়েছে।

এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, ছোট দলগুলো জোট সরকারের জন্য অনেক অন্যায্য শর্ত আরোপ করতে পারে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনেক সময় ব্যাঘাত ঘটে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে ওঠে এবং বারবার জোট সরকার গঠনের প্রয়োজন দেখা দেয়। একই সঙ্গে পিআর ব্যবস্থা সরাসরি ভোটিং প্রক্রিয়ার তুলনায় কিছুটা জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা ও আসন বণ্টনের জন্য জটিল হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হয়, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরো দীর্ঘায়িত করে এবং নির্বাচনী ব্যয়ও বাড়ায়।

আবার পিআর পদ্ধতিতে এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে সরকার গঠন সম্ভব হয় না। ফলে ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জোট সরকার গঠন করতে হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটি একটি নতুন ধারণা। তবে পদ্ধতিটি এখনো বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য কি না, সেই প্রশ্নের সুরাহা এখনো হয়নি। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে থাকা দেশগুলোই পিআর পদ্ধতি অনুসরণে লাভবান হয়, অনুন্নত দেশগুলো সহজে জটিলতা এড়াতে পারে না।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের

শেয়ার
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের

মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলে শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের। গতকাল বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটি মাঠে সেই উদ্দেশ্যে খেলতে নেমে টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৯-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারানোর পর উৎসব করেন আফঈদা খন্দকার-মুনকি আক্তাররা, যেখানে মোসাম্মৎ সাগরিকা একাই তিন গোল করেন। জোড়া গোল করেন মুনকি। ছবি : বাফুফে

মন্তব্য
তিন দিনের আলোচনা শেষ

৩৫% মার্কিন শুল্ক হ্রাসের ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৩৫% মার্কিন শুল্ক হ্রাসের ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা

তিন দিনের বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় (১০ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তি-তর্ক হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৯টায় ওয়াশিংটনে তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দ্বিতীয় দিনের আলোচনার একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিনের সঙ্গে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসাডর জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে একান্ত বৈঠক। ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মকর্তার সঙ্গে সেখ বশির উদ্দিন শুল্ক ইস্যুর পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করেন।

বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রপ্তানি পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি নয়, আমদানির পরিমাণও বাড়ানোর পথে এগোচ্ছে। শুল্ক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ন্যায্য প্রত্যাশার বিষয়টি জোর দিয়ে উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

জেমিসন গ্রিয়ার বাংলাদেশের অবস্থান মনোযোগসহকারে শোনেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ আমদানিতে আমেরিকা থেকে তুলা, সয়াবিন, বোয়িং বিমানসহ বিভিন্ন পণ্য নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, পাশাপাশি আমদানির নির্দিষ্ট পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। 

তৃতীয় (শেষ) দিনের আলোচনায় এখনো রিবেট, শুল্ক ছাড় বা কিছু পরিমাণ কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন বাণিজ্য সম্পর্কের দ্বার উন্মোচিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান খালেদা জিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান খালেদা জিয়ার

লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির মিডিয়া সেল গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের জানায়, রাজধানীর আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের খোঁজখবর নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে হাসপাতালে পাঠিয়ে তিনি ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া অসুস্থ ফরিদা পারভীনের আরোগ্য কামনা করেন।

একজন গুণী শিল্পীর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও হাসপাতালে যান। সেখানে তিনি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকারের দুই উপদেষ্টাকে ফোন করে অনুরোধ জানান। ওই সময় তিনি আর্থিক সহযোগিতাও করেন।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল জানায়, গত দুই দিন ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। বরং তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঝুঁকি রয়েছে। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা ও জনসংযোগ শাখা জানিয়েছে, ফরিদা পারভীনের চিকিৎসার জন্য গত ৯ জুলাই বিকেল ও ১০ জুলাই সকালে দুই দফা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।

চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবে তাঁর সুস্থতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

হাসপাতালটির একজন পরিচালক বলেন, ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে খুব ধীরে। আমরা আশাবাদী, তবে চিন্তাও রয়ে যাচ্ছে। তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থা যেকোনো সময় জটিল আকারে রূপ নিতে পারে। তাঁকে দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মন্তব্য

এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে তাপমাত্রা বেশি থাকার আভাস

খায়রুল কবির চৌধুরী
খায়রুল কবির চৌধুরী
শেয়ার
এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে তাপমাত্রা বেশি থাকার আভাস

চলতি বর্ষা মৌসুমে (জুন-সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাংলাদেশের কিছু এলাকায় বৃষ্টি স্বাভাবিক এবং কিছু এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। এ ছাড়া এবারের বর্ষা মৌসুমে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে সারা দেশেই।  

চলতি বছরের ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল ভারতের পুনেতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের ৩১তম অধিবেশনে বর্ষা মৌসুমের এই জলবায়ু পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়।

অন্যদিকে গত ২ জুলাই বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের বৈঠকেও বর্ষাকাল সম্পর্কে একই পর্যবেক্ষণ উঠে আসে। 

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু তথ্যের ভিত্তিতে ঐকমত্য প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে এবার বর্ষায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটিও বলেছে, এবার জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত বাংলা ঋতুচক্র অনুযায়ী, আষাঢ়-শ্রাবণ (মধ্য জুন থেকে মধ্য আগস্ট) এই দুই মাস বর্ষাকাল হলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই চার মাস বর্ষা মৌসুম। সে হিসাবেই আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়া ও জলবায়ুর পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে বছরে গড়ে ২৪২৭.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার এই চার মাসেই দেশে গড়ে ১৭২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

অর্থাৎ মোট বৃষ্টির প্রায় ৭১ শতাংশই হয় বর্ষাকালে। বছরের বাকি আট মাসে হয় ২৯ শতাংশ বৃষ্টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, এবার সিলেট ও রংপুরে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার বেশির ভাগ মডেলই উত্তরের সিলেট ও রংপুরে বৃষ্টি অনেকটাই কম দেখায়। এরই মধ্যে আমরা সিলেটে বৃষ্টি অনেকটা কম দেখেছি।

অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি স্বাভাবিক দেখাচ্ছে এবার। এ ছাড়া এবার বর্ষায় সারা দেশেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।

তবে এবার বর্ষার প্রথম মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। এ মাসে তিনটি লঘুচাপ হলেও তা অনেক বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়নি দেশে। চলতি মাসে এখনো বঙ্গোপসাগরে কোনো লঘুচাপ তৈরি হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে চার থেকে ছয়টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে এক থেকে তিনটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

এদিকে ৮ ও ৯ জুলাই ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পর গত ১০ জুলাই থেকে বৃষ্টি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার দেশে বৃষ্টি অনেকাংশেই কমে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই প্রবণতা থাকতে পারে অন্তত ১৫ জুলাই পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টি কমেছে অনেকটাই। আগামী অন্তত ১৫ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি কম থাকবে। তবে বর্ষাকাল হওয়ায় কোথাও না কোথাও বৃষ্টি থাকবেই। ১৬ জুলাই থেকে আবার বৃষ্টি বাড়তে পারে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ